পোড়-খাওয়া রুশ কূটনীতিক এবং এক শীর্ষ আধিকারিক আনাতোলি চুবায় রুশ প্রেসিডেন্টের মুখে চুনকালি মাখালেন। না, আক্ষরিক ভাবে নয়, চুবায় রাশিয়ার হেভিওয়েট সরকারি পদ ছেড়ে, দেশটিও ছেড়েছেন। কোনও দিন ফিরে আসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আপাতত। ইউক্রেনে রাশিয়ার ঢুকে পড়ার এই এক মাসের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় 'পদস্খলন' পুতিন-ভূমে।
ক্রেমলিনও চুবায়ের পদত্যাগের খবরে সিলমোহর দিয়েছে বলে রয়টার্সের খবর। আর ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ৬৬ বছরের এই ঘাগু ব্যক্তিটি তার সহকর্মী এবং বন্ধুদের একটি চিঠিতে তাঁর পদত্যাগের খবর জানিয়েছেন। এই খবর সামনে আসার পর, বেশ ঢেউ উঠেছে আন্তর্জাতিক ক্ষমতার অলিন্দে। পুতিন-বিরোধী বিশ্ব একটা বড় অস্ত্রও পেয়ে গিয়েছে এর ফলে।
অ্যানাতোলি চুবায়ের গোটা পরিচয়টা কী?
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে পুতিনের বিশেষ দূত এই অ্যানাতোলি চুবায়। ২০২০ সালে তাঁকে এই পদে বসিয়েছিলেন পুতিন। তিনি এ পথে বেশ সফলও বলা হয়ে থাকে। আগে রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত টেকনোলজি সংস্থা রুসানোর শীর্ষে ছিলেন। যে পদে তিনি ২০০৮ পর্যন্ত কাজ করেছেন। না, এইটুকু পরিচয় তাঁর সম্পর্কে কিছুই নয়। এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র জানানো হল। এবার, একটু গভীরে গেলে দেখা যাবে, রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং রুশ কমিউনিস্ট পার্টির এক সময়ের সর্বময় কর্তা মিখাইল গর্ভাচেভের সংশোধনবাদী এবং ঐতিহাসিক পদক্ষেপের পিছনে এই ব্যক্তিটিরই নাকি মুখ্য ভূমিকা ছিল।
আরও পড়ুন Explained: রাশিয়াকে দাদা মেনে নিতে হবে, না হলে যুদ্ধের শেষ হবে না, কী বলছে তত্ত্ব
সোভিয়েত জমানা থেকে বেরিয়ে আসার দিনগুলিতে বদলের কারিগরি যে কতিপয় ব্যক্তির মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তার মধ্যে ইনি ছিলেন বড়। আরেক জনের নাম করতে হচ্ছে-- ইয়েগোর গেদার, গেদার অবশ্য ছিলেন অর্থনীতিবিদ। বলতে হবে যে, যখনই আর্থিক ব্যাপারে কোনও বড় পদক্ষেপের কথা ভাবা হয়েছে রাশিয়ায়, শাসক-সমগ্র ডাক পাঠিয়েছেন চুবায়ের কাছে। তা ছাড়া তিনি অঙ্গুলিমেয় কয়েক জনের মধ্যে একজন যাঁর সঙ্গে পশ্চিমেরও অনেকের সম্পর্ক ভাল।
আরও পড়ুন Explained: শব্দের চেয়েও বেশি গতিতে ‘হামলা’ রাশিয়ার, কী ভাবে জানেন?
ফেসবুক পোস্টে, গত সপ্তাহে, গেদারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চুবায় বলেন, তিনি ইউক্রেনের অবস্থা সম্পর্কে অখুশি।… এও বলেছেন, পুতিন-জমানার পরিচিত সমালোচক ছিলেন গেদার।
আর কোনও আধিকারিক পদত্যাগ করেছেন?
হ্যাঁ, তেমন একজন আছেন। তিনি আর্কাদি ভোরকোভিচ। তিনি রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দমিত্রি মেদভেদেভের সিনিয়র অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন। ইদানিং পুতিন সরকারের স্কোলকোভো ফাউন্ডেশনের শীর্ষ পদে ছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে স্বর বুলন্দ করেছেন, এবং ওই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।