মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বিশাল অংশে ঝড় আছড়ে পড়েছে। এটা কোনও সাধারণ ঝড় নয়। এই ঝড়কে আবহাওয়াবিদরা 'বম্ব সাইক্লোন' বলছেন। এই ধরনের ঝড় যে একেবারেই বিরল, তা কিন্তু নয়। কিন্তু, এর বিশেষত্ব যে এই ঝড় প্রচণ্ড শক্তিশালী। এই ঝড়ের সময় ঝোড়ো বাতাস বয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকায় ভারী তুষারপাত ঘটে। সঙ্গে বৃষ্টি চলে। এই ধরনের পরিবেশ যখন তৈরি হয়, তখন তাকে 'বম্ব সাইক্লোন' বা সাইক্লোন বোমা বলা যেতে পারে। কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, নিম্নচাপের বায়ু একটি উচ্চচাপের ভরের সঙ্গে মিলিত হয়ে এই ঝড় তৈরি করে।
'বম্ব সাইক্লোন' কাকে বলে?
বায়ু উচ্চচাপের অংশ থেকে নিম্নে প্রবাহিত হয়। সেই সময় তার গতি বেশি থাকে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বায়ু তখনই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, যখন নিম্নচাপের ভরে তার চাপ দ্রুতহারে কমে যায়। ২৪ ঘণ্টায় ২৪ মিলিবার পর্যন্ত সেটা কমে যেতে পারে। এই সময় বায়ুর দুটি ভরের মধ্যে চাপের পার্থক্য দ্রুতহারে বাড়ে। যা বাতাসকে রীতিমতো প্রবল বা শক্তিশালী করে তোলে। বায়ুর গতিকে এইভাবে তীব্র করে তোলার প্রক্রিয়ার নাম বোমোজেনেসিস। সোজা কথায় বললে, মধ্য-অক্ষাংশে ঝড়ের কেন্দ্রভাগে বায়ুর চাপ প্রতিঘণ্টায় এক মিলিবার কমলে তাকে 'বম্ব সাইক্লোন' বলে।
কী ক্ষতি করেছে এই 'বম্ব সাইক্লোন'?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে বম্ব সাইক্লোনের আঘাতে অন্ততপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে তুষারপাত, ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গিয়েছে। যার জেরে বহু জায়গায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের থেকে ৪৫ ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছে। আবহাওয়াবিদদের চিন্তার আরও বড় কারণ, ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০ কোটি বাসিন্দা এই 'বম্ব সাইক্লোন'-এর কবলে পড়েছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে গিয়েছে। বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। অসংখ্য বিমান চলাচল বাতিল হয়েছে।
আরও পড়ুন- হঠাৎ অসুস্থ নির্মলা সীতারমণ, ভর্তি করা হল এইমসে
স্বাভাবিক ক্ষেত্রে বায়ুর চাপ
স্বাভাবিক ক্ষেত্রে বায়ুর চাপ আর বম্ব সাইক্লোনের ক্ষেত্রে বায়ুর চাপে পার্থক্য থাকে। সাধারণ ক্ষেত্রে বায়ুর চাপ থাকে ১,০৪৭ মিলিবার। কিন্তু, আমেরিকার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বায়ুর চাপ ১,০০৩ থেকে ৯৬২ মিলিবারে নেমে গিয়েছে। যাকে স্রেফ 'বম্ব সাইক্লোন'-এর সঙ্গেই তুলনা করা যায়। আবহাওয়াবিদরা সেই কথা মাথায় রেখেই বলছেন, বায়ুর চাপ ৩৫ মিলিবার কমলেও তা 'বম্ব সাইক্লোন' তৈরি করতে পারে।
Read full story in English