Advertisment

Explained: ধারাভিতে বস্তি উচ্ছেদ! হাতছাড়া নিলাম কোন পথে মোদী-ঘনিষ্ঠ আদানির দখলে?

বহুদিন থেকেই ধারাভির বিশাল জমি দখলের চেষ্টায় ছিল বিভিন্ন সংস্থা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Dharavi

মুম্বইয়ের ধারাভি পুনর্বিকাশ প্রকল্পের নিলাম জিতে নিল আদানি শিল্পগোষ্ঠী। এই প্রকল্পে মুম্বইয়ের বিশাল ধারাভি বস্তির উন্নয়ন ঘটানো হবে। ধারাভি পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান নির্বাহী আধিকারিক SVR শ্রীনিবাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'আদানি গ্রুপ এই প্রকল্পের জন্য ৫,০৬৯ কোটি টাকার দর হেঁকেছে। শুধুমাত্র আদানি আর ডিএলএফই চূড়ান্ত নিলামের যোগ্যতা অর্জন করেছিল। তৃতীয় অংশগ্রহণকারী নমন গ্রুপ আর পারেনি।' ২০১৯-এর জানুয়ারিতে ধারাভির এই নিলামেই হেরে গিয়েছিল আদানিরা। প্রায় দুই দশক ধরে আটকে আছে ধারাভি পুনর্নির্মাণ প্রকল্প। বিশ্বের বৃহত্তম বস্তিগুলোর মধ্যে ধারাভি অন্যতম। রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর কাছে ধারাভির বিরাট জমি কার্যত সোনার মত। এই উন্নয়ন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ এবং পুনর্বাসনের জটিলতা ছিল একটা বড় বাধা। সেই বাধা কাটাতে পুনরায় উন্নয়নে জন্য অগ্রিম অর্থ দেওয়া হবে বস্তিবাসীদের।

Advertisment

ধারাভি পুনরায় উন্নয়ন প্রকল্প

ধারাভি হল দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়িক জেলা, বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে। দেশের প্রধান বাণিজ্যিক অফিসগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই এই জেলায়। এই বস্তি ২.৮ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত। এখানে বস্তিবাসীদের অনেকে চামড়া এবং মৃৎশিল্পের কাজের সঙ্গেও যুক্ত। এই সব কাজের মাধ্যমে একলক্ষেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান হয়। মহারাষ্ট্র সরকার এই অঞ্চলকে উন্নত শহুরে পরিকাঠামোর মত করে গড়ে তুলতে চায়। সেখানে বস্তিবাসী এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান-সহ ৬৮ হাজার মানুষের পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাসিন্দাদের বিনামূল্যে ৩০০-বর্গফুট বাড়ি দেওয়া হবে। এই জন্য ধারাভির বাসিন্দাদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। তাঁদের দেখাতে হবে যে এই বস্তিতে ২,০০০ সালের ১ জানুয়ারির আগে তাঁদের ঝুপড়ি ছিল। আর, যাঁরা ২,০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই বস্তিতে থেকেছেন, তাঁরাও এই প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পাবেন।

আরও পড়ুন- কাতারে শোরগোল! শেষ পর্যন্ত কত শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন? হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন আধিকারিক

কবে এই প্রকল্পের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল?

১৯৯৯ সালে বিজেপি-সেনা সরকার প্রথম ধারাভি পুনর্নির্মাণের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। তারপরে, ২০০৩-০৪ সালে মহারাষ্ট্র সরকার ধারাভিকে একটি পরিকল্পিত জনপদ হিসেবে পুনরায় বিকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য একটি পরিকল্পনাও অনুমোদিত হয়। বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য জমি বিক্রি করে উন্নয়ন ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই উন্নয়নের জন্য ডেভেলপার নিয়োগ, ধারাভিকে একটি অনুন্নত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা, এর উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। ২০১১ সালে সরকার সমস্ত দরপত্র বাতিল করে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে। ২০১৮ সালে বিজেপি-সেনা সরকার ধারাভির উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে। পরে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়।

হেরে যায় আদানিরা

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দুবাইয়ের পরিকাঠামো সংস্থা সেকলিংক টেকনোলজিস কর্পোরেশন ধারাভির পুনরায় উন্নয়নের নিলাম জিতে নেয়। হেরে যায় আদানিরা। কিন্তু, রেলের জমি পুনর্নির্মাণ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের জেরে দরপত্রটি আর সেকলিংককে দেওয়া হয়নি। এরমধ্যেই ২০২০ সালে মহারাষ্ট্র সরকার পরিবর্তিত হয়। সেই বছরের অক্টোবরে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র বিকাশ আঘাড়ি সরকার টেন্ডার বাতিল করে। সঙ্গে জানায়, শীঘ্রই নতুন দরপত্র দেওয়া হবে। উদ্ধবের সরকার অভিযোগ করেছিল যে টেন্ডার বাতিল করার অন্যতম কারণ হল প্রকল্পের জন্য অত্যাবশ্যক রেলের জমি হস্তান্তরে কেন্দ্রের বিলম্ব। একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার সাথে সরকার আবার পরিবর্তন হয়। এই সময়ে কেন্দ্র থেকে জমি হস্তান্তরের সমস্যাটি সমাধান করা হয়েছে। আবার নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল।

Read full story in English

Adani Eknath Shinde Dharavi
Advertisment