শনিবারের পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে ব্যাঙ্ক জমার উপর বিমার পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই প্রস্তাবের ফলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপর মানুষের ভরসা ও আস্থা বাড়াবে, যার জেরে জমাকারীরা তাঁদের জমার পরিমাণ বাড়াবেন।
এই পরিমাণ বৃদ্ধির কারণ কী?
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পাঞ্জাব ও মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাঙ্ক লিমিটেড (PMC Bank)-এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই ব্যাঙ্কের মূল শাখা মুম্বইতে অবস্থিত। এই অগ্রণী সমবায় ব্যাঙ্কে মোট জমার পরিমাণ ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একজন প্রশাসক নিয়োগ করে এবং সমস্ত বোর্ড অফ ডাইরেক্টরদের সরিয়ে দেয়। আতঙ্কিত উপভোক্তারা রাজ্য জুড়ে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় ছুটে যান, কিন্তু তাঁদের ১০০০ টাকার বেশি ব্যাঙ্ক থেকে তুলতে দেওয়া হয়নি। এ ঘটনার জেরে ব্যাপক বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
DICGC-র ভূমিকা কী ছিল?
ডিপোজিট ইনশিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন, বা DICGC একটি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আওতাধীন সংস্থা। এ সংস্থা এতদিন পর্যন্ত ব্যাঙ্ক জমার উপর এক লক্ষ টাকা বিমা দিত। বাজেট প্রস্তাব অনুসারে এবার থেকে ব্যাঙ্ক প্রত্যেক আমানতকারীকে ৫ লক্ষ টাকা বিমা দেবে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এদের হাতে উদ্বৃত্ত ফান্ড ছিল ৮৭,৯৯৫ কোটি টাকা। কর্পোরেশনের বার্ষিক রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গিয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে ১৫২ কোটি টাকার দাবির কথা জানা হিয়েছে। তার আগের বছর দাবির পরিমাণ ছিল ১৮৩ কোটি টাকা।
আমানতকারী কী পাবেন?
ব্যাঙ্ক ফেল পড়লে, আমানতকারীরা কর্পোরেশনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পাবেন। তবে বর্তমান যেসব আমানতকারীর ৫ লক্ষ টাকার বেশি জমা রেখেছেন, তাঁদের কোনও আইনি সহায়তা নেই। একবার বাজেট সংসদে পাশ হয়ে গেলে, আমানতের অঙ্ক ২৫ লক্ষই হোক বা ৫ কোটি, আমানতকারী ব্যাঙ্ক ফেল করলে ওই পাঁচ লক্ষ টাকাই পাবেন।
ব্যাঙ্কের উপর এর কী প্রভাব পড়বে?
আমানতের উপর বিমার পরিমাণ বাড়ার মানে ব্যাঙ্কের অপারেটিং খরচ বাড়বে এবং তার লাভের পরিমাণ কমবে, কারণ বিমার প্রিমিয়াম ব্যাঙ্কের খরিদ্দারদের উপর চাপাতে পারবে না ব্যাঙ্কগুলি। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুসারে আমানতের ২৮ শতাংশ (মোট রাশির পরিমাণের) এবং আমানতকারীদের (অ্যাকাউন্টের সংখ্যা অনুযায়ী) ৯২ শতাংশ আমানত বিমাকৃত যা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আইসিআরএ লিমিটেডের গোষ্ঠীশীর্ষ কার্তিক শ্রীনিবাসন।