গত কয়েক মাস ধরেই সরকার আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন, প্রিভেনশন অফ মানি-লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ)-এ বদল আনছে। যার সর্বশেষ সংযোজন হল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কোম্পানি সেক্রেটারি এবং কস্ট অ্যান্ড ওয়ার্কস অ্যাকাউন্ট্যান্টদেরও আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় ফেলা হয়েছে। আর অ্যামাজন পে (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড, আদিত্য বিড়লা হাউজিং ফিনান্স লিমিটেড এবং আইআইএফএল ফিনান্স লিমিটেড-সহ ২২টি আর্থিক সংস্থাকে তাদের গ্রাহকদের পরিচয় আধারের মাধ্যমে যাচাইয়ের অনুমতি দিয়েছে।
PMLA-এর অধীনে কী কী বদল?
মার্চে অর্থ মন্ত্রক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকিং কোম্পানি এবং মধ্যস্থতাকারীর মতো সংস্থাগুলোর স্বচ্ছতা বাড়াতে আর্থিক তছরুপ আইন সংশোধন করেছে। এই সংশোধিত আইনের অধীনে রাজ্য সরকারের প্রধান, প্রবীণ রাজনীতিবিদ, প্রবীণ সরকারি এবং বিচার বিভাগের আধিকারিক, সামরিক কর্তা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক, রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-সহ বিভিন্নজনকে এই আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় ফেলা হয়েছে। বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কেবল এই সংশোধিত আইন প্রযোজ্য হবে।
এভাবেই ৩ মে, অর্থ মন্ত্রক গ্রাহকদের পক্ষে আর্থিক লেনদেন সম্পাদনকারী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কোম্পানি সেক্রেটারি এবং কস্ট অ্যান্ড ওয়ার্কস অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আর্থিক তছরুপ আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। মন্ত্রক এই আর্থিক পেশাদারদের দ্বারা তাদের গ্রাহকদের হয়ে সম্পাদিত আর্থিক লেনদেনগুলোও নির্দিষ্ট করেছে। জানিয়েছে, এই সব ক্ষেত্রেই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কোম্পানি সেক্রেটারি এবং কস্ট অ্যান্ড ওয়ার্কস অ্যাকাউন্ট্যান্টদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন কার্যকরী হবে।
সেই ক্ষেত্রগুলো হল- যে কোনও স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, গ্রাহকের অর্থ, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা, ব্যাংক, সেভিংস বা সিকিউরিটিজ অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থাপনা, কোম্পানির সৃষ্টি, পরিচালনা বা পরিচালনার জন্য অবদান রাখা সংগঠনের হয়ে কাজ, সীমিত দায়বদ্ধতার অংশীদার বা ট্রাস্টের হয়ে দায়িত্ব নেওয়া এবং ব্যবসায়িক সত্তার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও তহবিল তছরুপ আইনেই তদন্ত হবে।
আরও পড়ুন- যার নামে একসময় থরথর করে কাঁপত পঞ্জাব, কে পরমজিৎ সিং পাঞ্জওয়ার?
গত ৪ মে, অর্থ মন্ত্রক আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে আধারের মাধ্যমে ২২টি আর্থিক সংস্থাকে তাদের গ্রাহকদের পরিচয় যাচাই করার অনুমতি দেওয়ার জন্য নন-ব্যাংকিং সংস্থার তালিকা তৈরি করেছিল। গত মাসে, ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রক (MeitY) বিভিন্ন পরিষেবার ক্ষেত্রে আধার যাচাইয়ের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। মন্ত্রক এবং সরকারি বিভাগগুলোর বাইরে ডিজিটাল পরিচয় ব্যবহারের মাধ্যমে এই যাচাই প্রক্রিয়া প্রথমবার ঘটবে বলেই সরকারের দাবি। অবশ্য মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তথ্যের গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।