Advertisment

ASI Report: মন্দির ভেঙে তারই অংশ দিয়ে হয়েছে মসজিদ, রিপোর্টে আর কী জানাল এএসআই?

ASI Survey: রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিন্দু দেবদেবীর ভাস্কর্য এবং খোদাই করা স্থাপত্য, মসজিদের মাটির নীচে পাওয়া গেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
ASI, Gyanvapi, Mughal Emperor Aurangzeb

Aurangzeb: মসজিদটি ১৬৭৬ থেকে ১৬৭৭ সালের মধ্যে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকালে নির্মিত হয়েছিল।

আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) জ্ঞানবাপী মসজিদ কমপ্লেক্স পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে ওই স্থানে 'আগে একটি হিন্দু মন্দির ছিল।' গত মাসে সিল দিয়ে মুখবন্ধ খামে আইএসআই তাদের রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টের জেরক্স আদালত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ওই জমির বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলাকারী হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বারাণসী জেলা আদালত মসজিদটিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল এএসআইকে। জানতে চেয়েছিল, এই মসজিদ আদৌ কোনও, 'হিন্দু মন্দিরের কাঠামোর ওপর নির্মিত' কি না।

Advertisment
  • আদালত এএসআইকে রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছিল।
  • যাতে মন্দির ভাঙার বিষয়টি লুকোনো যায়, তার জন্য নষ্ট করা হয়েছে অনেকগুলো ভাস্কর্য।
  • ওটা যে আদতে মসজিদ নয়, তার নানা প্রমাণ আদালতে জমা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

১. প্রাক-বিদ্যমান কাঠামো সম্ভবত ১৭ শতকে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল
এএসআই তাদের রিপোর্টে একটি শিলালিপির কথা জানিয়েছে। যেখানে লেখা আছে, মসজিদটি ১৬৭৬ থেকে ১৬৭৭ সালের মধ্যে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকালে নির্মিত হয়েছিল। শিলালিপিতে আরও বলা আছে, মসজিদটি নির্মাণে আগের কাঠামোর শাহান (অঙ্গন) ব্যবহার করা হয়েছিল। এএসআইয়ের কাছে ওই শিলালিপির ছবি আছে। সেই শিলালিপি নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে বলেও রিপোর্টে জানিয়েছে এএসআই। ১৯৪৭ সালে 'মাসির-ই-আলমগিরি'র যে অনুবাদ স্যার যদুনাথ সরকার করেছিলেন, তা অনুসারে আওরঙ্গজেব, 'কাফেরদের স্কুল ও মন্দির ভেঙে ফেলার জন্য সমস্ত প্রদেশের গভর্নরদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।' ওই বইয়ের ৫৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, '১৬৬৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর, বাদশাহের নির্দেশে তাঁর লোকজন কাশীতে বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙে দেন।'

আরও পড়ুন- কানাডায় বিদেশি ছাত্রদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, কতটা প্রভাব পড়বে ভারতীয়দের ওপর?

২. দেবনাগরী, তেলেগু এবং কন্নড় লিপিতে দেবতাদের নাম সহ শিলালিপি পাওয়া গেছে
এএসআইয়ের সমীক্ষায়, মোট ৩৪টি শিলালিপি পাওয়া গেছে। এএসআইয়ের রিপোর্ট অনুসারে, 'এই সব আসলে হিন্দু মন্দিরের পাথরের শিলালিপি। যেগুলো মসজিদ তৈরির কাঠামো নির্মাণের সময় ফের ব্যবহার করা হয়েছে। আর, তার ফলেই দেবনাগরী, তেলেগু এবং কন্নড় অক্ষরে শিলালিপি পাওয়া গিয়েছে। কাঠামোয় আগের শিলালিপিগুলোর পুনরায় ব্যবহারই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে আগের কাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আর, তা নতুন কাঠামোয় ব্যবহার করা হয়েছে।' রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিলালিপিগুলোয় জনার্দন (বিষ্ণুর অন্য নাম), রুদ্র (শিবের অন্য নাম) এবং উমেশ্বরের মত দেবতার নাম পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'তিনটি শিলালিপিতে উল্লিখিত মহা-মুক্তিমণ্ডপ (যখন মুক্তি মানে স্বাধীনতা, মণ্ডপ মানে প্ল্যাটফর্ম) এর মত পদগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।'

আরও পড়ুন- কলকাতা থেকে কাবুল হয়ে বার্লিন, কতটা কষ্টকর পথে ভারত ছেড়েছিলেন সুভাষ বসু?

