১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। ৩১ বছর পর, অযোধ্যা এখন রামমন্দিরের উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত। মন্দিরের নির্মাণকাজ পুরোদমে চলছে। একইভাবে দ্রুত রূপান্তর হচ্ছে এই শহরের। ২০১৭ সালে বিজেপির ক্ষমতায় আসা এবং যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে অযোধ্যার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালের মে মাসে, ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরে, বিজেপি সরকার ফৈজাবাদ এবং অযোধ্যার মিউনিসিপ্যাল বোর্ডগুলিকে মিলিয়ে দেয়।
নতুন কর্পোরেশন
একটি নতুন পৌর কর্পোরেশন তৈরি করে। নাম দিয়েছে, অযোধ্যা নগর নিগম। রাজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার অযোধ্যার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করেছে। অযোধ্যা শহরটি আগে ফৈজাবাদ জেলার অংশ ছিল। কিন্তু, ২০১৮ সালের নভেম্বরে আদিত্যনাথ সরকার ফৈজাবাদ জেলা এবং বিভাগের নাম বদলে অযোধ্যা করেছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে, সরকার ঘোষণা করেছিল যে ফৈজাবাদ রেলওয়ে জংশনের নাম পরিবর্তন করে অযোধ্যা ক্যান্ট করা হবে।
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা
যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে অযোধ্যায় বিমান, রেল ও সড়ক পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের মতে, বর্তমানে অযোধ্যায় ৩০,৯২৩ কোটি টাকার ২০০টিরও বেশি প্রকল্প চলছে। যা, ৩৭টি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত। প্রশাসনের ধারণা, একবার রাম মন্দির চালু হলে দিনে নিয়মিত ২ লক্ষ এবং বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ দিনে ৫ লক্ষ পর্যন্ত পুণ্যার্থী আসবেন। একথা মাথায় রেখেই নির্মিত হচ্ছে পরিকাঠামো।
বিমান যোগাযোগ
লখনউ-গোরক্ষপুর মহাসড়কের পাশে একটি বড় প্রকল্প হল, 'মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর'। ২০২২ সালের এপ্রিলে উত্তরপ্রদেশ সরকার এই বিমানবন্দরের জন্য ৩১৮ একর জমি হস্তান্তরের জন্য এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (AAI)-এর সঙ্গে একটি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এখানকার ১,৫০০ মিটার-লম্বা এবং ৩০ মিটার চওড়া রানওয়ে তৈরি হচ্ছে। আগে এখানে ছোট প্লেন নামত। আর, ফ্লাইং ক্লাব চলত। এখন ২৪টি বিমান দাঁড়ানোর মত একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে।
সড়ক যোগাযোগ
যার মধ্যে রয়েছে তিনটি প্রধান পথ: শ্রীরাম জন্মভূমি পথ। যা (৫.৭৭ কিলোমিটার লম্বা)। এই পথ সুগ্রীব কিলা হয়ে নয়াঘাটের সঙ্গে রাম মন্দিরের সংযোগ স্থাপন করছে। তৈরি হচ্ছে ভক্তি পথ (৮৫০ মিটার), যা হনুমানগড়ি হয়ে রাম মন্দিরের সঙ্গে প্রধান রাস্তাকে যুক্ত করবে। রাম পথ (১২.৯ কিমি), যা সাদাতগঞ্জকে রামজন্মভূমির সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এই প্রসারিত অংশগুলোয় আগে খোলা ড্রেন-সহ সরু এবং ঘেরা রাস্তা ছিল। স্থানীয়রা, যাঁরা এই রাস্তার ধারে বসবাস করতেন এবং এখানে দোকান চালাতেন, তাঁরা তাদের সম্পত্তির সামনের অংশগুলোকে প্রশস্ত লেন করার অনুমতি দিয়ে ভেঙে দিয়েছে। আর, প্রশাসনের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়েছে।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের বৃদ্ধতন্ত্র: এবার অভিষেকের নীতি নিয়ে প্রশ্ন ফিরহাদের! নিজেকে রাখলেন কোন ক্যাটাগরিতে?
মাল্টি লেভেল পার্কিং লোকেশন
এছাড়াও, কমপক্ষে পাঁচটি মাল্টি-লেভেল পার্কিং লোকেশন তৈরি করা হচ্ছে। লখনউ-গোরক্ষপুর মহাসড়কে ভিড় সামলাতে, ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি (NHAI) একটি ৬৫ কিলোমিটার আউটার রিং রোড তৈরি করবে। এজন্য ২,৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। চার লেনের রিং রোডটি অযোধ্যা, গোন্ডা এবং বাস্তি জেলার মধ্যে দিয়ে যাবে। অযোধ্যা রেলওয়ে স্টেশনটি আবার তিনটি নতুন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সম্প্রসারিত হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে আরেকটি রেলপথের ল্যান্ডস্কেপিং এবং উন্নয়ন করা হবে।