The death of Alexei Navalny: রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে নানা মামলায় ফাঁদে ফেলে জেল খাটানোর অভিযোগ বিশ্বে নতুন নয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন অভিযোগ হামেশাই ওঠে। শুধু তাই নয়, জেলের মধ্যে বন্দি প্রতিপক্ষকে হত্যা করানোর অভিযোগও প্রায় প্রতিদিনই বিশ্বের নানা জায়গা থেকে ওঠে।
যদিও বহু সময়ই অভিযোগ উঠেছে, সেই সব মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই দেখানো হয়েছে বেশিরভাগ সময়। অন্তত, সরকারি খাতায় এবং কলমে। এবার সেই মৃতদের তালিকায় নতুন সংযোজন হলেন বছর ৪৭-এর আলেক্সি নাভালনি। দুর্নীতি বিরোধী আপসহীন এই যোদ্ধা বন্দি ছিলেন 'পোলার উলফ' কারাগারে। যা, দুনিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগারগুলোর অন্যতম।
পেশায় তিনি ছিলেন এক আইনজীবী। ২০০০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন যোদ্ধা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। নাভালনি বিশ্বাস করতেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনব্যবস্থায় ওপরে যা বলা হয়, ভিতরে তা মানা হয় না। এই শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপেই দুর্নীতির ওপর নির্ভরশীল। আর, তারই পরিণতিতে চেষ্টা চরিত্রের মাশুল হিসেবে নাভালনিকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাশিয়ার কুখ্যাত 'পোলার উলফ' কারাগারে।
২০১১-১২ সালে, পুতিন-বিরোধী বিক্ষোভের অগ্রভাগে ছিলেন নাভালনি। প্রথম গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে থাকতেন। তাঁর মুক্তির পরও তিনি পুতিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন। ২০১৩ সালে মস্কোর মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে, কোনও মিডিয়া কভারেজ ছাড়াই ক্ষমতাসীন পুতিন-মিত্র সের্গেই সোবিয়ানিনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পেয়েছিলেন ২৭ শতাংশের বেশি ভোট। কিন্তু, পরবর্তীতে তাকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
তা সত্ত্বেও নাভালনি আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার থেকে প্রশংসা পেয়েছেন। রাশিয়ার মানুষ তাঁকে দেশের জাতীয় চেতনায় স্থান দিয়েছে। ২০১৩ সালে নাভালনি নিজের ইউটিউব চ্যানেল চালু করেন। সেখানে তিনি পুতিনের সমালোচনা করেন। রাশিয়ার অভিজাতদের অশালীন জীবনধারাকে উন্মোচিত করে চটকদার ভিডিও তৈরি করেন। তাঁর এই চ্যানেলটির ৬.২ মিলিয়নেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। নাভালনি ২০২১ সালে গ্রেফতারের পরেও ক্রেমলিন-বিরোধী অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান প্রকাশিত করা অব্যাহত রাখেন। পালটা ক্রেমলিনও নাভালনিকে একজন 'উগ্রপন্থী' এবং 'সিআইএর পুতুল' বলে দাগিয়ে দেওয়ার বহু চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন- বাড়তে পারে সবজির দাম? ঠিক কী সুপারিশ করেছে স্বামীনাথন কমিশন
এমনকী ২০২০ সালের আগস্টে, নাভালনি সাইবেরিয়া থেকে মস্কো যাওয়ার একটি ফ্লাইটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বেঁচে যান। কিন্তু তাঁকে বার্লিনে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়েছিল। বার্লিনে তাঁকে সোভিয়েত ইউনিয়নে তৈরি একটি নিউরোটক্সিন এবং রাশিয়ান গোয়েন্দাদের পছন্দের রাসায়নিক অস্ত্র নোভিচকের প্রভাব রোখার চিকিত্সা নিতে হয়েছিল।