Advertisment

Explained: বিশ্বজুড়ে বাড়ছে খাদ্য সংকট, একইসঙ্গে ভারতীয় কৃষির গুরুত্বও, কী করলে বাড়বে ফসল?

নরম্যান বোরলাগ, হেনরি বিচেল, গুরদেব সিং খুশ এবং অন্যান্য কৃষি বিজ্ঞানীরা জেনেটিক্স বীজ এবং উদ্ভিদ প্রজননে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Workers transplanting paddy crop seedlings at a farm in the outskirts of Ahmedabad.

আহমেদাবাদের উপকণ্ঠে একটি জমিতে ধানের চারা রোপণ করছেন শ্রমিকরা। (নির্মল হরিন্দ্রনের এক্সপ্রেস ছবি)

সবুজ বিপ্লবের আগে
কৃষিক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদরা চারটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। তা হল- জমি, জল, শ্রম এবং বিদ্যুৎ। এগুলোকে বলা হয়, 'উৎপাদনের কারণ'। ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকরাও এই বিষয়গুলোর ওপরই জোর দেন। কতটা পরিমাণে এই চারটি বিষয় ব্যবহৃত হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে ফসলের পরিমাণ। সবুজ বিপ্লবের আগে ভারতের কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন প্রাথমিকভাবে চাষের জন্য উপলব্ধ জমির পরিমাণ এবং গুণমানের ওপর নির্ভরশীল ছিল। রমেশ চাঁদ এবং জসপাল সিং-এর নীতি আয়োগ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ১৯৫০-৫১ থেকে ১৯৬১-৬২ সাল পর্যন্ত বছরে কৃষিজমি গড়ে ২.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পিছনে কারণ ছিল, লাঙলের আওতায় আনা জমির সম্প্রসারণ। এই সময়ের মধ্যে দেশের নিট কৃষিজমি ১১৮.৭৫ লক্ষ হেক্টর থেকে বেড়ে ১৩৫.৪০ লক্ষ হেক্টর (এলএইচ) হয়েছে।

Advertisment

জমির ওপর ফসল নির্ভরশীল
কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতি জমির গুণমান, জমির উর্বরতা এবং জলের প্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করে। ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং পূর্ব উপকূলের কাবেরী, কৃষ্ণা, গোদাবরী এবং মহানদী ব-দ্বীপের পলিমাটি সবচেয়ে উর্বর। তারপরে দাক্ষিণাত্য, মালওয়া এবং সৌরাষ্ট্র মালভূমির কালো তুলা মাটি। এগুলো লাল, বাদামি, ল্যাটেরাইট, পাহাড়ি এবং মরুভূমির মাটির চেয়ে একরপ্রতি অনেক বেশি ফসল দেয়। অবশ্যই সেটা উর্বরতা অনুযায়ী। জলের প্রাপ্যতা বৃষ্টিপাত, নদী, হ্রদ, ট্যাংক এবং পুকুর থেকে সেচের ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। প্রাচীন সভ্যতাগুলো বেশিরভাগই নদী উপত্যকায় গড়ে উঠেছিল। যা বুঝিয়ে দিয়েছিল, নদী উপত্যকাই কৃষিক্ষেত্রে প্রাণ টিকিয়ে রাখতে পারে।

Table.
কৃষিতে বার্ষিক বৃদ্ধির হার।

কৃষিতে শ্রম ও বিদ্যুতের ভূমিকা
জমির মতই শ্রম এবং বিদ্যুতের ওপরও কৃষিক্ষেত্র নির্ভরশীল। ঐতিহ্যগত কৃষি ব্যবস্থায় ভালো জমি ছাড়াও কৃষকের সংখ্যা এবং বলদের ওপরই ফসল উৎপাদন নির্ভর করত। যত বেশি জমিতে চাষ করা হত, তত বেশি ফসল উৎপাদিত হত। ট্রাক্টর, থ্রেসার, হারভেস্টার মেশিন এবং বৈদ্যুতিক/ডিজেল ইঞ্জিনচালিত টিউবওয়েল আসার আগে, খামারে বিদ্যুতের অভাব পূরণ করত বলদ। ভারতীয় কৃষিক্ষেত্রে বলদই ক্ষেতে লাঙল টানা, তুষ থেকে শস্য আলাদা করার জন্য শস্য মাড়ান, সেচের জন্য কূপ থেকে জল তোলার জন্য ব্যবহৃত পারস্য চাকাকে চালানোর কাজে ব্যবহৃত হত।

আরও পড়ুন- টানেল দুর্ঘটনায় ব্যবহৃত কী এই অগার মেশিন, কেন বারবার বাঁধা, পরবর্তী পদক্ষেপই বা কী ? 

প্রযুক্তির ব্যবহার
কৃষিতে প্রযুক্তির বিরাট ভূমিকা। উন্নত প্রযুক্তির যান্ত্রিক শক্তি ছাড়া বর্তমান কৃষি ব্যবস্থাকে কল্পনাই করা যায় না। এই প্রযুক্তি শস্যের জিন, ফসলের পুষ্টি, ফসলের সুরক্ষা এবং কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে। নরম্যান বোরলাগ, হেনরি বিচেল, গুরদেব সিং খুশ এবং অন্যান্য কৃষি বিজ্ঞানীরা জেনেটিক্স বীজ এবং উদ্ভিদ প্রজননে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছেন। তাঁরা প্রজনন করিয়ে উচ্চ ফলনশীল ধান এবং গমের জন্ম দিয়েছেন। যার জেরে সবুজ বিপ্লব হয়েছে। এর আগে ফসল হত সরু, লম্বা। তা সার বা জল প্রয়োগে খুব একটা সাড়া দিত না। উলটে ফসলগুলো বেঁকে যেত। অথবা, সমতল হয়ে মাটিতে পড়ে যেত। বর্তমান আধা-বামন ফসলগুলো সোজা থাকে। তবে, একটু বেঁটে হয়। কিন্তু, এই সব ফসল হেলে পড়ে না। পাশাপাশি, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হয়।

India agriculture Farmer
Advertisment