গত ৮ জানুয়ারি, ২০১৪, মহাকাশ থেকে একটি আগুনের গোলা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে জ্বলে ওঠে এবং পাপুয়া নিউ গিনির উত্তর-পূর্ব উপকূলে মানুস দ্বীপের উত্তরে সমুদ্রে আছড়ে পড়ে। এটির অবস্থান, বেগ এবং উজ্জ্বলতা মার্কিন সরকারের যন্ত্রপাতি দ্বারা রেকর্ড করা হয়েছে। আর, একই ধরনের ঘটনার মত এর তথ্যাদিও সরকারের তথ্যভাণ্ডারে চুপচাপ সরিয়ে রাখা হয়েছিল।
এই তথ্যটি পাঁচ বছর ধরে পড়েই ছিল। এরপর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী আভি লোয়েব এবং ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্র আমির সিরাজ এটি নিয়ে উঠেপড়ে না-লাগা পর্যন্ত কোনও বিতর্ক ছিল না। এর গতি এবং দিকনির্দেশের ওপর ভিত্তি করে, সিরাজ এই আগুনের বলটিকে মহাশূন্যে বহু দূর থেকে এসেছে বলেই দাবি করেছেন।
গত মাসে, লোয়েব পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্রতল থেকে ফায়ারবলের টুকরো পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি অভিযানের নেতৃত্ব দেন। গত ২১শে জুন তিনি দাবি করেন, তিনি এবং তাঁর সহকর্মী গবেষকরা বাইরের জগতের জীবনের প্রমাণ হয়তো বা খুঁজে পাওয়ার পথে এগিয়েছেন। লোয়েব জানিয়েছেন, বৈজ্ঞানিক চলচ্চিত্রগুলোয় দেখা কোনও জৈবিক প্রাণী নয়। এটি সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহ একটি প্রযুক্তিগত গ্যাজেট।
যদিও অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী লোয়েবের এই বক্তব্যকে মানতে নারাজ। তাঁর মনে করছেন, এলিয়েন নিয়ে অতীতেও অনেকবার অনেক কিছু বলা হয়েছে। লোয়েব নতুন কিছু বলছেন না। এলিয়েন নিয়ে অতীতে যা বলা হয়েছে, তার সর্বশেষ বক্তব্য রেখেছেন মাত্র। বিজ্ঞানীদের ধারণা, লোয়েব খুব তাড়াতাড়ি এসব নিয়ে বলে বসেছেন। শুধু তাই নয় বহির্জাগতিক জীবনের অনুসন্ধান সম্পর্কে টাইমস স্কোয়ারে একটি প্রচারমূলক ভিডিও এনিয়ে চালানো হয়েছে। যাতে বিজ্ঞান আসলে কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণায় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা।
আরও পড়ুন- ফের সাফল্য! দেখে নিন, চন্দ্রযান-৩ কোথায় পৌঁছল
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্পদার্থবিদ স্টিভ ডেশ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'মানুষ আভি লোয়েবের দাবিগুলো শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এটি ভাল বিজ্ঞানকেও দূষিত করেছে। এই হাস্যকর এবং চাঞ্চল্যকর দাবি আমরা যে ভাল বিজ্ঞানের চর্চা করি, তা সঙ্গে মিশে ঘরের সমস্ত অক্সিজেন যেন শুষে নিচ্ছে।'