BJP result loksabha election 2024: খোদ বারাণসীতেই এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জয়ের মার্জিন কমেছে। ২০১৯ সালে ছিল ৪.৭৯ লক্ষ। সেটাই এবার কমে হয়েছে ১.৫২ লক্ষ। খাসতালুক যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে এবার বিজেপির ভোট ব্যাপকহারে কমেছে।
উত্তরপ্রদেশ যার, দিল্লি তাঁর
ভারতীয় রাজনীতিতে প্রচলিত প্রবাদই হল- উত্তরপ্রদেশ যার, দিল্লির কুর্সিও তাঁর। সেই উত্তরপ্রদেশই এবার বিজেপিকে তার, 'অব কি বার, ৪০০ পার' লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। যার পিছনে উঠে আসছে নানা কারণ। বিশ্লেষণে জানা গিয়েছে যে, স্থানীয় সংযোগ থেকে দল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অগ্নিবীর ইস্যু বড় কাজ করেছে। সঠিক ব্যক্তিদের টিকিট দেওয়া হয়নি। জাত সমীকরণ ভোটে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও বিজেপির উত্তরপ্রদেশ হারানোর নানা কারণ রয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে এবার বিজেপির ফলাফল
এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৮০টি আসনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে মাত্র ৩৩টি পেয়েছে বিজেপি। আর, এনডিএ শরিকদের ধরলে সেই আসনসংখ্যা হল ৩৬। একা সমাজবাদী পার্টিই পেয়েছে ৩৭ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৬টি আসন। বারাণসীতে দ্বিতীয় হয়েছে কংগ্রেস। মোদীর ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেত্রী তথা মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি অমেঠিতে হেরে গেছেন। সবমিলিয়ে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে ৫টি আসন বেশি পেয়েছে। সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ৩২টি বেশি আসন। আর, বিজেপি ২৯টি আসন হারিয়েছে।
অযোধ্যায় বিজেপির ফলাফল
যেখানে রামমন্দির, অর্থাৎ অযোধ্যা, সেই ফৈজাবাদ লোকসভা কেন্দ্রেও বিজেপি হেরেছে। বিজেপি প্রার্থী লাল্লু সিং পেয়েছেন ৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ৭২২ ভোট। সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ প্রসাদ পেয়েছেন ৫ লক্ষ ৫৪ হাজার ২৮৯ ভোট। অর্থাৎ, সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী বিজেপি প্রার্থীর চেয়ে ফৈজাবাদে ৫৪ হাজার ৫৬৭ ভোট বেশি পেয়েছেন। রামমন্দির বা রামলালার আবেগও এবার বিজেপিকে উত্তরপ্রদেশে জেতাতে পারেনি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৪ এবং ২০১৯-এর ফলাফল
অথচ, এই উত্তরপ্রদেশই ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতায় উত্থানকে ত্বরান্বিত করেছিল। ৭১ জন বিজেপি সাংসদকে লোকসভায় পাঠিয়েছিল। ২০১৯ সালে ৬২ জন বিজেপি সাংসদ এবং শরিক আপনা দল (এস)-এর দুজনকে নির্বাচিত করে লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথ সুগম করেছিল।
আরও পড়ুন- লোকসভা ভোটই কি ঠিক করে দেয় ভোগের বহর, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
সমাজবাদী পার্টির সাফল্যের কারণ
এবারের লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সাফল্যের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, জাতপাতের অঙ্ক কাজ করেছে। ৬২ প্রার্থীর তালিকায় মাত্র পাঁচ জন যাদব ছিলেন। পাশাপাশি, ১০ জন কুর্মি এবং ৬ জন কুশওয়াহা-মৌর্য-শাক্য-সাইনিদেরও টিকিট দিয়েছেন অখিলেশ। এই জাতি বেশ কয়েক বছর ধরে বিজেপির কাছের বলে পরিচিত ছিল। পাশাপাশি, ভোটের সময় শ্যামলাল পাল নামে একজন ওবিসিকে উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন অখিলেশ। যা সমাজবাদীদের পক্ষে গিয়েছে। এছাড়াও মিরাট এবং ফৈজাবাদ (অযোধ্যা) থেকেও দলিতদের প্রার্থী করা হয়েছিল। যা নির্বাচনে ভালো প্রভাব ফেলেছে বলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।