৩. মসজিদের সম্প্রসারণে ভেঙে ফেলা মন্দিরের অংশ পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছিল
এএসআই মসজিদের করিডোরের স্তম্ভ পরীক্ষা করেছে। সেই পরীক্ষায় শিলার মধ্যে পদ্ম এবং হিন্দু পৌরাণিক প্রাণীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। যা বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছে। তবে, সবটা বিকৃত করা সম্ভব হয়নি। যেগুলো করা সম্ভব হয়নি, সেগুলো রয়ে গিয়েছে। যেগুলো বিকৃত করা গিয়েছে, সেগুলো ফুলের নকশা এঁকে বিকৃত করার চেষ্টা ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যা দেখতে পাওয়া গিয়েছে মসজিদ কক্ষের উত্তর এবং দক্ষিণ দেওয়ালে। এমনটাই বলা হয়েছে রিপোর্টে।

আরও পড়ুন- অপারেশন ‘সর্বশক্তি’ শুরু ভারতীয় সেনার, ‘সর্পবিনাশ’-এর আধুনিক রূপ, ভয়ংকর কিছু ঘটতে চলেছে?

৪. মন্দিরের কাঠামোর মূল কক্ষ এবং প্রধান প্রবেশদ্বার বর্তমান মসজিদের অংশ
এএসআইয়ের রিপোর্ট অনুসারে, মন্দিরের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমে একটি বড় কেন্দ্রীয় কক্ষ এবং কমপক্ষে একটি কক্ষ ছিল। মন্দিরের সেই প্রধান কক্ষটিই বর্তমানে মসজিদের কেন্দ্রীয় কক্ষ। তার দেওয়াল পুরু এবং মজবুত। পশ্চিম দিক থেকে মন্দিরের প্রধান কক্ষে প্রবেশের দ্বারে একটি পাথরের গাঁথনি তোলা হয়েছে। এমনটাই জানানো হয়েছে রিপোর্টে। সেই প্রবেশদ্বারে মন্দিরের মত পশু-পাখি খোদাই করা আছে। এই বড় প্রবেশদ্বারের আগে একটি ছোট প্রবেশপথ ছিল। যে প্রবেশপথের খোদাই করা চিত্রটি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু, পুরোটা পারা যায়নি। তার একটি অংশ আজও দেখা যায়। এই প্রবেশদ্বার আটকাতে ইট, পাথর ব্যবহার হয়েছে বলেই জানিয়েছে এএসআইয়ের বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন- ভারতরত্ন হচ্ছেন কর্পুরী ঠাকুর, কেন জননায়কের রাজনীতি এবং নীতিগুলো আজও জনপ্রিয়?

৫. ভাস্কর্য থেকে বোঝা যায় যে সেখানে একটি বড় হিন্দু মন্দির ছিল
রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিন্দু দেবদেবীর ভাস্কর্য এবং খোদাই করা স্থাপত্য, মসজিদের মাটির নীচে পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মন্দিরের স্তম্ভই মসজিদের নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই স্তম্ভের মধ্যে ঘণ্টা দিয়ে সজ্জিত একটি স্তম্ভ পাওয়া গিয়েছে। যার চার দিকে প্রদীপ রাখার ব্যবস্থা চোখে পড়েছে। সেখানে একটি শিলালিপিও পাওয়া গিয়েছে। যা হিন্দু মন্দিরের সাক্ষ্য দেয়।

আরও পড়ুন- ইতিহাসই প্রমাণ, আওরঙ্গজেব এই মন্দির ভেঙেছিলেন, সামনে এল বিরাট সত্য!

Hindu mosque Muslim Temple
Advertisment