Advertisment

Aurora lights in India: ভারতেও দেখা গেল অরোরা আলো, লাদাখ থেকে এগুলো দেখতে পাওয়ার কারণ কী?

Aurora lights: অরোরা প্রায়শই চরম উত্তর বা দক্ষিণ অক্ষাংশে যেমন উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুগুলির কাছাকাছি দেখা যায়। সম্প্রতি হিমালয়ের একটি অক্ষাংশ অঞ্চল লাদাখ থেকেও তা দেখা গিয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Aurora lights, Ladakh, অরোরা লাইট, লাদাখ,

Aurora lights-Ladakh: লাদাখের হ্যানলে ডার্ক স্কাই রিজার্ভে ধরা পড়েছে অরোরা রেড আর্ক। (চিত্রঋণ: হ্যানলে ডার্ক স্কাই রিজার্ভের স্ট্যানজিন নরলা, ওয়াংচুক নামগিয়াল ও স্ট্যানজিন নরবু)

What caused Aurora lights to be visible even from Ladakh: শুক্রবার (১০ মে) এবং শনিবারের মধ্যবর্তী সময়ে গভীর রাতে লাদাখের আকাশ থেকে লাল রঙের অরোরা আলোগুলো দেখা গিয়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, বেঙ্গালুরু (আইআইএ/IIA) এর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লাদাখের হ্যানলেতে ইন্ডিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি (আইএও/IAO)-এর চারপাশে থাকা অল-স্কাই ক্যামেরার মাধ্যমে অরোরাকে দেখেছেন। আইআইএ মালিকানাধীন এবং পরিচালিত, আইএও-এর ক্যামেরাগুলো লাগাতার আকাশের ছবি তুলতে সক্ষম। শনিবার মধ্যরাত থেকে গোধূলির মধ্যে এই ছবি তোলা হয়েছে। শনিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অরোরাস নামে পরিচিত এই আলোগুলো সাধারণত উচ্চ-অক্ষাংশ অঞ্চল, অর্থাৎ উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু থেকে দেখা যায়। উত্তর মেরুতে দেখা গেলে, তাকে বলা হয়- অরোরা বোরিয়ালিস। আর দক্ষিণ থেকে দেখা গেলে বলা হয়, অরোরা অস্ট্রালিস। আর, তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই আলো সম্প্রতি ভারত-সহ একটি বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে দেখা গেল?

Advertisment

অরোরা কী?
অরোরা হল উজ্জ্বল এবং রঙিন আলো। যা সৌর বায়ু এবং পৃথিবীর চুম্বকমণ্ডলের মধ্যে মহাকাশে সক্রিয় মিথস্ক্রিয়ার কারণে তৈরি হয়। সৌর বায়ু হল সূর্যের বায়ুমণ্ডল থেকে কণার নির্গমন। যা বেশিরভাগই প্রোটন এবং ইলেকট্রন দ্বারা গঠিত। ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) অনুসারে, আন্তঃগ্রহীয় মহাকাশের চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তে পৃথিবীর আশপাশের অঞ্চল হল ম্যাগনেটোস্ফিয়ার। যা, পৃথিবীর প্রভাবশালী চৌম্বক ক্ষেত্র। এটি সৌর বায়ু থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে এবং মেরু অঞ্চলেই সবচেয়ে প্রভাবশালী। এই সৌর বায়ুকণা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের নীচু এলাকায় কখনও সখনও প্রবাহিত হয়। পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলে এই কণাগুলো পরমাণু ও অণুর সঙ্গে সংঘর্ষে অরোরা উৎপন্ন করে। যেমনভাবে একটি নিয়ন আলোতে গ্যাসের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ইলেকট্রনগুলো অন্যান্য গ্যাসের সঙ্গে সংঘর্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন রঙের আলোর বাল্ব তৈরি করে, এটাও ঠিক তেমন ভাবেই উৎপন্ন হয় বলেই এনওএএ (NOAA) ওয়েবসাইট জানিয়েছে।

Red aurora lights in Ladakh.
লাদাখের হ্যানলেতে ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (IAO) ওপর লাল অরোরা আলো আকাশকে সাজিয়ে তুলেছে। (আইআইএ-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবি)

