Advertisment

Explained: বাংলার দুর্ভিক্ষ কীভাবে বদলে দিয়েছিল ভারতের 'সবুজ বিপ্লবের জনক' স্বামীনাথনের জীবন?

দুর্ভিক্ষে ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
MS Swaminathan and Green Revolution

বার্মার বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান জেনারেল নে উইন-কে ১৯৭০ সালে নয়াদিল্লিতে ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এমএস স্বামীনাথন একগুচ্ছ ভুট্টা উপহার দিচ্ছেন। (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের আর্কাইভে রাখা ছবি)

কিংবদন্তি কৃষি বিজ্ঞানী মনকম্ব সাম্বাশিবন স্বামীনাথন। বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ৯৮ বছর বয়সে মারা গেলেন। তাঁকে ভারতে 'সবুজ বিপ্লবের জনক' বলা হয়। তিনি ১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকে ভারতে কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই পরিবর্তন ভারতকে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনে সহায়তা করেছিল। তিনি ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস)-এ একজন প্রশাসক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। অন্যান্য দলের পাশাপাশি কৃষিবিজ্ঞানী স্বামীনাথনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে সিপিএমও।

Advertisment

কৃষিক্ষেত্রে সাফল্য

বরাবরই কৃষিতে তাঁর আগ্রহ ছিল। তাই পুলিশ সার্ভিসের চাকরি থেকে তিনি শীঘ্রই কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে ঝুঁকে পড়েন। ভারতের পাশাপাশি তিনি বিদেশেরও বেশ কয়েকটি কৃষি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম হল, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কাউন্সিলের স্বাধীন চেয়ারম্যান (১৯৮১-৮৫), প্রকৃতি এবং প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের সভাপতি (১৯৮৪-৯০), ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (ইন্ডিয়া)-এর প্রেসিডেন্ট (১৯৮৯-৯৬) এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর মহাপরিচালক।

বাংলার দুর্ভিক্ষ

এমএস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রকাশিত এক সাক্ষাত্কারে স্বামীনাথন জানিয়েছেন যে তিনি কীভাবে কৃষির দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন চিকিৎসক। পরিবারের আশা ছিল, স্বামীনাথন নিজেও চিকিৎসক হবেন। স্বামীনাথন বলেছেন, 'সেই সময়, ১৯৪২ সালে গান্ধীজি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। আর, ১৯৪২-৪৩ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আমরা অনেকেই, যাঁরা সেই সময়ে ছাত্র ছিলাম, খুবই আদর্শবাদী ছিলাম। নিজেদেরকে প্রশ্ন করেছিলাম, স্বাধীন ভারতের জন্য আমরা কী করতে পারি? তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বাংলার দুর্ভিক্ষের কারণে কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করব। আমি আমার ক্ষেত্র পরিবর্তন করে মেডিকেল কলেজে না-গিয়ে কোয়েম্বাটুরের কৃষি কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম।

আরও পড়ুন- কানাডা-ভারত টানাপোড়েন! মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রুডোদের গালিগালাজ শ্রীলঙ্কার, কিন্তু কেন?

বাংলার দুর্ভিক্ষের প্রভাব

সেই সময় বাংলার দুর্ভিক্ষে ২০ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। দুর্ভিক্ষটি ছিল মানবসৃষ্ট। বলতে গেলে, সেই সময়ে ব্রিটিশ নীতির ফল। এই নীতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে গ্রহণ করা হয়েছিল। যুদ্ধের জন্যই ব্রিটিশ সরকার তার উপনিবেশগুলো থেকে সৈন্যদের জন্য শস্য সরবরাহ করা শুরু করেছিল। স্বামীনাথন বলেন, 'তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিই যে কৃষি নিয়ে গবেষণা করব। তা-ও জেনেটিক্স এবং প্রজননে। এর সহজ কারণ হল যে ফসলের একটি ভালো জাত কৃষিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। বৃহৎ সংখ্যক কৃষক, ছোটই হোক বা বড়, ভালো জাতের ফসল থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারে। আমি সেই সব কারণে জেনেটিক্স বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিই।'

West Bengal agriculture British CPIM science IPS officer
Advertisment