চিনে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধির রিপোর্ট এবং ভারতে তার বাড়তি প্রভাবের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগের কারণে গত সপ্তাহে দেশে টিকাগ্রহণের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে চলতি মাসের বেশিরভাগ সময় দৈনিক টিকাকরণের গড় ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার ডোজ। সেখানে শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) এবং শনিবার গড়ে লক্ষাধিক টিকাকরণ হয়েছে। তার মধ্যে আবার ২৫ ডিসেম্বর ছিল বড়দিন। দেশবাসী উৎসবে মজে। তার মধ্যেই গোটা দেশে ৩০ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন। যা গত নয়টি রবিবারের মধ্যে সর্বোচ্চ। অথচ, এর আগের পাঁচ সপ্তাহের রবিবারের টিকাকরণের কথা যদি ধরা হয়, গড় টিকাকরণের সংখ্যাটা ছিল ১০ হাজারেরও নীচে।
সংক্রমণের শেষ তরঙ্গ প্রায় নয় মাস আগে শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশে টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গিয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে যে ১২ বছরের বেশিবয়সি জনসংখ্যার ৯২ শতাংশের বেশি ইতিমধ্যে করোনার দুটি ডোজ পেয়েছে। আর, জনসংখ্যার একটা ছোট অংশ একটা ডোজ পেয়েছে। তবে, বুস্টার ডোজের সংখ্যা এখনও বেশ কম। দেশের জনসংখ্যার ২২ শতাংশেরও কম এখনও পর্যন্ত বুস্টার বা সতর্কতামূলক ডোজ পেয়েছে। এত কম বুস্টার ডোজ নেওয়ার কারণ, করোনার প্রাদুর্ভাব মধ্যে বেশ কমে গিয়েছিল। তাই ৬০ ঊর্ধ্ব প্রবীণদের মধ্যে বুস্টার ডোজ নিয়ে উৎসাহ দেখা গেলেও অল্পবয়সিদের মধ্যে তা আর দেখা যায়নি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছিল। প্রথমে প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে এই ডোজ দেওয়া চালু হয়। আগস্টের মাঝামাঝি পেরোতে না-পেরোতেই দেখা যায় যে ৫০ ঊর্ধ্ব প্রবীণদের ৫০ শতাংশেরও বেশি বুস্টার ডোজ নিয়ে নিয়েছেন। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৮ লক্ষ ভ্যাকসিন ডোজ দেওয়া হয়েছে। হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সংখ্যাটা নেমে আসে দৈনিক ৬.৫ লক্ষেরও কমে।
আরও পড়ুন- ভারতের অন্যতম বিখ্যাত শিল্পপতি ভিডিওকন চেয়ারম্যান ভেনুগোপাল ধুত কেন জেলে গেলেন?
তবে চিন থেকে আসা করোনার রিপোর্টে মানুষ এত ভয় পেয়েছে যে শীঘ্রই সংখ্যাটা দ্রুতহারে বদলে যেতে পারে। প্রতিবেদনগুলি অন্তত স্বল্প মেয়াদে এই প্রবণতাকে পরিবর্তন করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। তবে যদি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভারতে এর বাড়তি প্রভাবের সম্ভাবনা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত না-পাওয়া যায়, তবে আবার ঝুপ করে কিন্তু, দেশের যুবশ্রেণির মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে যেতে পারে। আর, এখানেই ভয় বিশেষজ্ঞদের। কারণ, তাঁরা মনে করেন যে প্রাকৃতিক সংক্রমণ বা ভ্যাকসিনের মাধ্যমে অর্জিত অনাক্রম্যতা স্থায়ী নয়। আর, তাই বুস্টার ডোজ নেওয়া প্রয়োজন। যাঁরা তা নেননি, টিকা নেওয়ার ৯ মাস পর থেকেই তাঁদের করোনা প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল হতে শুরু করেছে।
Read full stroy in English