Advertisment

জুন মাসে পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে যে গ্রহাণু

আজ, অর্থাৎ ৬ জুন, পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে একটি অতিবৃহৎ গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড, যার ব্যাস ২৫০-৫৭০ মিটার, জানিয়েছে নাসা-র জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
asteroid near earth

প্রতীকী ছবি

সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) ঘোষণা করে, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে আজ, অর্থাৎ ৬ জুন, পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে একটি অতিবৃহৎ গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড, যার ব্যাস ২৫০-৫৭০ মিটার, জানিয়েছে নাসা-র জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি। 'নিয়ার আর্থ অবজেক্ট' হিসেবে চিহ্নিত এই গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে 163348 (2002 NN4), এবং এর স্থান হয়েছে সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্রহাণু (Potentially Hazardous Asteroid বা PHA) তালিকায়।

Advertisment

নিয়ার আর্থ অবজেক্টস (NEO) কী, কেন তাদের নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি?

সূর্যের চারপাশে পরিভ্রমণ করতে করতে অনেক সময় পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে কোনও 'নিয়ার আর্থ অবজেক্ট'। এই মহাকাশের পরিযায়ীরা কত পৃথিবীর কাছে আসে, তত তাদের পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এবং দূরত্বের ওপর নজর রাখে নাসা-র সেন্টার ফর নিয়ার আর্থ অবজেক্ট স্টাডি (CNEOS)।

নাসা-র বিবরণ অনুযায়ী, নিয়ার আর্থ অবজেক্ট হলো মূলত সেইসব ধূমকেতু এবং গ্রহাণু, যেগুলি নিকটবর্তী কোনও গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের ফলে হালকা গুঁতো খেয়ে ঢুকে পড়েছে পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে। এই বস্তুগুলি মূলত জল, বরফ, এবং তন্মধ্যে গেঁথে থাকা ধূলিকণার মিশ্রণ।

ধূমকেতু এবং গ্রহাণু সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আগ্রহের মূল কারণ হলো, ৪.৬ বিলিয়ন (৪৬০ কোটি) বছর আগে যখন তৈরি হচ্ছিল আমাদের সৌরমণ্ডল বা সোলার সিস্টেম, সেই প্রক্রিয়ার মোটামুটি অপরিবর্তিত ধ্বংসাবশেষ হিসেবে রয়ে গেছে এগুলি। সুতরাং ধূমকেতু এবং গ্রহাণুরা বিজ্ঞানীদের বুঝতে সাহায্য করে সেই রাসায়নিক সংমিশ্রণের চরিত্র, যা জন্ম দিয়েছে গ্রহের।

আরও পড়ুন: কোভিড সংক্রমণ আটকাতে ‘সোশাল বাবল’-এর গুরুত্ব

উল্লেখ্য, পৃথিবীর বিলুপ্তির যেসব সম্ভাব্য কারণ অদ্যাবধি আলোচিত হয়েছে, সেগুলির অন্যতম হলো গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষ। বছর বছর ধরে এই সংঘর্ষ এড়ানোর নানাবিধ পথ বাতলেছেন বিজ্ঞানীরা, যেমন পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই বিস্ফোরকের সাহায্যে গ্রহাণুটিকে ধ্বংস করা, বা মহাকাশযানের সাহায্যে সেটির গতিপথ পাল্টে দেওয়া। নাসা-র নিয়ার আর্থ অবজেক্ট অবজারভেশনস প্রোগ্রাম ১৪০ মিটার বা তার বেশি আয়তনের (অর্থাৎ একটি ছোটখাটো ফুটবল স্টেডিয়ামের চেয়ে বড়) প্রায় ৯০ শতাংশ সম্ভাব্য NEO খুঁজে বের করে তাদের ওপর নজর রাখে, এবং তাদের শ্রেণীভুক্ত করে।

নাসা বরাবরই বলে এসেছে যে এই আয়তনের বা তার চেয়ে বড় বস্তু পৃথিবীর পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক, প্রধানত সংঘর্ষের ফলে যে বিপুল ক্ষতি হবে, সেই কারণে। তাছাড়াও তারা জানিয়েছে যে আগামী ১০০ বছরে যদিও ১৪০ মিটার বা তার চেয়ে বেশি আয়তনের কোনও গ্রহাণুর পৃথিবীতে এসে পড়ার "উল্লেখযোগ্য" সম্ভাবনা নেই, একথাও সত্য যে এই আয়তনের আনুমানিক যত NEO রয়েছে, সেগুলির অর্ধেকের বেশি এখনও খুঁজেই পাওয়া যায় নি।

163348 (2002 NN4) কী?

এই গ্রহাণুটিও PHA তালিকার অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ তার পৃথিবীর বিপজ্জনক রকমের কাছাকাছি চলে আসার সম্ভাবনা থাকে। সরল ভাষায় বলতে গেলে, যেসব গ্রহাণুর ন্যূনতম অরবিট ইন্টারসেকশন ডিস্ট্যান্স ০.০৫, অথবা ৭ কোটি ৪৮ লক্ষ কিমি, এবং পূর্ণ আয়তন ২২ বা তার কম (১৫০ মিটার বা তার কম), সেগুলিকে PHA হিসেবে গণ্য করা হয়।

তবে তার অর্থ এই নয় যে PHA শ্রেণীভুক্ত হলেই পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খাবে কোনও গ্রহাণু। নাসা বলে, "এর অর্থ স্রেফ এই যে, সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। এইসব PHA-র ওপর নজর রেখে, এবং তাদের কক্ষপথ আপডেট করতে থাকলে আমরা তাদের কাছাকাছি আসার বা পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য দিতে পারব।"

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের জুলাই মাসে আবিষ্কৃত হয় 2002 NN4 গ্রহাণু। আজ তার পৃথিবীর কাছাকাছি আসার কথা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Advertisment