Austria Nehru Modi: অস্ট্রিয়ায় নেহরুর পথেই মোদী! সামনে বাজানো হল বন্দে মাতরম! নির্জোট বিশ্বরাজনীতিতে পদক্ষেপ
Austria-Vande Mataram: সেদেশের সংগীতশিল্পীরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে শোনালেন 'বন্দে মাতরম'। আর, তা সম্ভব হল এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠা ভারতীয় সংগীত পরিচালকের সৌজন্যে। তিনি হলেন বিজয় উপাধ্যায়।
Nehru-Modi: মোদী নানা ক্ষেত্রেই নেহরুকে নকল করা শুরু করেছেন। (ছবি- টুইটার, উইকিমিডিয়া কমন্স)
Austria Nehru Modi Vande Mataram: বিশ্ব রাজনীতিতে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে অস্ট্রিয়াকে সঙ্গী করেছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। এবার আমেরিকা-কেন্দ্রিক জোট ন্যাটো এবং ন্যাটো-বিরোধী রাশিয়া-চিনের জোট রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে নেহরুর নির্জোট বিশ্ব রাজনীতির পথকেই বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর, এই কারণে তাঁর অস্ট্রিয়া সফর অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল।
Advertisment
অস্ট্রিয়ার সংগীতশিল্পীরা গাইলেন, বাজালেন 'বন্দে মাতরম' এই সফরে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের কর্ণধার মোদীকে পাশে পেতে অস্ট্রিয়াও চেষ্টার কসুর করল না। তাদের দেশের সংগীতশিল্পীরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে শোনালেন 'বন্দে মাতরম'। আর, তা সম্ভব হল এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠা ভারতীয় সংগীত পরিচালকের সৌজন্যে। তিনি হলেন বিজয় উপাধ্যায়। আদতে, লখনউয়ের ছেলে। তিনি ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি ফিলহারমনিকের ডিরেক্টর। অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্কেস্ট্রার পাশাপাশি তিনি ইন্ডিয়া ন্যাশনাল ইয়ুথ অর্কেস্ট্রাও প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি হামেশাই আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে ভারতীয় ধাঁচের সংগীত পরিবেশনা করে শোনান।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নির্জোট রাজনীতি থেকে সরেছিল ভারত জওহরলাল নেহরুর পর আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় আমেরিকা এবং রাশিয়ার মেরুকরণের চাপে নির্জোট রাজনীতির পথ থেকে সরেছিল ভারত। যার সূত্র ধরে অস্ট্রিয়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের কাছে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছিল। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮৩ সালে ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন শেষ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি মধ্য ইউরোপের দেশটি সফর করেন। তারপর মঙ্গলবার ভারতের আরেক প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী অস্ট্রিয়ার মাটিতে পা রাখলেন।
Advertisment
May the India-Austria friendship scale new heights of progress!
কংগ্রেস কৃতিত্ব নিতে ছাড়েনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অস্ট্রিয়া সফরের আগে কংগ্রেস মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর, 'এক সার্বভৌম ও নিরপেক্ষ অস্ট্রিয়ার উত্থানে মূল ভূমিকা'র কথা স্মরণ করেছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা কমিউনিকেশন ইনচার্জ জয়রাম রমেশ বলেছেন, অস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্র সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫৫ সালের ২৬ অক্টোবর, সেই ব্যক্তির সাহায্যে, যাঁকে 'ঘৃণা করতে এবং যাঁর মানহানি করতেই মোদী পছন্দ করেন।' রমেশ প্রখ্যাত অস্ট্রিয়ান শিক্ষাবিদ ড. হান্স কোচলারের লেখার কথাও উল্লেখ করেছেন। কোচলার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী শক্তিগুলো এক দশক দখল করে রাখার পরে অস্ট্রিয়ার উত্থানে নেহরুর ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন।
Today the non-biological PM is in Austria.
The Republic of Austria was established fully only on October 26th 1955, which is celebrated as its National Day. One person who was critical to this becoming a reality was none other than the man Mr. Modi loves to hate and defame.… pic.twitter.com/scTri4EPBI
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অস্ট্রিয়ার পরিস্থিতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, অস্ট্রিয়াকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয় এবং বিজয়ী মিত্র শক্তি- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য বা ব্রিটেনে এবং ফ্রান্স সেই অঞ্চলগুলো দখল করে রেখেছিল। তবে, অস্ট্রিয়া একটি সার্বভৌম দেশ হতে চেয়েছিল। নিরপেক্ষ থাকার মাধ্যমে, অস্ট্রিয়া পশ্চিমী এবং পূর্ব উভয় ব্লকের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে অনন্য ভূমিকা পালন করতে চাইছিল। কিন্তু এর অবস্থান- পুঁজিবাদী পশ্চিম ইউরোপ এবং কমিউনিস্ট মতবাদী পূর্ব ইউরোপের ঠিক মাঝখানে হওয়ায় অস্ট্রিয়া একটি ঠান্ডা যুদ্ধের ফ্ল্যাশপয়েন্টে পরিণত হয়ে ওঠে। সোভিয়েত এবং পশ্চিমী দেশগুলো, উভয়েই অস্ট্রিয়াকে তাদের ছত্রছায়ায় আনার চেষ্টা করছিল।
Austria is known for its vibrant musical culture. I got a glimpse of it thanks to this amazing rendition of Vande Mataram! pic.twitter.com/XMjmQhA06R
নেহরুর সঙ্গে অস্ট্রিয়ার সম্পর্ক আর এখানেই নেহরুর প্রবেশ ঘটে। কোচলার, 'অস্ট্রিয়ার নিরপেক্ষতা এবং নন-অ্যালাইনমেন্ট (২০২১)'-এ লিখেছেন যে কীভাবে ১৯৫২ সালের আগস্টে, অস্ট্রিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের রাজনৈতিক পরিচালক নেহরুর সঙ্গে এসে নয়াদিল্লিতে দেখা করেছিলেন। তিনি নেহরুকে অস্ট্রিয়ার আকাঙ্খার ব্যাপারে সোভিয়েতের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেছিলেন। সেই বছরই মিত্রশক্তিগুলোর দখলদারিত্বের অবসান ঘটে। আর, সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে অস্ট্রিয়ার আবেদনকে কয়েকটি দেশ সমর্থন করে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ভারত।