Advertisment

Gyanvapi case: 'ব্যাসজি কা তেহখানা'য় পুজোর অনুমতি এলাহাবাদ হাইকোর্টের, কেন টিকল না মসজিদ কমিটির যুক্তি?

Mulayam Singh Yadav: ১৯৯৩ সালে, মুলায়ম সিং যাদবের নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকার মৌখিকভাবে ব্যাস পরিবারকে জ্ঞানবাপী মসজিদের দক্ষিণ দিকে পুজো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Gyanvapi, Varanasi District Court

Gyanvapi-Varanasi District Court: একই রায় দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। (ফাইল ছবি)

Allahabad HC: এলাহাবাদ হাইকোর্ট সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) হিন্দুদের জ্ঞানবাপী মসজিদের দক্ষিণ দিকে উপাসনা অব্যাহত রাখার অনুমতি দিয়েছে। এর আগে একই নির্দেশ দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালতও। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি একটি আবেদন করেছিল। যা খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ব্যাস পরিবার ওই সম্পত্তির মালিকানার দাবিদার। ব্যাসের নামানুসারে ঘরটিকে, ‘ব্যাসজি কা তেহখানা’ বলা হয়। ১৯৯৩ সালে, মুলায়ম সিং যাদবের নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকার মৌখিকভাবে ব্যাস পরিবারকে জ্ঞানবাপী মসজিদের দক্ষিণ দিকে পুজো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, যাদব সরকারের 'ভক্তদের এবং ব্যাস পরিবারকে ধর্মীয় উপাসনা ও আচার-অনুষ্ঠান পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়াটা ভুল হয়েছিল।'

Advertisment

এলাহাবাদ হাইকোর্টে শেষ পর্যন্ত কী হল?
জ্ঞানবাপী মসজিদের ধর্মীয় চরিত্র নিয়ে বর্তমান বিরোধের কারণে, ব্যাস পরিবার ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটি মামলা দায়ের করেছিল। ব্যাস পরিবারের দাবি, ব্যাসজি কা তেহখানা (মসজিদের কক্ষ) ১৫৫১ সাল থেকে তাঁদের পরিবারের দখলে ছিল। ১৯৯৩ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকার এক নির্দেশে তা বন্ধ করে দেয়। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি, বারাণসী জেলা আদালত সেখানে ফের পূজা করার অনুমতি দিয়েছে।

মসজিদ কমিটির যুক্তি কী?
মসজিদের ব্যবস্থাপনা কমিটি এলাহাবাদ হাইকোর্টে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানায়। মসজিদ কমিটির যুক্তি ছিল, দীন মহম্মদ বনাম ভারতের সেক্রেটারি অফ স্টেট (১৯৩৭)-এর মামলায় দেওয়ানি আদালত ঘোষণা করেছে যে মসজিদটি হানাফি মুসলিম সম্প্রদায়ের ওয়াকফ সম্পত্তি আর মুসলমানরা ওই জমির অধিকারী। তারা দাবি করেছে, এতে মসজিদের নীচের জমি-সহ যাবতীয় মসজিদেরই অংশ। মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটি, উপাসনার স্থান (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ (পাওয়ার অফ ওয়ারশিপ আইন)-এর ধারা ৪-এর উল্লেখ করেছিল। এই ধারায় বলা হয়েছে, একটি উপাসনালয়ের ধর্মীয় চরিত্র ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের সময় যা ছিল, তাই থাকবে। মসজিদ কমিটি যুক্তি দিয়েছিল, এর অর্থ হল দীন মহম্মদ আদালতের নির্দেশ নিয়েছিলেন। আর, সেই কারণে মসজিদের ধর্মীয় চরিত্র পরিবর্তন করা যাবে না। তাই ব্যাস পরিবারকে মসজিদে পুজো বা প্রার্থনা করতে দেওয়া উচিত নয়।

ব্যাস পরিবারের যুক্তি
ব্যাস পরিবারের যুক্তি ছিল, দীন মহম্মদকে দেওয়া নির্দেশ, বাস্তবে তাদের পক্ষেই ছিল। ব্যাস পরিবার ভারতের সেক্রেটারি অফ স্টেটের জমা দেওয়া একটি মানচিত্র আদালতে পেশ করেছে। ব্যাস পরিবার বলেছে, এই মানচিত্রে ব্যাসজি কা তেহখানাকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেহেতু এই মানচিত্রের চিহ্নিত করা অংশটি বিবাদের উত্স ছিল না, তাই ব্যাস পরিবারকে কখনও দীন মহম্মদ মামলায় পক্ষ করা হয়নি। আর, সেই কারণেই মসজিদের ওই অংশটি ব্যাস পরিবারের 'অধিকারে'ই রয়ে গেছে।, ব্যাস পরিবার আরও দাবি করেছিল যে 'ব্যাসজি কা তেহখানা'র ওপর মসজিদের দখলই ছিল না। তাই মুলায়ম সিং যাদবের সরকারও লিখিতভাবে ব্যাস পরিবারকে সেখানে প্রার্থনা পরিচালনা থেকে বিরত করতে পারেনি। বাধ্য হয়ে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, সরকার যেহুতু মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে, তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে সেখানে উপাসনা বন্ধ করেছিলেন। এমনটাই দাবি ব্যাস পরিবারের। তাঁদের বক্তব্য, পাওয়ার অফ ওয়ারশিপ (পিওডব্লিউ) আইনের ওপর খবরদারি করে সরকার ওই নির্দেশ দেওয়ায় তেহখানার ধর্মীয় চরিত্র পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেখানে নিয়মিতভাবে পুজো করা হত। সেখানে তারপর নমাজ পাঠ শুরু হয়।

আদেশের প্রভাব
এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণের ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, '১৯৩৭ সালে ব্যাস পরিবারের মালিকানাধীন ব্যাস তেহখানার অস্তিত্ব ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বাদীর দাবি করা অবিচ্ছিন্ন দখলের প্রাথমিক প্রমাণ। প্রাথমিক দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৯৩ সাল থেকে রাজ্য সরকার ব্যাস পরিবারকে ধর্মীয় উপাসনা এবং আচার-অনুষ্ঠান পালন থেকে বিরত রাখে। যাতে ভক্তদের ওপর ক্রমাগত অন্যায় হয়েছে।' ৩১ জানুয়ারি, বারাণসী জেলা আদালত তেহখানায় উপাসনার অনুমতি দেওয়ার পরে, জ্ঞানবাপী বিবাদের প্রধান আবেদনকারী রাখি সিং ধর্মীয় চরিত্র নির্ধারণের জন্য জ্ঞানবাপীর সমস্ত অবশিষ্ট কক্ষে আরও এএসআই সমীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের সোমবারের নির্দেশ, কার্যত সেই আবেদনের পথকেই পরিষ্কার করল।

yogi adityanath High Court Uttarpradesh gyanvapi mosque
Advertisment