সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশের সময়সীমা একমাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এর অর্থ স্বীকৃত নাগরিক তালিকা প্রকাশিত হবে ৩১ জুলাইয়ের বদলে ৩১ অগাস্টে।
এনআরসি কী, কী চলছে
গত ৪ বছর ধরে এনআরসি প্রক্রিয়া চলছে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে। তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বারবার বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৩১ অগাস্টের যে তারিখ এবার দেওয়া হয়েছে, তার আগে একটি আংশিক খসড়া এবং একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৩০ জুলাইয়ে। মোট ৩.২৯ কোটি মানুষ এনআরসি তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ৪০.৭ লক্ষের নাম বাদ গিয়েছে চূড়ান্ত খসড়া থেকে। এর পর গত ২৬ জুলাই প্রকাশিত তালিকা থেকে আরও এক লক্ষ নাম বাদ যায়, যে নামগুলি ৩০ জুলাই, ২০১৮র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে তাঁরা দাবি তুলে এই নাম বাদ যাওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারেন এবং শুনানিতে হাজির হতে পারেন।
আরও পড়ুন, এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর ভারত কি সত্যিই কাউকে ফেরত পাঠাতে পারে
আসামে এনআরসি তালিকা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। ১৯৫১ সালের তালিকা আপডেট করার কাজ চলছে এখন। এই পদ্ধতিতেই স্থির হবে কারা আইনগতভাবে ভারতীয় নাগরিক। এবারের তারিখ ধরা হয়েছে ২৪ মার্চ, ১৯৭১। এই দিনের আগে যাঁরা এ দেশে এসেছিলেন এবং সে কথা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নথি যাঁরা দাখিল করতে পারবেন, তাঁদের নাম এনআরসি-তে ঢুকবে, তাঁরা দেশের নাগরিকত্ব ভোগ করতে পারবেন। যাঁদের নাম বাদ যাবে তাঁদের আধা বিচারবিভাগীয় বিদেশি ট্রাইবুনালে গিয়ে বাদ পড়ার কারণ দেখাতে হবে।
মেয়াদবৃদ্ধির অনুরোধ কে করেছিল
গত শুক্রবার এনআরসির রাজ্য কো অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা আসামের ভয়াবহ বন্যার প্রেক্ষিতে মেয়াদবৃদ্ধির আবেদন করেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সংলগ্ন জেলাগুলিতে এনআরসি ভুক্ত নামের মধ্যে ২০ শতাংশের এবং অন্য জেলাগুলির ১০ শতাংশ নামের পুনর্যাচাইয়ের আবেদন করে কেন্দ্র ও আসাম সরকার।
আরও পড়ুন, ফরেনার্স ট্রাইবুনাল কী ভাবে কাজ করে
সরকারের বক্তব্য ছিল এনআরসি আপডেট করার সময় বেশ কিছু নাম ভুলক্রমে বাদ পড়েছে, বেশ কিছু নাম ভুলক্রমে তালিকাভুক্তও হয়ে পড়েছে, ফলে সংশয় এড়াতে পুনর্যাচাই প্রয়োজনীয়। তবে প্রতীক হাজেলার পেশ করা একটি রিপোর্ট অনুসারে নতুন দাবি ও আপত্তির ব্যাপারে ২৭ শতাংশ পুনর্যাচাই ইতিমধ্যেই হয়েছে। এর ভিত্তিতে মঙ্গলবারের নির্দেশে এক মাসের সময়সীমা বাড়ালেও সরকারের তরফ থেকে পুনর্যাচাইয়ের যে অনুরোধ ছিল, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
সময়সীমা বৃদ্ধির অর্থ কী
মঙ্গলবারের শুনানিতে কোনও নির্দিষ্ট কারণের উল্লেখ করা হয়নি। তবে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজেলা ও তাঁর দল এক মাস অতিরিক্ত সময় পেয়ে যাচ্ছেন ৩১ অগাস্টের চূড়ান্ত তালিকায় ফাঁক ফোকর বন্ধ করার জন্য।
Read the Full Story in English