বিজেপি নেতা রজনীশ সিংয়ের দায়ের করা একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আবেদনে, 'তাজমহলের আসল ইতিহাস' খুঁজে বের করার জন্য একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন ওই বিজেপি নেতা। সঙ্গে তাজমহলের ভিতরে থাকা ২০টিরও বেশি বন্ধ 'ঘর' খোলার অনুরোধ করেছিলেন তিনি। ওই বিজেপি নেতার দাবি, ওই সব বন্ধ ঘরে হিন্দু দেবতাদের মূর্তি রয়েছে। এর একদিন আগে, রাজসমন্দের বিজেপি সাংসদ এবং জয়পুরের প্রাক্তন রাজপরিবারের সদস্য দিয়া কুমারী দাবি করেছিলেন যে তাজমহল যে জমিতে, তা আসলে তাঁর পূর্বপুরুষদের। এই সংক্রান্ত কোনও নথি আদালত চাইলে তিনি জমা দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন দিয়া কুমারী।
এসব কিন্তু নতুন নয়। বছরের পর বছর ধরে, বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা ইতিহাসকে না-মেনে দাবি করে গিয়েছেন যে তাজমহল আসলে এক হিন্দু মন্দির। এই মন্দির শাহজাহানের রাজত্বের অনেক আগে নির্মিত হয়েছিল। ২০১৭ সালে বিজেপির তত্কালীন রাজ্যসভার সাংসদ বিনয় কাটিয়ার দাবি করেছিলেন যে তাজমহল আসলে ' তেজো মহালয়া' নামে একটি শিব মন্দির ছিল। যা আসলে একজন হিন্দু শাসক নাকি তৈরি করেছিলেন। ' তেজো মহালয়া'র দাবিটি প্রথমে ১৯৮৯ সালে তাঁর বইয়ে পিএন ওক নামে এক ইতিহাসবিদ করেছিলেন। তিনি নিজের ধারণা প্রতিষ্ঠার জন্য বহু যুক্তি দিয়েছিলেন। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছিলেন। যাকে আসলে মৌচাকে ঢিল মারার সমতুল্য বলেই মনে করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন- ২০ লক্ষে প্যান-আধার বাধ্যতামূলক, এই নয়া নিয়ম কেন?
তাজমহল বিশ্বের বিস্ময়কর স্থানগুলোর অন্যতম তাজমহল। ইউনেস্কোর তালিকায় বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান। বিশ্বের কাছে ভারতের প্রতীক। বিশ্বের অন্যতম স্মৃতিস্তম্ভ। মোগল সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশে ১৬৩২ থেকে ১৬৪৮ সালের মধ্যে তাজমহল নির্মিত হয়। তাজ ইন্দো-ইসলামিক এবং তিমুরিদ স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যের প্রতীক। হুমায়ুনের সমাধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পুরনো স্মৃতিস্তম্ভ, যা মোগল যুগে তৈরি হয়েছে, তাজমহল তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। এর বিশাল সাদা মার্বেলের সমাধিটি একটি বাগানে অবস্থিত। যা একটি বৃহত্তর কমপ্লেক্সের অংশ। এর দেওয়াল ৩০৫ মিটার বাই ৫৪৯ মিটারের পরিমাপ করা জ্যামিতিক সিরিজ বরাবর নির্মিত। ১৬৫৩ সালে একটি মসজিদ, একটি অতিথিশালা, প্রধান প্রবেশদ্বার এবং বাইরের উঠোনের মতো কাঠামো নির্মাণের পর গোটা তাজমহলের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল।
Read full story in English