কোভিড-১৯ জনিত সংকটের জেরে সারা বিশ্বে সরবরাহ শৃঙ্খল বিপর্যস্ত এবং দেশ যখন চিনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার আঁচ পোয়াচ্ছে, সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আত্মনির্ভর ভারতের আহ্বান রেখেছেন।
কিন্তু ভারতের কৃষিতে এর অর্থ কী?
ICRIER-এ কৃষির ইনফোসিস চেয়ার প্রফেসর অশোক গুলাটি বাণিজ্য পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেছেন, যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত ইতিমধ্যেই নেট রফতানিকারক। এর শুরু হয়েছে ১৯৯১ সালে, যখন আর্থিক সংস্কার ঘটল, সেই সময়ে।
"কৃষি বাণিজ্যের সুবর্ণ সময় ছিল ২০১৩-১৪। সে বছর মোট ৪৩.৬ বিলিয়ন ডলারের কৃষি পণ্য রফতানি করা হয়েছে, যখন আমদানি করা হয়েছে ১৮.৯ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ নেট উদ্বৃত্ত ২৪.৭ বিলিয়ন ডলার। সেটাই ছিল ইউপিএ সরকারের শেষ বছর।"
কিন্তু মোদী সরকার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কৃষি রফতানি কমতে থেকেছে। গুলাটি লিখেছেন, "২০১৯-২০ সালে মোদী সরকার যখন ৬ বছর পূর্ণ করল, সে বছর কৃষি রফতানি কমেছিল ৩৬ বিলিয়ন ডলার, এবং কৃষি বাণিজ্যে নেট উদ্বৃত্ত ১১.২ বিলিয়ন। এই পারফরম্যান্স নিয়ে ২০২২-এ কৃষি রফতানি দ্বিগুণ করা প্রায় অসম্ভব।"
কৃষি আমদানির বিষয়ে গুলাটি বলছেন সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয়েছে ভোজ্য তেল, যার মূল্য ১০ বিলিয়ন ডলার (১৫ মিলিয়ন টনের বেশি)।
তাঁর বক্তব্য, "এখানে আত্ম নির্ভরতা গড়ে তুলতে হবে আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে নয়, প্রতিযোগিতামূলক ভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে, তৈল বীজ থেকে এবং পাম তেলের ক্ষেত্রে তাজা ফল থেকে তেল উৎপাদনের অনুপাত বৃদ্ধি করতে হবে।"
তিনি বলছেন, "সর্ষে, সূর্যমুখী, বাদাম ও তুলোবীজের থেকে কিছুটা তেল উৎপাদন বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে পাম তেলে। এই একটি মাত্র ক্ষেত্র, যেখানে প্রতি হেক্টরে চার টনের মত তেল উৎপাদন করা যায়।"
"ভারতের পাম চাষের যোগ্য ২ মিলিয়ন হেক্টর জমি রয়েছে, যা থেকে ৮ মিলিয়ন টন পাম তেল উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টি ও কৌশল প্রয়োজন। যদি মোদী সরকার কৃষিতে আত্মনির্ভর ভারত চায়, তাহলে পামের দিকে তাকাতে হবে।"