লোকসভা ভোটের ফলের যা ট্রেন্ড তাতে দেখা যাচ্ছে আসামে ৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। আগের ভোটে তারা সাতটি আসনে জিতেছিল। এই ধারা থেকে একটা ব্যাপার স্পষ্ট, পরিচয়ের বা সত্তার রাজনীতিই এখানে ভূমিকা পালন করেছে, যে সত্তা আবার স্পষ্ট নির্ধারিত ভূগোলের মাধ্যমে।
নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সারা আসামে আলোড়ন তোলে। এই বিলে বাংলাদেশি হিন্দু উদ্বাস্তুরা যাতে সহজে ভারতীয় নাগরিকত্ব পান, তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার হিন্দু ও মুসলিম অসমিয়ারা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন এবং বরাক উপত্যকার হিন্দুরা এতে তীব্র সমর্থন জানান। বৃহস্পতিবার বরাক উপত্যকার শিলচরে কংগ্রেস প্রার্থী সুস্মিতা দেব পিছিয়ে রয়েছেন। এখানে বিল নিয়ে ব্যাপক প্রচার করেছিল বিজেপি। শিলচরে হিন্দু জনসংখ্যা অধিক। বরাক উপত্যকার অন্য কেন্দ্র করিমগঞ্জেও এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন, ইতিহাসের দোরগোড়ায় বিজেপি, কী ভাবে?
২০১৪ সালের কংগ্রেস তিনটি আসনে এগিয়েছিল। বর্তমান সাংসদ গৌরব গগৈ কালিয়াবরে এগিয়েছিলেন। অন্য দুটো মুসলিম প্রধান জেলা নগাঁও ও বরপেটায় এগিয়েছিল কংগ্রেস।
এআইডিইউএফ গত বার তিনটে আসনে এগিয়েছিল। এবার বদরুদ্দিন আজমল এগিয়ে আছেন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার ধুবড়িতে, যে ধুবড়ি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুসলিম প্রধান কেন্দ্র।
আপার আসামের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে বিজেপি এগিয়ে, যে চারটিতে ২০১৪ সালে জিতেছিল তারা। তারা পিছিয়েছিল একমাত্র গগৈয়ের কালিয়াবরে। এ আসনগুলির অধিকাংশ ভোটাররা অসমিয়া ভাষী। বিজেপি এখানে উন্নয়নের প্রকল্পকেও সামনে নিয়ে এসেছিল। গত পাঁচ বছরে দেশের দীর্ঘতম দুটি নদীসেতু উদ্বোধন হয়েছে এই এলাকায়। এ ছাড়া চা বাগানের ভোটার এবং বাঙালি হিন্দুদের জন্য কিছু প্রকল্পও ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, রাজ্যে বিজেপির দারুণ ফল, পশ্চিমবঙ্গে কি শেষ কংগ্রেস-বাম?
মধ্য আসামে, নগাঁও ছাড়া বিজেপি গুয়াহাটি, তেজপুর, মঙ্গলদই (তিনটি আসনেই ২০১৪ সালে জিতেছিল বিজেপি) এবং স্বশাসিত জেলা (গতবার কংগ্রেসের জেতা)য় এগিয়ে রয়েছে। কেবলমাত্র গুয়াহাটিতে যেখানে বিল নিয়ে বিতর্কে আগ্রহী হয়েছিল শহুরে জনতা, সেখানে কংগ্রেস জোর লড়াই দিচ্ছে।
বিজেপি সঙ্গী অগপ-কে কঠিন তিনটি আসন দেওয়া হয়েছিল, কালিয়াবর, ধুবড়ি এবং বরপেটা। তিন আসনেই পিছিয়ে রয়েছে তারা।
কোকরাঝাড়ে এগিয়ে রয়েছেন নির্দল প্রার্থী তথা বর্তমান সাংসদ নব সারানিয়া।