অজিত পাওয়ার হলেন শরদ পাওয়ারের দাদা অনন্তরাও পাওয়ারের ছেলে। অজিতের রাজনৈতিক কেরিয়ার তাঁর কাকার মতই, উত্থান মহারাষ্ট্রের সমবায় ক্ষেত্র থেকে। অজিত পাওয়ার শরদ পাওয়ারের সঙ্গে রয়েছেন সেই ১৯৯১-৯২ সাল থেকে। শরদ পাওয়ারের এনসিপি গঠনের সময় থেকে একটা জল্পনা শিরি। সে জল্পনার বিষয়বস্তু হল শরদ পাওয়ারের পর কে!
অজিত পাওয়ার ধরেই নিয়েছিলেন তিনিই শরদ পাওয়ারের উত্তরসূরী। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় শরদকন্যা সুপ্রিয়া সুলে যখন সে আঙিনায় প্রবেশ করলেন, তখন তাঁর মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছিলেন অজিত। দুই তুতো ভাইবোনই তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতার কথা স্বীকার করতে চাননি। তবে পাওয়ার পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম রোহিত পাওয়ার যখন মঞ্চে প্রবেশ করলেন, তখন অজিত পাওয়ার ধাক্কা খেযেছিলেন। শরদ পাওয়ারের নাতি রোহিত এনসিপি কর্মকর্তাদের মধ্যে গুরুত্ব অর্জন করতে শুরু করেছেন। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত অজিত পাওয়ারকে নার্ভাস করে দিয়েছিল।
পদত্যাগের কৌশল নেওয়া অজিত পাওয়ারের কাছে নতুন নয়। তিনি জলসম্পদ দফতেরর মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে সেচ প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে, এ অভিযোগ ওঠার পর ২০১২ সালে অজিত পাওয়ার তাঁর সমস্ত মন্ত্রিপদ ছেড়ে দেন এবং উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকেও পদত্যাগ করেন। তিনি পদত্যাগ করবার পর এনসিপির অন্য মন্ত্রীরাও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন বলে ভয় দেখানোয় সমস্যায় পড়ে চৌহান সরকার। তখন প্রবীণ শরদ পাওয়ার মাঠে নেমে সরকার রক্ষা করেন।
শোনা যায় ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে শরদ পাওয়ারের না দাঁড়ানোর পিছনে মাভাল কেন্দ্র থেকে নিজের ছেলে পার্থকে দাঁড় করানোর ব্যাপারে অজিতের জেদ। এনসিপির সমস্ত কর্মসূচিতে গেরুয়া পতাকা টাঙানোর ব্যাপারে ভাইপোর উপর শরদ পাওয়ার ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলেও শোনা যায়।
সেপ্টেম্বর মাসে অজিত পাওয়ার বারামতীর বিধায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তাঁর দাবি ছিল, মহারাষ্ট্র স্টেট কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের অর্থ নয়ছয়ের ব্যাপারে কাকা শরদ পাওয়ারের নাম ওঠায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। এর পর তিনি বারামতী বিধানসভা থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন।
দলীয় লাইনের বিরুদ্ধে এই প্রথম নন অজিত পাওয়ার
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২: অজিত পাওয়ার তখন ছিলেন পৃথ্বীরাজ চৌহান সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়ে একাই শাসককে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। চৌহান সরকারের সমস্যা বাঁচাতে আসরে নামতে হয় শরদ পাওয়ারকে।
এপ্রিল ২০১৩: জনগণ মূত্রত্যাগ করে বাঁধ ভরাবে কিনা এ প্রশ্ন তুলে ব্যাপক বিতর্কে জড়ান। যতদিনে নিজের মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন ততদিনে ২০১৪ সালের ভোটের জন্য এ ইস্যু নিয়ে বিজেপি যা ফায়দা তোলার তুলে নিয়েছিল।
২০০৪: এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রিত্বের বিষয়টি মেনে নিয়েছেন সে সময়ে প্রকাশ্যে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি।