কথায় আছে, 'ম্যান বাই নেচার ইস আ পলিটিকাল অ্যানিমেল'। রাজনীতিতে নবাগত হয়েও একুশের নির্বাচনের আগে বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেডে তিনিই হলেন 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ'। ২৮ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডে নজর কেড়েছেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। বাম-কংগ্রেস সমর্থকদের ভিড়কেও হার মানিয়েছে আব্বাসের সদ্য নির্মিত হল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের কর্মীরা।
আব্বাসের এই দল গঠন, জোট করা কোনটিকেই ভালভাবে নেয়নি তৃণমূল। প্রতি পদক্ষেপেই আক্রমণ শানিয়েছে মমতা শিবির। যদিও বিজেপির অন্দরে কিন্তু খুশির হাওয়া। বাংলার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের বিপক্ষে কেউ উঠে এসেছে সেখানে খুশির প্লাবনের রাজনীতির অঙ্ক সকলেই বোঝে।
প্রশ্ন উঠতে পারে আব্বাসের বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে। সে হিসেবও খুব দুরূহ নয়। তৃণমূলের মুসলিম তোষণ ও বিজেপির হিন্দুত্ববাদ নিয়ে যা মুখ খোলার তা এই দুই দলের তরফেই করা হয়েছে। তৃণমূলের ভোটের নেপথ্যে মুসলিম তোষণনীতি রয়েছে এ অভিযোগ লোকসভা নির্বাচন থেকেই করে আসছে গেরুয়া শিবির। এখন আব্বাস সিদ্দিকি যদি সেই ভোটের মেরুকরণে বিপরীত হাওয়া তোলেন তবে ভোট ভাগাভাগিতে যে তৃণমূলের 'কিছু কম পড়বে' সেই আশাতেই ছক কষে নিয়েছেন পদ্ম নেতারা, ওয়াকিবহাল মহলের মত এমনটাই।
আরও পড়ুন, নির্বাচনে ‘অন্য কৌশল’ তৃণমূলের, বদলে গেল রণনীতি?
অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেসের 'টিকে থাকার' লড়াই এই একুশের নির্বাচন। বিগত নির্বাচনগুলিতে বাংলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এই দুই শিবির। আব্বাস সেই শিবিরের নয়া অক্সিজেন। অন্তত ব্রিগেডের চিত্র এমনটাই বলছে। যদিও এর আগে বামেরা জানায় যে তারা তাকে সাম্প্রদায়িক শক্তি বলে মনে করেন না। তবে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, বর্ধমান এবং বীরভূমের মতো দক্ষিণবঙ্গ জেলার কয়েকটি অংশে যথেষ্ট জনপ্রিয়তার সঙ্গে বিরাজ করছেন 'ভাইজান' সিদ্দিকি।
তবে কি সেই কারণেই শাসক শিবিরের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি? মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে 'বিশ্বাসঘাতকতা' করেছেন এমনটাও জানান হয়েছে। বিজেপির অন্দরে অবশ্য বিষয়টি 'শত্রুর শত্রু, আমার মিত্র'। মোদী-শাহ শিবিরের আশা যে সিদ্দিকী কেবল তৃণমূল থেকে মুসলিম ভোটারদের কিছুটা কেড়ে নেবে না, বরং ভোট ভাগাভাগিতে লাভের গুড় খাবে তাঁরাই। ২০১১ সালের জনসংখ্যার হিসেব বলছে বাংলায় ২৭ শতাংশ মুসলিম রয়েছে। এখন সেই সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর হিসেবে '৩০ শতাংশ'। তবে কি এই তিরিশেই একুশ মাতের হিসেব দেখছে পদ্ম?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন