কোভিড ভাইরাসের হানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে ফুসফুস, মস্তিষ্কও। এরই মধ্যে শরীরে ঢুকে পড়ছে এক ধরনের ছত্রাক। সম্প্রতি দিল্লির একটি হাসপাতালে কিছু করোনা রোগীর মধ্যে মারাত্মক ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ছত্রাকের সংক্রমণের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকরা দাবি করেছেন যে, রোগীদের করোনার কারণে এই সংক্রমণ ঘটছে।
কী এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস?
বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যার নাম- ‘মিউকোরমাইকোসিস’ (mucormycosis)। চলতি ভাষায় এটি ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ (Black fungus) নামে পরিচিত। বিরল এই ছত্রাকের সংক্রমণ খুবই মারাত্মক যা নাক, চোখ এবং কখনও কখনও মস্তিষ্কেও আক্রমণ করে। এই ছত্রাক ইনফেকশন থেকে অন্ধত্ব, জটিল অসুখ এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কী কী উপসর্গ থাকলে বোঝা যাবে?
গুরুতর লক্ষণগুলি হল- বন্ধ নাক, জল পড়া নাক দিয়ে, গালে হাড়ে ব্যথা, মুখে ফোলাভাব, শুকনো কাশি, দাঁতে ব্যথা, ফুসকুড়ি, চোখে ঝাপসা দেখা, বুকে ব্যাথা। মৃদু লক্ষণ চোখ এবং নাকের চারপাশে ব্যথা এবং লালভাব, জ্বর, মাথা ব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমি।
মিউকোরমাইকোসিস কী ধরনের সংক্রমণ?
মিউকোরমাইকোসিস খুবই বিরল একটা সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও সবজিতে। এটা মাটি এবং বাতাসে এমনিতেই থাকে। এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা এইচআইভি/এইডস যাদের আছে, কিংবা কোন রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম এই মিউকোর থেকে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তবে চিকিৎসকদের কথায় মিউকোরমাইকোসিস থেকে মৃত্যুর আশংকা ৫০%। তাদের ধারণা স্টেরয়েডের ব্যবহার থেকে এই সংক্রমণ শুরু হতে পারে।
কোভিডের ক্ষেত্রে রোগীদের কেন এই রোগ হচ্ছে?
কোভিড-১৯ গুরুতরভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় তাদের জীবন বাঁচাতে এখন স্টেরয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে স্টেরয়েড ওষুধ দিতেই হচ্ছে। স্টেরয়েডের ব্যবহার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। ফলে সেক্ষেত্রে এই রোগ চলে আসছে অজান্তেই।
এই ছত্রাকে আক্রান্ত হলে কী কী করবেন?
- ধুলোবালি রয়েছে এমন জায়গায় গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন
- চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিফাংগাল বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ শুরু করা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
- সঠিক পরিমাণে স্টেরয়েডের ব্যবহার
- উপসর্গ দেখলেই সাবধান হতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন