Case before Supreme Court: সরকার কি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি পুনরায় বিতরণ করতে পারে? এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার ১৯৮৬ সালে, 'মহারাষ্ট্র হাউসিং অ্যান্ড এরিয়া ডেভলপমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৭৬ (এমএইচএডিএ)' সংশোধন করেছিল। সেই সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মুম্বইয়ের সম্পত্তি করদাতারা। সেই মামলাই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে। ২৪ এপ্রিল, বুধবার এই মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে। সংবিধানের ৩৯ (বি) ধারায় বিষয়টির উল্লেখ আছে। সেই অনুযায়ী মামলাটা চলবে।
সংবিধানের চতুর্থ অংশে, 'রাজ্য নীতিমালার নির্দেশিকা নীতি (ডিপিএসপি), অনুচ্ছেদ ৩৯ (খ)' অনুযায়ী, নাগরিকদের বৈষয়িক সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করা, তার রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং সেই সম্পত্তির সুষ্ঠু বণ্টনের ব্যাপারে আদর্শ নীতিমালা তৈরিতে সরকার বাধ্য। সরকারের এই নীতিমালা তার দৃষ্টিভঙ্গিকে স্পষ্ট করে। কিন্তু, সেটা সম্পূর্ণ সরকারের নীতি। আদালতের মাধ্যমে প্রয়োগযোগ্য নয়।
১৯৭৭ সাল থেকে শীর্ষ আদালত বেশ কয়েকবার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (বি)-এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেমন, কর্ণাটক রাজ্য বনাম শ্রীরঙ্গনাথ রেড্ডি (১৯৭৭) মামলায় ব্যাখ্যা করেছে। সেই মামলায় সাত বিচারপতির বেঞ্চ একমত হতে পারেনি। তবে ৪-৩ অনুপাতে বিচারপতিরা জানিয়েছিলেন যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি কখনও সামাজিক সম্পত্তির আওতায় পড়ে না। যদিও বিচারপতি কৃষ্ণ আইয়ার মামলাটিতে ভিন্নমত প্রকাশ করেছিলেন।
বিচারপতি আইয়ার বলেছিলেন যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তিও নাগরিক সমাজের সমষ্টিগত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তিনি বলেছিলেন যে, বৈষয়িক জগতে ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিস বস্তুগত সম্পদ। ব্যক্তি সমাজেরই অংশ। তাই তাঁর সম্পদও সমাজের অংশ। সংবিধানের ৩৯ (বি) ধারা থেকে ব্যক্তিগত মালিকানার বিষয়টি বাদ দিলে সমাজতান্ত্রিক উপায়ে সম্পদ বণ্টনের বিষয়টিই পড়ে থাকে।
সংবিধানের ৩৯ (বি) ধারা অনুযায়ী, এরপর ১৯৮৩ সালে সঞ্জীব কোক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বনাম ভারত কোকিং কোল মামলারও বিচার হয়েছিল। সেই মামলায় পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ, কয়লাখনি এবং কোক ওভেন প্ল্যান্টকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে মেনে নিয়েছিল। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনকেও স্বীকৃতি দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। যা কার্যত বিচারপতি আইয়ারের ভাবনারই সমার্থক ছিল।
আরও পড়ুন- সত্যি কি দেশের জন্য নিজের সোনার গয়না উৎসর্গ করেছিলেন ইন্দিরা? জানুন আসল কাহিনী
আদালতের সেই নির্দেশ কার্যত ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পদকে জনগণের মালিকানাধীন সম্পদে পরিণত হওয়ার পথ পরিষ্কার করেছিল। ১৯৮৩ সালের সেই মামলায় পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ একবারের জন্যও বলেনি যে বিচারপতি আইয়ারের মতামত সংখ্যালঘু হিসেবে ধরে নিয়ে অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।