A new campus rises at an ancient site: প্রাচীন বৌদ্ধ মঠের ধ্বংসাবশেষ থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে রাজগীরে ৪৫৫ একর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। জায়গাটি বিহারের রাজধানী পাটনা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বুধবার নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিহাস প্রসিদ্ধ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতে বিরাট সুনাম ছিল। সেই শিক্ষাকেন্দ্র সাম্প্রদায়িক আক্রমণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মধ্যযুগের শুরুতেই। সেখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা।
কালামের প্রস্তাব
সেই নালন্দার স্মৃতিকে মাথায় রেখেই নতুন করে তৈরি হয়েছে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। নির্মিত হয়েছে এর ভবন। এর আগে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন এপিজে আবদুল কালামই ২০০৬ সালে নালন্দাকে আনুষ্ঠানিকভাবে 'পুনরুজ্জীবিত' করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিহার বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, '(নালন্দার) অতীত গৌরব পুনরুদ্ধার করার জন্য… বোধগয়ার নালন্দায় একটি ইন্দো-এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ লার্নিং প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচিত এশিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব রেখে এই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে।'
সাহায্য ১৭টি দেশের
২০০৭ সালে, ফিলিপাইনসের মান্দাউয়ে পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। থাইল্যান্ডের হুয়া হিনে ২০০৯ সালের পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে এই অনুমোদনের সিদ্ধান্ত পুনরায় গৃহীত হয়। ওই সম্মেলনে ভারত ছাড়া মোট ১৭টি দেশ- অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভুটান, ব্রুনাই দারুসসালাম, কম্বোডিয়া, চিন, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মরিশাস, মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, পর্তুগাল, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা ছিলেন। ওই সব দেশগুলো এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সাহায্য করেছে। বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওই সব দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
বিহার বিধানসভায় সিদ্ধান্ত
এরপরই বিহার বিধানসভা, ২০০৭ সালে, রাজগীরের প্রাচীন শিক্ষা কেন্দ্রের কাছে একটি নতুন, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস করে। ২০১০ সালে, সংসদ এই বিষয়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বিল আনে। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়টিকে 'জাতীয় গুরুত্বের' অংশ বলে ঘোষণা করা হয়। কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে, সে সম্পর্কে নিয়ম নির্ধারণ কর হয়। ২০১৩ সালে, প্রখ্যাত স্থপতি বিভি দোশির বাস্তু শিল্প কনসালট্যান্টস দ্বারা প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসের জন্য মাস্টারপ্ল্যানটি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার (গ্লোবাল টেন্ডার) পরে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন- মোদীর সরকার বদলে দিয়েছে সংসদের নিরাপত্তা! রক্ষীদের হাতে অপমানিত এমপি, ক্ষুব্ধ বিরোধী সাংসদরা
শুরু হয় পথচলা
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৪ সালে স্কুল অফ হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড স্কুল অফ ইকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজে শিক্ষাদান শুরু করে। ১৫ জন ছাত্র প্রথম ব্যাচে ভর্তি হয়েছিলেন। রাজগীর কনভেনশন সেন্টারে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। বিহার সরকার পরিচালিত হোটেলকে ছাত্রদের জন্য অস্থায়ী হোস্টেল প্রাঙ্গণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নিযুক্ত ছিলেন ছয় জন শিক্ষক।