মণিপুরের মেইতিস এবং কুকি-জোমি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে 'বাফার জোন' পরিচালনার দায়িত্বে আছে অসম রাইফেলস। মেইতিদের এখন যাবতীয় রাগের কারণ এই বাহিনী। ইতিমধ্যে মেইতিসরা মণিপুর থেকে অসম রাইফেলসকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে। অতি সম্প্রতি, অসম রাইফেলস এক 'বাফার জোন' পাহারা দিচ্ছিল। মণিপুর পুলিশের অভিযোগ, অসম রাইফেলস রাস্তার ওপর নিজেদের গাড়িগুলো আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। যাতে মণিপুর পুলিশ কুকিদের অধ্যুষিত এলাকায় যেতে না-পারে। সেই সময় পুলিশ জানিয়েছিল, তারা 'সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের' পিছু নিয়েছে। এই জঙ্গিরা তিন জন মেইতিসকে হত্যা করেছে। কিন্তু, অসম রাইফেলসের জওয়ানরা একথা জানার পরও মণিপুর পুলিশকে কুকিদের এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি। যার জেরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে মণিপুর পুলিশ।
মণিপুরে আসাম রাইফেলসের সঙ্গে কী ঘটছে?
বর্তমানে মণিপুরে অসম রাইফেলসের ২০টি ব্যাটালিয়ন আছে। তাদের দায়িত্ব বিদ্রোহ রোধ করা আর সীমান্ত পাহারা দেওয়া। যেহেতু ৩ মে মণিপুরে জাতিগত হিংসা শুরু হয়েছিল, সেহেতু আরও দুটি ব্যাটালিয়ন পার্বত্য রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। অসম রাইফেলসের প্রবীণ আধিকারিকরা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তাঁদের মোতায়েনের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। যাতে, সংঘর্ষে দুটি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ কমে। উভয় সম্প্রদায়ের দখলে থাকা এলাকার মধ্যে একটি 'ব্যবধান' রাখা সম্ভব হয়।
রাখা হয়েছে 'বাফার জোন'-এ
এর মানে হল যে, অসম রাইফেলস এবং সেনাবাহিনীকে 'ফ্রিঞ্জ লোকেশন' রাখা হয়েছে। যেখানে উপত্যকার মেইতিস অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো পাহাড়ের কুকি-জোমি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এমন জায়গায় বাহিনীকে রাখার কারণ, সমস্যা সৃষ্টিকারীদের ওই জায়গা পেরনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া। অসম রাইফেলসের অফিসাররা জানিয়েছেন যে এটাই মেইতিস সম্প্রদায়ের সদস্যদের উত্তেজিত করেছে। তাদের মধ্যে অনেকের ধারণা, অসম রাইফেলস কুকি-জোমি সম্প্রদায়ের পক্ষে।
আরও পড়ুন- শিগগিরি চাঁদে ভিড় বাড়তে চলেছে, জানেন কীভাবে?
মহিলারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন
সোমবার, মণিপুর উপত্যকাজুড়ে মেইতিস সম্প্রদায়ের মহিলা কর্মীরা, যাঁরা 'মিরা পাইবিস' নামে পরিচিত, তাঁরা একটি বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল ‘অসম রাইফেলস ফিরে যাও’ ও ‘মেইতিসদের বিরুদ্ধে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহার বন্ধ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড। প্রকৃতপক্ষে, 'মিরা পাইবিস' এবং অসম রাইফেলসের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে মে মাসের শেষ থেকে। আন্দোলনকারী মহিলারা কেবল উপত্যকা অঞ্চলে অসম রাইফেলস কর্মীদের চলাচলেই নয়, তাঁদের শিবিরে রেশন এবং অন্যান্য সামগ্রী বহনকারী ট্রাক চলাচলেও বাধা দিয়েছেন।