বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে রায় দিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা, ভারতের প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নির্বাচন করবে।
এটি একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ রায়। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট ভারতের শীর্ষ নির্বাচনী আধিকারিকদের নিয়োগের পদ্ধতি বদলাতে চায়। যা, সম্ভবত সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এখনও পর্যন্ত, এই আধিকারিকদের নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারেরই মূলত প্রধান ভূমিকা রয়েছে।
পাঁচ সদস্যের এই বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি কেএম জোসেফ। বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বোস, হৃষীকেশ রায় ও সিটি রবিকুমার। এই বেঞ্চের কাছে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল। সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে তেমনই স্বচ্ছ পদ্ধতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে একাধিক জনস্বার্থ মামলায়।
এই সব আবেদনে নির্বাচন কমিশনার এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে একটি আইন প্রণয়নের আবেদন জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারে প্রথম জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের হয়েছিল ২০১৫ সালে। এরপর ২০১৮ সালে এই ব্যাপারে আরও একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। যা শুনতে সম্মত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এই জনস্বার্থ মামলাগুলোকে সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠায়। গত বছরের নভেম্বরে আদালতে এই মামলার শুনানি হয়েছিল।
আরও পড়ুন- হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার নির্দেশ, সদস্য কারা?
শুনানির শেষ দিনে আদালত উল্লেখ করেছে যে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অরুণ গোয়েলের নিয়োগ বিদ্যুতের গতিতে হয়েছিল। কারণ, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ১৮ নভেম্বর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ঘটেছিল। তবে, এবারের রায়ের বিশেষত্ব হল যে- বিচারপতি জোসেফ বেঞ্চের বাকি সদস্যদের সঙ্গে একমত হয়েও একটি পৃথক মতামত দিয়েছেন।
সংবিধানের ১৫তম অংশে নির্বাচন সম্পর্কে মাত্র পাঁচটি অনুচ্ছেদ (৩২৪-৩২৯) বলা আছে। এর মধ্যে সংবিধানের ৩২৪তম অনুচ্ছেদে 'নির্বাচনের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ এবং নিয়ন্ত্রণ' সম্পর্কে বলা আছে। তাতে বলা হয়েছে একটি নির্বাচন কমিশনে 'প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের, রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সময়ে নির্বাচিত করতে পারেন।' এর পরবর্তী অধ্যায়টাই গড়ে দেবে সুপ্রিম রায়।