Advertisment

রক্ত পরীক্ষাতেই ধরা পড়বে ক্যানসারের উপস্থিতি, আটকানো সম্ভব হবে মৃত্যুও

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাথমিকভাবে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব না হওয়ায় মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই প্রতিকূলতায় এবার সাফল্য পেলেন একদল বিজ্ঞানী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ক্যানসার সনাক্ত করা যাবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে?

করোনা ভাইরাসের আগে যে রোগ সকলের কাছে একদিকে পরিচিত অন্যদিকে মারণ হয়ে উঠেছিল তা ক্যানসার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাথমিকভাবে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব না হওয়ায় মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই প্রতিকূলতায় এবার সাফল্য পেলেন একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি নেচার কমিউকেশন রিসার্চ জানার্লে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সেখানে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকটি ক্যানসারকে রক্ত পরীক্ষার (blood test) মাধ্যমে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে। তাঁদের এও মত যে এর ফলে ক্যানসারকে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা সম্ভব এবং মৃত্যুও আটকানো যেতে পারে।

Advertisment

কী জানা যাচ্ছে এই পরীক্ষা থেকে?

এই পরীক্ষাটি হল তাইঝাউ লনগিচ্যুডিনাল স্টাডি (Taizhou Longitudinal Study TZL)। যেখানে ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল অবধি সংরক্ষণ করা ১ লক্ষ ২৩ হাজার ১১৫টি নমুনার ওপর পরীক্ষাটি করা হয়। প্যানসির (PanSeer) নামক একধরনের নন ইনভ্যাসিব রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাটি মূলত করা হয় টিউমার ডিএনএ মিথাইলেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। দেখা গিয়েছে ৫৭৫টি নমুনায় পাঁচটি সাধারণ ক্যানসার (পাকস্থলী, ইসোফেগাস, কোলন, ফুসফুস এবং লিভার)-কে এই রক্ত পরীক্ষায় সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এই সবকটি নমুনায় কিন্তু প্রথমে ক্যানসারের উপসর্গ ছিল না। কিন্তু চার বছর ধরে পরীক্ষায় অবশেষে দেখা গিয়েছে এই রক্তের মধ্যে ক্যানসারের উপাদান রয়েছে। যা পরবর্তীতে মারণ আকার ধারণ করার ক্ষমতা রাখে।

আরও পড়ুন, দেহে তৈরি হচ্ছে করোনার অ্যান্টিবডি! ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নষ্ট হতে পারে, ইঙ্গিত বিজ্ঞানীদের

এই টেস্ট আসলে কীভাবে কাজ করছে?

প্যানসির পরীক্ষার মাধ্যমে সেই সব ব্যক্তির দেহে ক্যানসার নির্ণয় করা সম্ভব যাদের দেহে ম্যালিগনেন্সি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় রোগী উপসর্গবিহীন। কিন্তু ক্যানসারবিহীন নয় তা বুঝতে পারা সম্ভব হত না। এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ রোগী তৃতীয় নয়তো ক্যানসারের চতুর্থ ধাপে পৌঁছে যেত। চিকিৎসকদের কাছে সেই পর্যায় থেকে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর হয় না। এই পরীক্ষার মাধ্যমে কোনও রোগীর দেহে পরবর্তীতে ক্যানসার হতে পারে কি না তা বুঝতে পারা সম্ভব হচ্ছে।

যে সকল রোগী এই পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট দিচ্ছে তাঁদের পরবর্তীতে রিফ্লেক্স ব্লাড টেস্ট এবং অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাতে কোন কোষ ক্যানসার আক্রান্ত হচ্ছে তা সহজেই পরিলক্ষিত হয়। এরপর প্যাথোলজিকাল পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসারের উপস্থিতিতে সিলমোহর দেওয়া হচ্ছে। তবে এই টেস্টের মাধ্যমে কোন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে রোগী তা বুঝতে পারা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন, ভাইরাসে ‘করোনা’ নেই! বিশ্বকে অবাক করে নয়া রূপ নিল কোভিড

এই পরীক্ষার সীমাবদ্ধতাগুলি কী কী?

নয়া আবিষ্কৃত টেস্টে আধুনিকভাবে প্লাজমা সংরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাই নমুনা যেকোনও সময় দূষিত (কন্টামিনেটেড) হতেই পারে। যতটা পরিমাণে নমুনার প্রয়োজন তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ১ মিলিলিটার নমুনা মিলছে কারণ পালজমা নেওয়ার ক্ষেত্রে এটাই প্রোটোকল। এর ফলে যথাযথভাবে ক্যানসারের উপস্থিতি নির্ণয়ে সমস্যা থেকে যাচ্ছে।

এই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কি আদৌ ক্যানসার নিরাময় সম্ভব?

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যে স্টাডি প্রকাশিত হয়েছিল রক্ত পরীক্ষা এবং ইমেজিং টেস্টের মাধ্যমে মহিলাদের শরীরে প্রাথমিভাবে টিউমার হতে পারে কি না তা বুঝতে পারা সম্ভব হচ্ছে। সাফল্য এখানেই যে সেই সকল মহিলাদের পরিবারের কারোর ক্যানসার নেই, উপসর্গও নেই। গবেষকরা দেখেন রক্ত পরীক্ষা করলে এমন কিছু নমুনা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে যারা রক্ত থেকে পুষ্টি টেনে নিচ্ছে। যা টিউমারের একটি প্রধান লক্ষণ। অতএব এদের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে টিউমার হতে পারে তা বোঝা সম্ভব। এই পদ্ধতিকে 'লিক্যুইড বায়োপসি'ও বলা হয়ে থাকে।

তাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম থেকেই শরীরে ক্যানসারের উপস্থিতি টের পাওয়া সম্ভব এবং সেই মতো ট্রিটমেন্টও করা যায়। অনেকক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে প্রাথমিকধাপ থেকে ক্যানসারের চিকিৎসার ফলে রোগীকে এই মারণ ব্যাধির হাত থেকে সাড়িয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

cancer
Advertisment