Bomb blast: আইডি বিস্ফোরণ! শুনলেই কেঁপে ওঠেন আমজনতা, কিন্তু কী এই বিস্ফোরক?
IED Blast: অতীতে আইইডি ব্যবহার করার কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণের অন্যতম হল- ১৯৯৩ সালের মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, ২০০৮ সালের জয়পুর বিস্ফোরণ, ২০০৬ সালের জামা মসজিদ বোমা হামলা, ২০১৩ সালের বোধগয়া বোমা হামলা।
Five persons injured-Bengaluru hotel fire: রামেশ্বরম ক্যাফে, সেখানে সন্দেহজনক আইইডি বিস্ফোরণের পরে আগুন লেগে যায়। ঘটনায় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। (পিটিআই ছবি)
Rameshwaram Cafe: শুক্রবার (১ মার্চ) বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ড এলাকায় জমজমাট রামেশ্বরম ক্যাফেতে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই বিস্ফোরণে কমপক্ষে নয় জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ব্যবহার করা হয়েছে বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। এই ঘটনার সঙ্গে গ্যাস লিক করার কোনও ব্যাপারই নেই বলে জানিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেছেন, প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে, 'এক ব্যক্তিকে ক্যাফেতে একটি ব্যাগ রাখতে দেখা গেছে। এটি একটি ইম্প্রোভাইজড। কোনও উচ্চ তীব্রতার বিস্ফোরক নয়।'
Advertisment
কী এই আইইডি? আইইডি হল বাড়িতে তৈরি বোমা। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির একটি ফ্যাক্টশিট অনুসারে, 'যেহেতু এগুলো ইম্প্রোভাইজড করা হয়েছে, আইইডিগুলোর আকার বিভিন্ন হতে পারে। সেটা ছোট পাইপ বোমা হতে পারে। অথবা, এমন অত্যাধুনিক ডিভাইস হতে পারে, যা ব্যাপক ক্ষতি এবং প্রাণহানি ঘটাতে সক্ষম।' আইইডিগুলো যানবাহনেও ব্যবহার করা যেতে পারে। একজন ব্যক্তি চাইলে তা বহন করতে পারে। কোথাও লাগিয়ে রাখতে পারে। ছুড়তে পারে। প্যাকেটে ভরে বিতরণ করতে পারে। অথবা, রাস্তার ধারে লুকিয়েও রাখতে পারে। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আইইডি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, তাকে সেই সময় আইইডি বলা হত না। আইইডি শব্দের ব্যবহার শুরু হয় ২০০৩ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের সময়। ইরাক আক্রমণের সময় এই ধরনের বোমাগুলো সাধারণত মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল।
সারণি ১: বিস্ফোরকের উদাহরণ। (সূত্র: ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি)
Advertisment
আইইডির উপাদান প্রতিটি আইইডিতে কয়েকটি উপাদান থাকে। বোমা প্রস্তুতকারকের কাছে থাকা সম্পদের ওপর নির্ভর করে এই উপাদান বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। এই উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে- একটি সূচনাকারী বা একটি ট্রিগারিং মেকানিজম (যা বিস্ফোরণ বন্ধ রাখে), একটি সুইচ (যা বিস্ফোরককে অস্ত্র জোগায়), একটি প্রধান চার্জ (যা বিস্ফোরণ ঘটায়), একটি শক্তির উত্স (যেহেতু বেশিরভাগ আইইডিতে একটি বৈদ্যুতিক বিষয় থাকে, তাই একটি ইলেকট্রনিক্স শক্তি উৎসের প্রয়োজন আইইডিতে হয়)। এছাড়াও থাকে একটি ধারক। উপরন্তু, আইইডিগুলোতে থাকে অতিরিক্ত উপকরণ বা 'বর্ধিতকরণ'যোগ্য দ্রব্যাদি- যেমন পেরেক, কাচ বা ধাতব টুকরো। যা দিয়ে আইইডিগুলো প্যাক করা হতে পারে। এগুলো বিস্ফোরণের জেরে হওয়া ক্ষতির পরিমাণ বাড়ানোর জন্য রাখা থাকে। এই সব দ্রব্যাদির মধ্যে রয়েছে বিষাক্ত রাসায়নিক, তেজস্ক্রিয়র মত বিপজ্জনক পদার্থও। একটি আইইডি প্যাক করা ক্ষয়প্রাপ্ত ইউরেনিয়ামকে চলতি ভাষায় বলা হয়, 'ডার্টি বোমা'। আইইডি তৈরিতে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ উপকরণের মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ইউরিয়া নাইট্রেট, গানপাউডার এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের মত সার। বাণিজ্যিক বিমানে যাত্রীদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি তরল বহন করার অনুমতি না-দেওয়ার কারণ হল, কিছু সাধারণভাবে উপলব্ধ তরল মিশ্রিত করে আইইডি তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সারণি ২: আকার অনুসারে আইইডি দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি। (সূত্র: ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি)
আইইডির জেরে কী ক্ষতি হয়? আইইডিগুলো কেবল খুন-জখমের জন্যই ব্যবহার করা হয় না। এগুলো হামেশাই, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতেও ব্যবহার করা হয়। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অনুসারে, 'আকার, নির্মাণ এবং স্থাপন বা বসানোর ওপর ভিত্তি করে আইইডি দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ভর করে। যার দ্বারা স্থির হয়, এটি উচ্চ বিস্ফোরক বা প্রপেলান্ট যুক্ত কি না। ছোট বোমাগুলি লুকানো, বহন করা এবং স্থাপন করা বা বসানো বা লাগানো সহজ। কিন্তু, সেগুলো সাধারণত বড় বোমার তুলনায় অনেক কম ক্ষতিকারক। ছোট বোমাগুলো সাধারণত যানবাহনে ব্যবহার করা হয়। অতীতে আইইডি ব্যবহার করার কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণের অন্যতম হল- ১৯৯৩ সালের মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, ২০০৮ সালের জয়পুর বিস্ফোরণ, ২০০৬ সালের জামা মসজিদ বোমা হামলা, ২০১৩ সালের বোধগয়া বোমা হামলা। ভারতে আইইডিগুলো সাধারণত মাওবাদী এবং কাশ্মীরি জঙ্গিরা ব্যবহার করে থাকে।