Advertisment

Explained: Ram Lalla for Ayodhya: অযোধ্যার রামমন্দিরের রাম লালার মূর্তির কারিগর, চেনেন অরুণ যোগীরাজকে?

Sculptor Arun Yogiraj: অরুণ যোগীরাজের তৈরি মূর্তিটি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিতরে স্থাপন করা হবে বলে দাবি করেছেন কয়েকজন বিজেপি নেতা। মূর্তিটি দেখতে পাঁচ বছর বয়সি শিশুর মত। যার উচ্চতা ৫১ ইঞ্চি (৪.২৫ ফুট)। চার মাস ধরে তৈরি হয়েছে মূর্তি। ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন শিল্পী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Arun Yogiraj

অরুণ যোগীরাজ ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাস্কর্যটি তুলে দিচ্ছেন। (ছবি/ফেসবুক/নরেন্দ্রমোদী)

আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন (Ram temple inauguration)। তার আগে, ১ জানুয়ারি থেকেই কর্ণাটকের বিজেপি নেতারা অরুণ যোগীরাজকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। যে তিন জন ভাস্কর রামলালার (শৈশবের ভগবান রাম) মূর্তি তৈরি করেছেন তাদের একজন অরুণ যোগীরাজ (Sculptor Arun Yogiraj)। যদিও শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট এখনও ঘোষণা করেনি যে তিনটি মূর্তির মধ্যে কোনটি গর্ভগৃহে স্থাপন করা হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা এবং কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী-সহ বিজেপির অনেক নেতা দাবি করেছেন যোগীরাজের কাজই বেছে নেওয়া হয়েছে। মাইসুরুর বাসিন্দা যোগীরাজ বিখ্যাত ভাস্কর পরিবারের সদস্য। তাঁর দাবি, তাঁর পরিবার ২৫০ বছর ধরে বা গত পাঁচ প্রজন্ম ধরে ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ করে আসছে।

Advertisment

অরুণ যোগীরাজ কে?

৩৮ বছর বয়সি যোগীরাজকে দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত ভাস্করদের অন্যতম বলে মনে করা হয়। তিনি এমবিএ পাশ। অল্প সময়ের জন্য চাকরিও করেছিলেন। তারপর পারিবারিক পেশায় ফিরে আসেন। তাঁর ভাষায়, 'আমি ১১ বছর বয়স থেকে বাবার সঙ্গে মূর্তি বানাই। কয়েক মাস অন্য জায়গায় কাজ করার পর বুঝতে পেরেছিলাম যে ভাস্কর্যই আমার প্যাশন। ২০০৮-এ বাড়ি ফিরে আসি। বাবাও আমার সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কিন্তু, চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় মা খুশি হননি। শেষে ২০১৪-য় আমি দক্ষিণ ভারতের তরুণ প্রতিভা পুরস্কার পেয়েছি।'

  • তাঁর পরিবার ২৫০ বছর ধরে বা গত পাঁচ প্রজন্ম ধরে ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ করে আসছে।
  • ঠাকুর্দা ছিলেন মহীশূর রাজাদের পরিপোষিত শিল্পী, ১১ মাসে রাজাদের জন্য ৬৪টি মূর্তি বানিয়েছিলেন।
  • দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি, কেদারনাথের শংকরাচার্যের মূর্তি এই এমবিএ পাস শিল্পীরই তৈরি।

পিতামহও ছিলেন নামী শিল্পী

তাঁর পিতামহ, বি বাসভন্ন শিল্পী, মহীশূরের রাজাদের ভাস্কর ছিলেন। মহীশূর রাজপ্রাসাদের রাজগুরু শিল্পী সিদ্ধান্তি সিদ্ধলিঙ্গ স্বামীর কাছে ভাস্কর্যের কাজ শিখেছেন। মাইসুরু প্রাসাদ চত্বরের গায়ত্রী মন্দিরে মাত্র ১১ মাসে ৬৪টি মূর্তি বানিয়ে দিয়েছিলেন বাসভন্ন। অরুণ যোগীরাজের কাছে আছে ১৫ জন কারিগরের একটি দল। সঙ্গে আছে কিছু ছাত্র। ভারত ছাড়াও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য জায়গা থেকেও ভাস্কর্য নির্মাণের অর্ডার পান। অনেক ছাত্রকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। তিনি মাইসুরুতে ব্রহ্মর্ষি কাশ্যপ শিল্পকলা শালা ট্রাস্ট চালান। সেখানে শিশুদের ক্লে মডেলিং এবং অন্যান্য শিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

