প্রাণী, গাছপালা, ছত্রাক— এই জীববৈচিত্র্যে আছে রাসায়নিকের ভাণ্ডার। যা ম্যালেরিয়া থেকে ক্যানসার পর্যন্ত নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই এই জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি জীবজগতের বিভিন্ন প্রজাতিকে বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাচ্ছে। ওষুধ তৈরির আশাকে প্রতারণা করছে।
রঙিন ব্যাঙ
যেমন উজ্জ্বল লাল, হলুদ এবং নীল- বিষাক্ত ডার্ট ব্যাঙের রং কৌতূহলী শিকারিদের যেন একটি কঠোর সতর্কবাণী শোনায়। যা হল, 'আমাকে খাও এবং আপনিও দুঃখ পাবেন।'। উভচর প্রাণী এই ব্যাঙ অত্যন্ত বিষাক্ত। যখন কেউ তাকে শিকারের চেষ্টা করে, খায়, তখন এই সব ব্যাঙের ত্বকের মধ্যে থাকা রাসায়নিকগুলো শিকারির শরীরে খিঁচুনি, পেশি সংকোচন ঘটায়। এমনকী, এই ব্যাঙের বিষ শিকারির মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা আশাবাদী
মানুষের কাছে অবশ্য এই নানা রঙের ব্যাঙ অনেক সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কারণ, ওই ব্যাঙের বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরি হতে পারে। অ্যান্টোবায়োটিক তৈরিতে সহায়তা করে। যার সাহায্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সহজ হয়। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজে মিলনার-গুলান্ড বলেন, 'বিষাক্ত ডার্ট ব্যাঙের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা যৌগ রয়েছে, যা ভালো অ্যানাস্থেটিক। তাদের ত্বকে ভালো অ্যান্টিবায়োটিক আছে যা আমরা এখন ব্যবহার করছি। তবে, এখনও অনেক কিছু রয়েছে যা আবিষ্কারও করা হয়নি। বাণিজ্যিকীকরণও করা হয়নি।'
আরও পড়ুন- অনাথ ও দিব্যাঙ্গদের জন্য হিমাচলে বিল পাস, কী আছে এই বিলে?
অনেক প্রয়োজনীয় ওষুধের ভিত্তি
ব্যাঙ, গাছপালা এবং অন্যান্য অনেক প্রজাতির থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক যৌগ আমাদের অনেক ওষুধের চাহিদা মেটায়। যেমন, ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্যাক্লিট্যাক্সেল ওষুধ পাওয়া যায় প্যাসিফিক ইয়ু গাছের ছাল থেকে। আবার, গুরুতর ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত জিকোনোটাইড ওষুধ পাওয়া যায় শঙ্কু শামুক থেকে। আবার রাষ্ট্রসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস (আইপিবিইএস) অনুযায়ী ক্যানসারের প্রায় ৭০% ওষুধ জীববৈচিত্র্যের ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়।