Advertisment

বাংলাদেশের হোলি আর্টিজান বেকারির জঙ্গি হামলা ও সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

২ জুলাই বাংলাদেশি সংবাদপত্র ডেলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হয়, রেস্তোরাঁয় উপস্থিত যে দুজন কোরান আবৃত্তি করতে পেরছিলেন, তাঁদের ছেড়ে দিয়ে বাকি সকলকে হত্যা করা হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Holey Artisan Attack, Bangladesh Terror Attack

২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান বেকারি হামলায় মারা যান এক ভারতীয়ও

বুধবার বাংলাদেশের বিশেষ সন্ত্রাস দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান ২০১৬ সালের রেস্তোরাঁ হামলার জন্য দায়ী সাতজন ইসলামি জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। রাজধানী ঢাকার একটি দামি রেস্তোরাঁয় এই হামলায় মারা যান ২০ জনেরও বেশি বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এ হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গি হামলা।

Advertisment

এই হামলার পরিকল্পনা এবং পাঁচজন আক্রমণকারীকে অস্ত্র জোগানোর দায়ে আটজনকে অভিযুক্ত করা হয়।  বাংলাদেশি কম্যান্ডোরা হামলাকারী পাঁচজনকে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেছিল।

মিজানুর রহমান নামের একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ না-মেলায় তাকে খালাস করে দেওয়া হয়েছে। সেদিনের ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছিলেন ৯ ইতালিয়, ৭ জাপানি, ৫ বাংলাদেশি ও ১ ভারতীয় নাগরিক। ভারতীয় যে নাগরিক মারা গিয়েছিলেন তাঁর নাম তারিশি জৈন। ১৮ বছরের তারিশি বার্কলের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন।

যে সাতজন জাপানি মারা গিয়েছিলেন তাঁরা সকলেই একটি বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য ছিলেন। ইতালির নাগরিকরা সকলেই বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ছিলেন।

যে পাঁচজন বাংলাদেশি মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজন আমেরিকায় পড়াশোনা করতেন, দুজন ছিলেন পুলিশকর্মী এবং একজন বিপণন জগতের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়।

২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে কী ঘটেছিল?

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত ৮-৪০ মিনিট নাগাদ পাঁচ জঙ্গি অ্যাসল্ট রাইফেল, গ্রেনেড ও চাপাতি নিয়ে হোলি আর্টিজান বেকারিতে প্রবেশ করে। ঢাকার কূটনৈতিক অঞ্চলের রোড ৭৯-তে এই রেস্তোরাঁটি অবস্থিত ছিল।

২ জুলাই বাংলাদেশি সংবাদপত্র ডেলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হয়, রেস্তোরাঁয় উপস্থিত যে দুজন কোরান আবৃত্তি করতে পেরছিলেন, তাঁদের ছেড়ে দিয়ে বাকি সকলকে হত্যা করা হয়। খুন করার আগে তাঁদের উপর অত্যাচারও করে জঙ্গিরা।

জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যুর পর বাংলাদেশি আধা কম্যান্ডোবাহিনী ২ জুলাই সকালে অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করে। ১২ ঘণ্টার বেশি লড়াই চালানোর পর রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করেন কম্যান্ডোরা। ১৩ জন বন্দিকে উদ্ধার করা হয়, হত্যা করা হয় পাঁচ জঙ্গিকে।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায়িত্ব নেয়। তবে বাংলাদেশ এ দাবি উড়িয়ে দেয়। তারা বলেছিল এ ঘটনার পিছনে রয়েছে স্থানীয় নিষিদ্ধ গোষ্ঠী জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)।

এ হামলার মূল চক্রী তামিম চৌধুরী ওরফে তালহা ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে পুলিশ অপারেশনে নিহত হয়।

ঢাকা ট্রিবিউনের এক রিপোর্ট অনুসারে জঙ্গিরা এ রেস্তোরাঁ বেছে নিয়েছিল তার কারণ এখানে নিরাপত্তা কম এবং মূল খদ্দেররা বিদেশি।

মামলা চলল কীভাবে?

হামলার পর বাংলাদেশে জঙ্গি দমন আইনে গুলশন থানায় মামলা দায়ের হয়।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে বিচার শুরু হয়। ঢাকা পুলিশ জেএমবি-র ৮ জন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে।

ডেলি স্টারের প্রতিবেদন অনুসারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছে, জহ্গিদের পরিকল্পনা ছিল দেশের সুস্থিতি নষ্ট করা, বিনিয়োগকারী এবং বিদেশি উপদেষ্টাদের দেশ থেকে তাড়ানো ও দেশের অর্থনীতি ধ্বংস।

ওই রিপোর্টে চার্জশিটের একটি অংশ উদ্ধৃত করা হয়েছে। "সন্দেহভাজনরা ভেবেছিল বড় সংখ্যক বিদেশিদের হত্যা করতে পারলে তারা আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীরও নজরে চলে আসবে।"

IS
Advertisment