যোগীরাজের বিখ্যাত কিছু কাজ

অরুণ যোগীরাজের কিছু বিখ্যাত কাজের মধ্যে আছে দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামী সুভাষ চন্দ্র বসুর ২৮ ফুট উঁচু কালো গ্রানাইট পাথরের ভাস্কর্য, উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে একটি ১২ ফুটের আদি শংকরাচার্যের মূর্তি, শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের ১০ ফুটের একশিলা সাদা মার্বেল পাথরের মূর্তি। এছাড়াও মাইসুরু-সহ ভারতজুড়ে বিভিন্ন মন্দিরে ভগবান পঞ্চমুখী গণপতি, ভগবান মহাবিষ্ণু, ভগবান বুদ্ধ, নন্দী, স্বামী শিববালা যোগী, স্বামী শিবকুমার এবং দেবী বনশংকরীর ভাস্কর্য তাঁরই তৈরি।

কীভাবে রাম লালার মূর্তি বানালেন?

যোগীরাজ বলেন, 'ট্রাস্ট তিন ভাস্করকে নির্দেশ দিয়েছিল এমন মূর্তি বানাতে, যা দেখতে হবে পাঁচ বছর বয়সি এবং দৈর্ঘ্য ৫১ ইঞ্চি (৪.২৫ ফুট)। আমাদের বিভিন্ন জায়গার পাথর দেওয়া হয়েছিল। যেমন নেপাল, উত্তর কন্নড় জেলার কারকালা, মাইসুরু জেলার এইচডি কোট এবং রাজস্থানের মাকরানা। আমি এইচডি কোট থেকে কৃষ্ণশিলা পাথর বেছে নিয়েছি। খনি ও ভূতত্ত্ব বিভাগের বিজ্ঞানীরাও ইনপুট দিয়েছেন। এই পাথরগুলোর মধ্যে কিছু পাথরে জল এবং দুধ ঢাললে ক্ষতি হয়। কিন্তু, ভক্তরা তো ঢালবেনই। তাই কৃষ্ণশিলা একটি অনন্য পাথর, যা কোনও তরলে প্রতিক্রিয়া করে না। কর্ণাটকে এই পাথরের চল হাজার বছরের পুরোনো।'

যোগীরাজের রামলালার রূপ অনুধাবনের চেষ্টা

শিল্পী জানিয়েছেন যে ভগবান কৃষ্ণের (বাল্যকালের) বিশেষ উল্লেখ থাকলেও, ভগবান রামের শৈশব সম্পর্কে তেমন বিশেষ কিছু জানা যায় না। তিনি বলেন, 'তাই আমি কিছু স্কুলে ঘুরেছি। মাইসুরুতে একটি শিশুদের অনুষ্ঠান (চিন্নারামেলা, রঙ্গায়নে একটি গ্রীষ্মকালীন শিবির) হয়েছিল। আমি সেখানে গিয়েছিলাম শিশুদের পর্যবেক্ষণ করতে। একটি পাঁচ বছর বয়সি শিশু আর একটি তিন বছর বা চার বছর বয়সি শিশুর মধ্যে কতটা তফাৎ, তা বুঝতে। আমি প্রায় ১,২০০ পাঁচ বছর বয়সি শিশুর ফোটো দেখেছি। প্রতিমায় শিশুর নিষ্পাপ ভাবের সঙ্গে দেবত্বও থাকতে হবে। মূর্তিটি কেমন হবে, বুঝতেই আমার দুই মাস লেগেছে।'

আরও পড়ুন- বিপাকে আদানি, কড়া সুপ্রিম কোর্ট, তিন মাসে সেবিকে তদন্ত শেষের নির্দেশ

তিনটি মূর্তিই বসবে মন্দিরে

শিল্পী বলেন, 'পরের চার মাসে আমি মূর্তিটি বানিয়েছি। যেহেতু বাড়ি থেকে দূরে অযোধ্যায় ছিলাম, আমি দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করতাম। তার পরে আবার পরের দিনের জন্য কিছু হোমওয়ার্ক করতাম।' অন্য দুই ভাস্কর যাঁরা রামলালার মূর্তি নির্মাণে জড়িত, তাঁরা হলেন- বেঙ্গালুরুর জিএল ভাট ও রাজস্থানের সত্যনারায়ণ পাণ্ডে। ট্রাস্ট এই তিনটি মূর্তির মধ্যে একটিকে গর্ভগৃহের ভিতরে স্থাপন করবে। অন্য দুটি স্থাপন করা হবে মন্দিরের প্রাঙ্গণে।

Ayodha Land Ayodhya Ayodhya Land Deal Ayodhya Verdict Ram Temple modi yogi adityanath Ayodhya Ram Temple
Advertisment