ক্ষমতায় আসার পর থেকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অন্যতম। গত নয় বছরে দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও অমিত শাহ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মোকাবিলায় চেষ্টা চালিয়েছেন। ইসলামি সন্ত্রাস, উগ্র বামপন্থা (এলডব্লিউই) এবং উত্তর-পূর্বের বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা চেষ্টা করেছেন।
মাওবাদী, কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল
এই সমস্ত ক্ষেত্রে সরকার পুরোপুরি না-হলেও অনেকটাই সফল। গত এক দশকে দেশে বাম উগ্রপন্থা উল্লেখযোগ্য কমেছে। তবুও ছত্তিশগড় আজও কিন্তু মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই রয়ে গেছে। সেখানে মাওবাদীদের হাতে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের হত্যার ঘটনা ঘটছে। জম্মু ও কাশ্মীরেই যেমন সরকার জঙ্গিদমনে অনেকটাই সফল। কিন্তু, তারপরও বিদেশি জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত আছে। সেখানে অসামরিক ব্যক্তিদের বেছে নিশানা করা হচ্ছে। কাশ্মীরে উগ্রপন্থা কমলেও জম্মুতে সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান ঘটেছে। মোদী সরকারের অধীনে উত্তর-পূর্বে দীর্ঘ সময় শান্তিতে কেটেছে। বিদ্রোহী জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে একাধিক যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু সরকার নাগা শান্তি চুক্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। মণিপুরে আবার জাতিগত সংঘর্ষ মারাত্মক আকার নিয়েছে।
ইউপিএ জমানার তুলনায়
২০০৬ সালের এপ্রিলে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং নকশালবাদকে ভারতের 'এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ' বলে দাবি করেছিলেন। মোদী সরকার ভারতের উগ্র বামপন্থী প্রভাবিত অঞ্চলে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা পেয়েছে। যা ইতিমধ্যেই নকশালপন্থীদের শক্ত ঘাঁটিতেই মাওবাদীদেরকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তাদের ক্রমাগত মূল এলাকায় ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে বড় বিষয় হল, ২০১৪ সালের মধ্যে মাওবাদ হয় কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল। অথবা পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার মতো রাজ্যগুলোয় শেষ পর্যায়ে ছিল। অন্ধ্রে মাওবাদ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন- থামিয়ে দিয়েছিলেন আডবানির রথ, লালুর জন্মদিনে জানুন সেদিনের অসাধ্যসাধনের ইতিহাস
বাম উগ্রপন্থার কফিনে পেরেক
এনডিএ সরকার মাওবাদীদেরকে 'চূড়ান্ত ধাক্কা' দিয়েছে। এটি শুধুমাত্র ছত্তিশগড়ের বস্তার, মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলির মতো মূল মাওবাদী অঞ্চলে গোয়েন্দা-ভিত্তিক অভিযানই চালায়নি। রাষ্ট্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে জঙ্গলের গভীরে রক্ষীদের জন্য শিবিরও স্থাপনেরও ব্যবস্থা করেছে। রাস্তা নির্মাণ, মোবাইল ফোনের টাওয়ার স্থাপন এবং রাজ্য পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে এবং মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার মত কাজগুলোও করেছে। সঙ্গে, সমস্ত রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রেখে, প্রয়োজনে তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে।