Agnipath scheme and the opposition to it: অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিরাট আপত্তি বিরোধীদের। এই প্রকল্প চালু হওয়ার সময় থেকেই বিরোধীরা তীব্র আপত্তি জানিয়ে চলেছে। গত ১০ বছরে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালিয়েছে। তাই সরকারের অভ্যন্তরে অগ্নিপথ নিয়ে তেমন আপত্তি ওঠেনি। কিন্তু, এবার বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কেন্দ্রে এনডিএর সরকার। ফলে, ইতিমধ্যেই অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে তীব্র আপত্তি উঠেছে। এই সরকারের অন্যতম শরিক জেডিইউ। কেন্দ্রে সরকার গড়তে জেডিইউয়ের সমর্থন বিজেপির অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই নীতীশ কুমারের জেডিইউ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে অগ্নিপথ প্রকল্প পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছে।
প্রকল্পের বিরোধিতা
২০২২ সালের জুনে অগ্নিপথ প্রকল্পটি ঘোষিত হয়। তারপর থেকেই প্রকল্পটি রাজনৈতিক দল এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রবীণদের বিরোধিতার মুখে পড়েছে। পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং রাজস্থানের মত রাজ্যগুলোয় অগ্নিপথ নিয়ে গোড়া থেকেই তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। কারণ, মূলত এই সব রাজ্য থেকেই ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে জওয়ানদের নিয়োগ করা হয়। লোকসভা নির্বাচনে এই সব রাজ্যগুলোয় বিজেপির পারফরম্যান্সই বলে দিচ্ছে, ওই সব রাজ্যগুলোয় অগ্নিপথ প্রকল্পের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এই কথা মাথায় রেখে, নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টিও বিতর্কিত অগ্নিপথ প্রকল্পের পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। যা কার্যত, প্রকল্প প্রত্যাহারেরই আবেদন।
অগ্নিপথ প্রকল্প
অগ্নিপথের লক্ষ্য ছিল চার বছরের জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার পদমর্যাদার নীচের কর্মীদের- অর্থাৎ সৈনিক, বিমানবাহিনীর জওয়ান এবং নাবিক, যাঁরা কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার নয়- তাঁদের নিয়োগ করা। এই মেয়াদের শেষে, এই নিযুক্তদের মধ্যে ২৫%-কে প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে একটি স্থায়ী কমিশনে (আরও ১৫ বছরের জন্য) নিয়োগ করা। প্রথমে জানানো হয়েছিল, অনূর্ধ্ব ২১ রা এই চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন। পরে আন্দোলনের পর সংশোধন করে জানানো হয়, ১৭ থেকে ২৩ বছরের মধ্যের বয়সিরা এই চাকরিতে আবেদনের যোগ্য। এই প্রকল্প মেডিকেল শাখার প্রযুক্তিগত ক্যাডার বাদে সমস্ত নাবিক, বিমানকর্মী এবং সৈন্য নিয়োগের ক্ষেত্রকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। পাশাপাশি, আইএএফ এবং নৌবাহিনীতে মহিলাদের নিয়োগের দরজাও খুলেছে।
আরও পড়ুন- ক্যাবিনেট কমিটির বিরাট দায়িত্ব! রীতিমতো বাছাই করে দফতর বণ্টনে জোর মোদীর
২০২২-এ ঘোষিত হয়েছিল
কোভিড-১৯ অতিমারিজনিত কারণে সামরিক নিয়োগ দুই বছরের জন্য স্থগিত হওয়ার পরে ২০২২ সালের জুনে অগ্নিবীর প্রকল্পটি ঘোষণা করা হয়েছিল। অগ্নিবীররা প্রতিমাসে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা বেসিক বেতন পান। পাশাপাশি, ভাতা-সহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধাও পান। তাঁদের মাসিক বেতনের ৩০% সেবা নিধি তহবিলে জমা পড়ে। পরিষেবা শেষে, অগ্নিবীররা এই তহবিল থেকে প্রায় ১১.৭১ লক্ষ টাকা (সুদ-সহ) পান। যা, আয়কর থেকে মুক্ত। যদি একজন অগ্নিবীর কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান, তবে তাঁদের পরিবার ১ কোটি টাকা-সহ সেই মাসের সম্পূর্ণ বেতন পায়। অগ্নিবীর কর্মরত অবস্থায় অক্ষমতার শিকার হলে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন। তবে, শুধুমাত্র ২৫% অগ্নিবীর, যাঁরা চার বছর পরে বাহিনীতে স্থায়ী কমিশনে নিযুক্ত হন, কেবলমাত্র তাঁরাই পেনশনের সুবিধা পান।