দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্র 'দ্য কোরিয়া টাইমস' একটি খবর প্রকাশ করেছে। তাতে রীতিমতো শঙ্কিত বিশ্ববাসী। সেই খবর অনুযায়ী, এক ব্যক্তির মস্তিষ্ককে খেয়ে নিয়েছে এককোষী প্রাণী অ্যামিবা। ওই সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার সোমবার নেগেলেরিয়া ফাওলেরি বা 'মস্তিষ্ক খাওয়া অ্যামিবা' সংক্রমণের কথা জানিয়েছে।
কী সমস্যা ছিল?
বছর ৫০-এর এক কোরীয় নাগরিক সম্প্রতি থাইল্যান্ড থেকে ফিরেছিলেন। তাঁর বিরল এবং মারাত্মক সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যায়। আর, সেই লক্ষণ দেখা দেওয়ার ১০ দিন বাদে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি (কেডিসিএ) খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে যে লোকটি ১০ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরেছেন। তার আগে চার মাস তিনি থাইল্যান্ডে ছিলেন। দেশে ফেরার একদিন পরে, তাঁর মাথাব্যথা, বমি, শরীররা শক্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনা শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত কী হল?
তার পরই ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাখা হয় আইসিইউয়ে। কিন্তু, কোনও চিকিৎসাতেই কাজ দেয়নি। অবশেষে লোকটি ২১ ডিসেম্বর মারা গিয়েছেন। কোরিয়ার চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি করেননি। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য নানা পরীক্ষা করেছেন। আর, তাতেই ধরা পড়েছে যে মস্তিষ্ককে খেয়ে ফেলা অ্যামিবা বা নেগেলেরিয়া ফাউলেরি থেকে তৈরি সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির।
নেগেলেরিয়া ফাউলেরি কী?
মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুযায়ী, নেগেলেরিয়া হল একটি অ্যামিবা। একটি এককোষী জীব। আর এর একটি মাত্র প্রজাতি, যার নাম নেগেলেরিয়া ফাওলেরি, মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। এটি প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৬৫ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। সাধারণত উষ্ণ মিঠে জলের দেশে এই অ্যামিবা পাওয়া যায়। উষ্ণ প্রস্রবণ, নদী এবং হ্রদে তা থাকে। যা শরীরে জলের সঙ্গেই প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন- বায়ুদূষণ বাড়াচ্ছে ক্যানসারের ঝুঁকি, কী খাবেন আর কী-ই বা খাবেন না, জানুন পুষ্টিবিদদের থেকে
এটি কীভাবে মানুষকে সংক্রমিত করে?
এই অ্যামিবা নাক দিয়ে মানুষের শরীরে ঢুকে যায়। তারপর মাথায় চলে যায়। এটি সাধারণত ঘটতে পারে যখন কেউ সাঁতার কাটতে যায়, বা ডুব দিয়ে স্নান করে। অথবা কেউ যদি কোনও মিঠে জলে মাথা ডুবিয়ে দেয়, তখন ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে, দেখা গেছে যে লোকেরা দূষিত জল দিয়ে নাকের ছিদ্র পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। সেই সময়ও সংক্রমণ ঘটে। বিজ্ঞানীরা জলীয় বাষ্প বা এরোসল ফোঁটার মাধ্যমে নেগেলেরিয়া ফাউলেরি ছড়ানোর কোনও প্রমাণ খুঁজে পাননি। একবার নেগেলেরিয়া ফাউলেরি মস্তিষ্কে চলে গেলে, এটি মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ধ্বংস করে। আর, প্রাইমারি অ্যামেবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস (পিএএম) নামে পরিচিত একটি ভয়ংকর সংক্রমণ ঘটায়।
Read full story in English