Advertisment

Explained: মহুয়ার ঠিক আগেই বহিষ্কৃত, আমেরিকার স্যান্তোসের সঙ্গে মৈত্রের মিল অবাক করছে সকলকে!

মহুয়াকে ৮ ডিসেম্বর, তার সাত দিন আগে বহিষ্কার করা হয়েছে স্যান্তোসকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
George Santos, Mahua Moitra, expulsion

জর্জ স্যান্তোস ও মহুয়া মৈত্র। (এপি/পিটিআই)

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে ৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 'ক্যাশ-ফর-কোয়েরি' মামলায় সংসদের এথিক্স (নীতি) কমিটির রিপোর্টের সুপারিশে বহিষ্কার করা হয়েছে তৃণমূলের এই নেত্রীকে। এর সপ্তাহখানেক আগেই, ১ ডিসেম্বর, রিপাবলিক পার্টির জর্জ স্যান্তোসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা, কংগ্রেস বহিষ্কার করেছে। সেটাও একাধিক অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কংগ্রেসের নীতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে। সংসদের অন্য সদস্যদের দ্বারা জনপ্রতিনিধিকে বহিষ্কার অত্যন্ত বিরল এবং গুরুতর পদক্ষেপ। বিশ্বের প্রাচীনতম (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এবং বৃহত্তম (ভারত) গণতন্ত্রে কাছাকাছি সময়ে দুটি বহিষ্কারের মিল এখানেই। শুধু তাই নয়, বহিষ্কৃত দুই নেতার মিল হল, তাঁরা দু'জনেই অর্থজগৎ থেকেই রাজনীতিতে এসেছিলেন

Advertisment

জর্জ স্যান্তোস
জর্জ স্যান্তোস (৩৫) নিউইয়র্কে একটি ছোট ট্রাম্প-পন্থী গ্রুপের নেতা হিসেবে ২০১৯ সালে রাজনীতির জগতে প্রবেশ করেন। এর আগে তিনি আর্থিক খাতে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন। তিনি ডেভোল্ডার অর্গানাইজেশন নামে একটি কোম্পানি শুরু করেছিলেন। যাকে তিনি, 'পুঁজি পরামর্শদাতা' সংস্থা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ২০২০ সালে কংগ্রেসে প্রবেশের ব্যর্থ চেষ্টার পর, স্যান্তোস ২০২২ সালে নিউইয়র্কের ৩য় কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত হন। তার অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক কর্মজীবনে, স্যান্তোস তাঁর ট্রাম্পপন্থী ঝোঁক এবং বিভিন্ন বিষয়ে অতি রক্ষণশীল অবস্থানের জন্য (যদিও তিনি নিজেকে প্রকাশ্যে সমকামী বলে পরিচয় দিতেন। আর, ধারাবাহিক উসকানিমূলক বক্তব্য পেশ করতেন) পরিচিত ছিলেন।

মহুয়া মৈত্র
মহুয়া মৈত্র (৪৯) নিউ ইয়র্ক সিটি এবং লন্ডনে জেপি মরগ্যান চেজে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে সফল কর্মজীবনের পর ২০০৯ সালে ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০১০ সালে টিএমসিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি বেশ কিছুদিন কংগ্রেস পার্টিতে ছিলেন। ২০১৯ সালে কৃষ্ণনগর থেকে প্রথম মেয়াদে সাংসদ হওয়ার আগে মহুয়া মৈত্র ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নির্বাচিত হন। সংসদে তিনি বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্টবাদী এবং সরব ছিলেন। কার্যকালে লাগাতার নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে সমালোচনা করে গিয়েছেন।

স্যান্তোসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
২০২২ সালের নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধি সভায় নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গেই স্যান্তোসের চিত্তাকর্ষক জীবনবৃত্তান্তে জালিয়াতি ধরা পড়ে। জানা যায়, তিনি তাঁর ইহুদি ঐতিহ্য থেকে শুরু করে সিটি গ্রুপ এবং গোল্ডম্যানে কাজ করার দাবি পর্যন্ত, প্রায় সবকিছুই মিথ্যা বলেছেন। কিন্তু, সেটা ছিল হিমশৈলের চূড়া মাত্র। তাঁর আরও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ক্রমশ প্রকাশ্যে আসে। স্যান্তোস নানা জালিয়াতি থেকে শুরু করে মার্কিন কংগ্রেসে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া পর্যন্ত ২৩টি অপরাধমূলক অভিযোগের মুখোমুখি হন। ইউএস হাউস এথিক্স কমিটি ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম ফেডারেল অভিযোগ দায়ের করার পরে স্যান্তোসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।

আরও পড়ুন- কেরলের হাদিয়া মামলা! কেন মামলার তদন্তভার নিয়েছে এনআইএ?

মৈত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগটি চলতি অক্টোবরে উঠেছিল। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে, সংসদে অভিযোগ করেন যে তিনি (মহুয়া) ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির থেকে নগদ এবং উপহারের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেছিলেন। যার পিছনে ছিল শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থের সংঘাত। উল্লেখ্য, আদানি ও তার কথিত দুর্নীতি আর শাসক দলের সঙ্গে আদানির ঘনিষ্ঠতার তীব্র সমালোচনা করেছেন মহুয়া মৈত্র। হিরানন্দানি পরে, একটি হলফনামায় বলেছেন যে মহুয়া তাঁকে তাঁর লোকসভা লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন। যাতে তিনি সরাসরি সংসদে, 'প্রশ্ন তুলতে পারেন সেই জন্য'। যার জেরে দুবের 'ক্যাশ-ফর-কোয়েরি' অভিযোগ, লোকসভার নীতি কমিটি গ্রহণ করেছিল।

tmc bjp USA Mahua Moitra Loksabha
Advertisment