Why India should exercise caution: অশান্ত বাংলাদেশ। তার জেরে সতর্কতা অবলম্বন করা হল ভারতে। সন্দেহ নেই যে পাকিস্তান এবং চিন, উভয়েই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে খুশি। তারা এই পরিবর্তনের জেরে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নিতে চায়। ক্ষমতার পরিবর্তন বাংলাদেশের পুরোনো ধারা। যার সঙ্গে ভারতকে মানিয়ে নিতে হবে। সংরক্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভের নামে জামাত-সব বিভিন্ন বিরোধীদের বিক্ষোভ শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছিল।
অশান্তি এখনও চলছেই
হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে আপাতত ভারতে। আশ্রয় খুঁজছেন। অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোটের ওপর দায়িত্ব নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভ থামবে কি না, বর্তমান অস্থিরতা প্রশমিত হবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ, অশান্তি এখনও অব্যাহত। বিভিন্ন থানায় হামলা হচ্ছে। হাসিনার সময় থেকেই পুলিশকর্মীদের আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে দিচ্ছে না প্রশাসন। তার জেরে বহু পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জামাতের লোকজন থানায় ঢুকে হামলা চালাচ্ছে। এখনও বেছে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- মুজিবের ‘শাহাদাত’-এর মাসেই ক্ষমতাচ্যুত কন্যা হাসিনা, ইতিহাস ফিরল বাংলাদেশে
দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক
শেখ হাসিনার শাসনে বাংলাদেশের অর্থনীতি, পোশাক রপ্তানি, বিজ্ঞান সবক্ষেত্রেই অগ্রগতি ঘটেছিল। চাকরি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছিল। যাইহোক, ২০২০ সালে মহামারী এবং তারপরে মন্থর বিশ্ব অর্থনীতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে আঘাত করেছে। তাতে বাংলাদেশবাসীর ক্ষোভ জন্মেছিল। অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং সরকার ও আওয়ামি লিগের সদস্যদের ক্রমবর্ধমান লোলুপতা এই বিক্ষোভকে পূর্ণ মাত্রায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করে। ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থানের বিষয়ে সাবধানে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দিল্লি। ইতিমধ্যে ভারতে বাংলাদেশ নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও হয়েছে। সেখানে যেমন সরকারের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তেমনই বৈঠক হয়েছে সব দলের সঙ্গে। সেখানে বাংলাদেশ নিয়ে রিপোর্ট পেশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী।
বাধ্য হয়েই পদত্যাগ
হাসিনার ক্ষমতায় থাকার শেষ দিনগুলোতে বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল। 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নাম দিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই থেকে বাংলাদেশে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। আন্দোলনকারীরা প্রথমে নয় দফা দাবি তোলে। তারপর সেখান থেকে সরে এলে একদফা দাবি জানায়। সেই দাবিতে হাসিনা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। শুধু ডাক দেওয়াই নয়। আন্দোলনকারীরা দাবি পূরণ না হলে সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয়। এরপর আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। শাসক দল আওয়ামি লিগ এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে শুধুমাত্র রবিবারই অন্ততপক্ষে ৯৮ জন প্রাণ হারান। এই হতদের মধ্যে ছিলেন ১৪ পুলিশকর্মী। এই সব কারণেই বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।
পিছনে ধর্মীয় মৌলবাদ
বাংলাদেশের এই আন্দোলনের পিছনে যে মুসলিম মৌলবাদ, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা ভারতেও ছড়াতে পারে, ভারতে উসকানি দিতে পারে, এই আশঙ্কা রয়েছে নয়াদিল্লির। এর আগে ভারতের ঘনিষ্ঠ দেশ নেপালে গৃহযুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধের পর থেকে ক্ষমতার বৃত্তে ঢুকে পড়া নেপালের মাওবাদীরা বারবার ভারতের বিরুদ্ধে চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। মায়ানমারও রয়েছে সেনাশাসনে। মায়ানমারও ভারতের বিরুদ্ধে চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। প্রতিবেশী পাকিস্তান তো বরাবরের ভারত-বিদ্বেষী। আর, এই সব কারণেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নয়াদিল্লির।