Arvind Kejriwal be booked for money laundering: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আদালতে জামিন চেয়েছিলেন। তার বিরোধিতা করতে গিয়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু শুক্রবার (২২ মার্চ) দিল্লি আদালতে বলেন, 'পূর্বনির্ধারিত অপরাধে অভিযুক্ত না হলেও কেউ পিএমএলএ-তে আসামি হতে পারে।' রাজু বোঝাতে চেয়েছিলেন, যদি কেজরিওয়ালকে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত না করা হয়, তাহলেও দিল্লি আবগারি নীতি মামলা থেকে প্রাপ্ত 'অপরাধের অর্থ' তছরুপের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা যেতেই পারে। এই পরিস্থিতিতে তহবিল তছরুপ একটি আলাদা অপরাধ কি না, বা এটি একটি বৃহত্তর অপরাধের অংশ কি না, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই বিতর্কের অংশ হিসেবেই প্রশ্ন উঠছে, তহবিল তছরুপ কি কোনও পূর্বনির্ধারিত অপরাধ? তহবিল তছরুপের জন্য একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি আলাদাভাবে মামলা করা যেতে পারে?
পিএমএলএ অপরাধ কী?
প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ) তহবিল তছরুপকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। এই আইন অনুযায়ী, 'যে কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অপরাধে প্ররোচিত করার চেষ্টা করলে বা জেনেশুনে অপরাধে সহায়তা করলে বা জেনেশুনে অপরাধের অর্থের সঙ্গে জড়িত থাকলে বা ওই অর্থসংক্রান্ত কোনও কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তিনি অর্থ পাচারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন।' এই আইনে 'অপরাধের থেকে প্রাপ্ত আয়' হল আইনগতভাবে হওয়া অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত অথবা অপরাধমূলক কার্যকলাপের ফলে কোনও ব্যক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রাপ্ত যে কোনও সম্পত্তি। পিএমএলএ আইনের আওতায় থাকা নির্ধারিত আইন অনুযায়ী এই সব অপরাধকে বলে প্রিডিকেট অপরাধ। কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রে যেসব ধারা প্রয়োগ হয়েছে, তাতে অর্থপাচারের অভিযোগে কেউ অভিযুক্ত হলে, তিনি নির্ধারিত অপরাধের আওতায় পড়বেন। এই ক্ষেত্রে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বিচার হবে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায়। তবে, আবগারি মামলার আসামি হিসেবে তাঁর নাম নেই।
এই ব্যাপারে আদালত কী বলছে?
এই ব্যাপারে গত ২০২২ সালের ২৭ জুলাই, বিজয় মদনলাল চৌধুরী ও ওরস বনাম ইউনিয়ন মামলার একটি রায়ে, সুপ্রিম কোর্ট পিএমএলএর মূল আইনগুলোকে বহাল রেখেছে। আদালত বলেছে, যদি পূর্বনির্ধারিত অপরাধে একজন অভিযুক্তকে খালাস করে দেওয়া হয়, পিএমএলএর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য তাঁর বিচার করা যাবে না। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে, যদি কোনও অভিযুক্তকে তফসিল বা পূর্বনির্ধারিত অপরাধে আসামি হিসেবে দেখানো না হয়? গত বছরের নভেম্বরে পাবনা ডিব্বুর বনাম এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছে।
আরও পড়ুন- শীর্ষ আদালতে কুপোকাত হাইকোর্টের রায়, জামিনের শর্ত মানতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট
পিএমএলএর অধীনে বিচার
বিচারপতি অভয় ওকা ও বিচারপতি পঙ্কজ মিথাল তাঁদের রায়ে বলেছেন, পিএমএলএ মামলার একজন অভিযুক্ত যিনি নির্ধারিত অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরে গোটা দৃশ্যে উঠে আসেন, যিনি অপরাধের অর্থ গোপন করা বা ব্যবহারে সহায়তা করেন, তাঁকে নির্ধারিত অপরাধে অভিযুক্ত হতে হবে না। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি যে অপরাধের অর্থ গোপন করেছেন বা দখল করে রেখেছেন, সেই অর্থ কেবলমাত্র নির্ধারিত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলেই যথেষ্ট। এই প্রসঙ্গে আদালত বলেছে, 'যতক্ষণ পর্যন্ত নির্ধারিত অপরাধের বিচার চলবে, ততক্ষণ এই জাতীয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পিএমএলএর অধীনে বিচার করা যেতে পারে। এই মামলায় কেজরিওয়াল তহবিল তছরুপ করেছিলেন কি না, তার বিচার হবে।