Advertisment

Explained: ৮৫-তেও অনন্যা, 'ফালকে' বিজেতা! ওয়াহিদা রহমানের সাফল্যের শুরুটা কিন্তু বলিউডে হয়নি

দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অভিনয়ের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Waheeda Rehman

২০১১ সালে মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রবীণ অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমান। (পিটিআই ছবি)

প্রবীণ বলিউড অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমান ২০২১ সালের দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হলেন। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক (আইএন্ডবি), 'ভারতীয় চলচ্চিত্রের বৃদ্ধি ও বিকাশে অসামান্য অবদানের জন্য' এই পুরস্কার দেয়। এই পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সময় হাতে তুলে দেওয়া হবে। ২০২১ সালের পুরস্কার ৮৫ বছরের অভিনেত্রীকে এবছর দেওয়া হচ্ছে, তার কারণ কোভিড-১৯ অতিমারি। যে কারণে, পুরস্কার ঘোষণায় বিলম্ব হল।

Advertisment

কেন্দ্রীয় সরকারের বার্তা
সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ বার্তায় দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য রহমানকে বেছে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি ওয়াহিদা রহমানের এই পুরস্কার পাওয়াকে সংসদে সম্প্রতি পাস হওয়া মহিলা সংরক্ষণ বিলের সঙ্গে তুলনা টেনে নারীশক্তির জয়জয়কার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, 'তাঁর আজীবন কৃতিত্বের জন্য এই পুরস্কার। এই পুরস্কার একজন নেতৃস্থানীয় মহিলার প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধা। ভারতীয় সিনেমার জন্য নিজের জীবন তিনি উৎসর্গ করেছেন। সমাজসেবা এবং বৃহত্তর কল্যাণে তিনি অবদান রেখেছেন।' দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পাওয়ায় ওয়াহিদা রহমানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এক্স বার্তায় বলেছেন, 'ভারতীয় সিনেমায় তাঁর (ওয়াহিদা রহমান) যাত্রাপথ একটি অমোঘ ছাপ রেখে গেছে। তাঁর প্রতিভা আসলে উত্সর্গ এবং করুণার এক আলোকবর্তিকা। তিনি আমাদের সিনেমা শিল্পের ঐতিহ্যকে মূর্ত করে তুলেছেন।'

publive-image

ওয়াহিদা রহমান কে?
অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমানের জন্ম ১৯৩৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ১৯৫৫ সাল থেকে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। তেলুগু সামাজিক নাটক রোজুলু মারায়িতে নৃত্যশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ। ওয়াহিদা রহমানের সঙ্গে তাঁর জীবনী নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লেখিকা নাসরিন মুন্নি কবির লিখেছেন যে তাঁর গান 'এরুভাকো সাগরো রান্নো চিন্নান্না' ব্যাপক খ্যাতি পেয়েছিল। আর, ওয়াহিদা রহমান শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্র তারকা আক্কিনেনি নাগেশ্বরা রাও (এএনআর) এবং সওকার জানকির মত খ্যাতি পেয়েছিলেন। রহমান কবিরকে এই প্রসঙ্গে বলেছেন, 'ছবিটি হিট হয়েছিল। শিল্পীদেরকে ছবির সাফল্য উদযাপন করতে অন্ধ্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সফর শেষে আমরা হায়দ্রাবাদে পৌঁছই। সেখানেই আমি গুরুদত্তজির সঙ্গে প্রথম দেখা করি।' তিনি যোগ করেন, 'রোজুলু মারায়ি মানে দিন বদলে গেছে। এই নামটা আমার জীবনের মুহূর্তটিকে সঠিকভাবে বর্ণনা করেছিল।'

publive-image

গুরু দত্তের সঙ্গে কাজ
সেই সময়ের শীর্ষস্থানীয় হিন্দি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব গুরু দত্তের সাথে তাঁর সাক্ষাতের পরে, ওয়াহিদা রহমান বম্বেতে আসেন। রাজ খোসলার সিআইডি (১৯৫৬)-তে অভিনয় করেন। যেখানে তিনি ম্যাটিনি আইডল দেব আনন্দের বিপরীতে 'ভ্যাম্প'-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছবিটি সেবছর সর্বোচ্চ আয় করা চলচ্চিত্রের স্বীকৃতি পায়। তাঁর পরবর্তী চলচ্চিত্র পিয়াসা (১৯৫৭)-ও গুরু দত্ত পরিচালিত। সেখানে তাঁকে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। একজন গণিকার চরিত্রে তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছিল।

আরও পড়ুন- সবুজ বিপ্লবের জনক! কীভাবে স্বামীনাথনের জীবন বদলে দিয়েছিল বাংলার দুর্ভিক্ষ?

বম্বে টকিজে দাপিয়ে বেড়ানো
এরপর ১৯৫০ এবং ৬০-এর দশকে ওয়াহিদা রহমান সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রীদের একজন হয়ে ওঠেন। এই সময়টিকে 'হিন্দি সিনেমার স্বর্ণযুগ' বলা হয়। ১৯৭১ সালে তিনি সুনীল দত্ত পরিচালিত রেশমা অর শেরায় অভিনয় করেছিলেন। এটি ছিল একটি প্রেমের গল্প। এই সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। এরপর গাইড (১৯৬৫) এবং নীল কমল (১৯৬৮)-এর জন্য তিনি বেশ কয়েকবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে মনোনীত হন। তার প্রশংসিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলি হল- কাগজ কে ফুল (১৯৫৯), সাহেব বিবি অউর গুলাম (১৯৬২), সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অভিযান (১৯৬২), তিসরি কসম (১৯৬৬), রাম অউর শ্যাম (১৯৬৭), খামোশি (১৯৬৯), কখনও কখনও (১৯৭৬), নামকিন (১৯৮২), লামহে (১৯৯১), ১৫ পার্ক অ্যাভিনিউ (২০০৫), রং দে বাসন্তী (২০০৬) এবং বিশ্বরূপম টু (২০১৮)।

bollywood Waheeda Rehman Dada saheb Falke Award
Advertisment