তাহলে লাদাখ থেকে কেন অরোরা দেখা গেল?
এটি মহাকাশে উচ্চতর সৌর শিখার কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পর্কিত। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর) কলকাতার সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ইন স্পেস সায়েন্স ইন্ডিয়ার সৌর পদার্থবিদরা বলেছেন যে, শুক্রবার এবং শনিবারের মধ্যে অন্তত চারটি শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীতে এসেছে। এই ঝড়ের উৎস ছিল করোনাল ম্যাস ইজেকশনস (সিএমইএস/CMEs)। যা সূর্যের করোনা থেকে চুম্বকীয় কণা এবং প্লাজমার বৃহৎ নির্গমন। এই সিএমইগুলো বর্তমানে সূর্যের ওপর একটি সক্রিয় অঞ্চল, এআর১৩৬৬৪ (AR13664) থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এই সৌরঝড়গুলো ৭০০ কিমি/সেকেন্ড গতিতে ১০ এবং ১১ মে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছেছিল। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সৌরঝড়ের মিথস্ক্রিয়ার জেরে ওই লাল, বেগুনি এবং নীল রঙে অরোরার আবির্ভাব হয়েছিল। সৌঝড়গুলো এতই শক্তিশালী ছিল যে অরোরা আলোগুলো অনেক নিম্ন-অক্ষাংশ অঞ্চল থেকেও দৃশ্যমান ছিল। শুধু লাদাখই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের (ব্রিটেন) কিছু অংশেও অরোরা দেখা গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে একই তীব্রতার একটি সৌরঝড় এর আগে ২০০৩ সালের নভেম্বরেও পৃথিবীকে প্রভাবিত করেছিল।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা
বর্তমানে, দৃশ্যমান সৌরডিস্কে বেশ কয়েকটি চৌম্বকীয়ভাবে সক্রিয় অঞ্চল আছে। যা একাধিক উচ্চশক্তির শিখা তৈরি করে। যার জেরে বিজ্ঞানীরা সিএমইগুলোর একটি সিরিজ ১২ মে পর্যন্ত পৃথিবীর দিকে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এই ক্রমাগত সৌর ঝড়গুলো মহাকাশের আবহাওয়াকে বিঘ্নিত করে। পৃথিবীর চুম্বকমণ্ডলে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটায়। যা পরবর্তী দুই দিন স্থায়ী হয় বলেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- বিজেপির লক্ষ্য ৪০০ পার, ১৯৮৪-তে পেরিয়ে কিন্তু ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কংগ্রেস! জানেন ইতিহাস?

সৌরঝড় কতটা বিপজ্জনক?
তীব্র সৌরঝড় ক্ষতিকারক হতে পারে। কারণ, তারা নিম্ন আর্থ অরবিট বা এলইও (LEO)-র ২০০ থেকে ১,৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে উচ্চতাতে কাজ করা স্যাটেলাইটগুলোর মসৃণ ক্রিয়াকলাপে হস্তক্ষেপ করতে পারে। হুমকিদায়ক হতে পারে। এলইও থেকে কাজ করা সবচেয়ে সাধারণ উপগ্রহগুলো একাধিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। যেমন- নেভিগেশন, সামরিক, বুদ্ধিমত্তা, যোগাযোগ ইত্যাদি। যার ফলে সৌরঝড়, পৃথিবীর উপগ্রহ-ভিত্তিক জিপিএস, নেভিগেশন সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতি করতে পারে। এই সৌরঝড় দ্বারা সৃষ্ট অত্যন্ত শক্তিশালী কণা পরিবেশের ওপরের বায়ুমণ্ডলের উত্তাপকেও প্রভাবিত করতে পারে। এটি বিকিরণ বিপত্তির ঝুঁকি বাড়ায়। যার প্রভাব পড়তে পারে এলইও-তে অবস্থানরত উপগ্রহগুলোর ওপর। যাতে স্যাটেলাইটগুলো জ্বলে যেতে পারে। পুড়ে যেতে পারে। কার্যক্ষমতাহীন হয়ে যেতে পারে।

south pole nepal. Bhutan. Himalaya region Earth sunlight
Advertisment