Advertisment

ফের বিজেপি-অগপ জোট, এবার কী?

এ জোটের ফলে আসামে বিজেপি র শক্তি মজবুত হবে। রাজ্যে কংগ্রেস বিরোধী ভোট ভাগ হতে দিল না তারা। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Agp-bjp alliance explained

নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ক্ষুব্ধ অগপ সমর্থকদের বিক্ষোভ (ফাইল)

দু মাস কাটতে না কাটতেই বিজেপির কাছে ফিরে এসেছে অসম গণ পরিষদ। মঙ্গলবার তারা নির্বাচনপূর্ব বোঝাপড়ার কথা সম্পন্ন করে ফেলেছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে মতবিরোধের জেরে তারা আসামে বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে দিয়েছিল।

Advertisment

বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব টুইটারে লিখেছেন, আলোচনার পর স্থির হয়েছে আসন্ন লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে পরাজিত করতে আসামে বিজেপি ও এজিপি একযোগে কাজ করবে। বিজেপির হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এব এজিপির অতুল বরা ও কেশব মহান্তর উপস্থিতিতে গুয়াহাটিতে এ বিষয়ক ঘোষণা করা হয়েছে। জোটের তৃতীয় শক্তি হবে বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট।

আসাম সরকারের এক প্রবীণ মন্ত্রী শর্মাও এ ব্যাপারে টুইট করেছেন।

অগপ-র সঙ্গে বিজেপি জোটের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে সমস্যার শুরু তাদের জোট ভাঙার ঘোষণার অনেক আগে থেকে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অগপ-র তরফ থেকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে এক চিঠিতে জানানো হয়, যদি সংসদে এ বিল পাশ হয়, তবে তারা জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাবে। ওই মাসেই পঞ্চায়েত ভোটে অগপ একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ভোট প্রচারের সময়ে বিজেপি-র তরফ থেকে অগপ-কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা হয়।

লোকসভায় বিল পাশ হয় ৮ জানুয়ারি। এর ফলে উত্তরপূর্ব ভারত জুড়ে ব্যাপক গণরোষের সৃষ্টি হয়। এই বিলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার যোগ্যতামানে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

আসাম চুক্তি পাশ হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। তাতে বলা হয়েছিল, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যরাতের পর যারা আসামে প্রবেশ করেছে তাদের সকলকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। অগপ-র মতে নয়া বিল অসম চুক্তিকে অমান্য করবে এবং আসামের আদি বাসিন্দাদের পক্ষে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

রাজ্য সভায় পেশ না হওয়ার ফলে এ বিল তামাদি হয়ে যায়। তবে এর কয়েকদিন পর, ১৭ ফেব্রুয়ারি, আসামে এক ভাষণ দেওয়ার সময়ে বিজেপি সভাপতি বলেন যে এ বিল ফের নিয়ে আসা হবে।

অগপ ফের বিজেপির দুয়ারে ফিরে এলেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে দু দলের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কীভাবে মেটে, তা যেমন দেখার, তেমনই বিল নাকচ না করা সত্ত্বেও বিজেপির সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে আসামের মানুষের কাছে অগপ কী যুক্তি দেখায়,  দেখার রয়েছে তাও। অনস্বীকার্য যে এ জোটের ফলে আসামে বিজেপি র শক্তি মজবুত হবে। রাজ্যে কংগ্রেস বিরোধী ভোট ভাগ হতে দিল না তারা।

আসাম আন্দোলনেই অগপ-র শিকড় রয়েছে। ৬ বছরের পুরনো বিদেশি খেদা আন্দোলন চালিয়েছে তারা, যার জেরে রাজীব গান্ধী সরকারকে অসম চুক্তি স্বাক্ষর করতে হয়েছিল।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ১২৬ সদস্যের আসাম বিধানসভায় বিজেপি ও অগপ একযোগে ৭৫টি আসনে জেতে, তাদের অন্য সহযোগী শক্তি বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট জেতে আরও ১২টি আসন। কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার কর্মসূচি নিয়ে জো বেঁধেছিল বিজেপি-অগপ।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে এজিপি একা লড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা পেয়েছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোট, এবং রাজ্যে ১৪টি আসনের মধ্যে একটিতেও জেতেনি তারা। ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে সাতটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস ও বদরুদ্দিন আজমলের এআইডিইউএফ তিনটি করে আসনে জয়লাভ করে, একটি আসন জেতে নির্দল।

২০০৯ সালের ভোটে অগপ ও বিজেপি একসঙ্গে লড়াই করে। অগপ পায় একটি আসন ও বিজেপি পায় ৪টি।

Read the Full Story in English

bjp lok sabha 2019 Assam Explained
Advertisment