মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) কেরল বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে 'একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) চাপানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের চেষ্টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।' ইতিমধ্যে, বেশ কয়েকটি রাজ্য এই প্রস্তাবে মতামত দিয়েছে। কিছু রাজ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করেছে। যদিও কিছু রাজ্য পালটা আইন প্রণয়নের জন্য কমিটি তৈরি করেছে। পাশাপাশি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, 'এক জাতি এক আইন'-এর সমর্থক। তবে, রাজ্যগুলো এই বিষয়ে আইন করতে পারে।
কেরল প্রস্তাবে কী বলেছে?
কেরল বিধানসভার প্রস্তাব বলছে, মোদী সরকারের প্রস্তাবিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতিকে আঘাত করবে। এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথাও বলা হয়েছে। কেন্দ্র যদি রাজ্যগুলোর সঙ্গে পরামর্শ না-করে কোনও বিতর্কিত ইস্যুতে একতরফা পদক্ষেপ নেয়, তখন সেটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙার আওতায় পড়ে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, 'সংবিধান শুধুমাত্র তার নির্দেশমূলক নীতিতে দেওয়ানি বিধিকে রেখেছে। নির্দেশমূলক নীতির বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক নয়। আদালত মৌলিক অধিকার প্রয়োগের আদেশ দিতে পারে। কিন্তু, সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদের নির্দেশমূলক নীতিগুলো আদালত দ্বারাও প্রয়োগ করা যাবে না।'
কেন্দ্র কি একতরফা আইন করতে পারে?
ব্যক্তিগত আইন সংবিধানের সপ্তম তফসিলের আওতায় পড়ে। কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয়গুলো যেমন সংসদে আইন করা যায়, রাজ্যের তালিকার বিষয়গুলো নিয়ে তেমনই রাজ্যেও আইন করা হয়ে থাকে। সংবিধানের ১৬২ অনুচ্ছেদ রাজ্য সরকারগুলোকে রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দিয়েছে। সংবিধানের ১৬২ অনুচ্ছেদে লেখা আছে, 'সংবিধানের বিধান সাপেক্ষে রাজ্যের নির্বাহী ক্ষমতার ব্যাপ্তি বা কোনো রাজ্যের নির্বাহী ক্ষমতা সেই বিষয়ে প্রসারিত হবে, যে বিষয়ে রাজ্যের আইনসভার (বিধানসভা) আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আছে।'
আরও পড়ুন- মণিপুর জাতি হিংসা, অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কেন বাড়ছে?
বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ, শিশু এবং নাবালককে দত্তক গ্রহণ, ইচ্ছাপত্র, উত্তরাধিকার, যৌথ পরিবার এবং বিভাজন- এগুলো সংবিধান লাগু হওয়ার আগে ব্যক্তিগত আইনের অধীন ছিল। যা কেন্দ্রীয় আইনের অনুপস্থিতিতে রাজ্যগুলোকে এই বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দিয়েছে।