পঞ্জাবে আপ ক্ষমতায় এসেছে কিছু দিন হল। এর মধ্যেই কেন্দ্র ও পঞ্জাবের এই শাসক দল একে-অপরের বিরুদ্ধে রণং দেহি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান তো রাস্তা থেকে সংসদ পর্যন্ত আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে দিয়েছেন। এই নয়া লড়াইয়ের কারণটা কি জানেন? কারণটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি ঘোষণা। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রের বেতনকাঠামো-ভুক্ত হবেন। এই ঘোষণার পর মান টুইট করে বলেন, ' কেন্দ্রীয় সরকার অন্যান্য রাজ্য থেকে দফায় দফায় সরকারি কর্মীদের চণ্ডীগড়ে আনতে চাইছে।' কংগ্রেস, অকালি দল একই সুরে কথা বলছে। পঞ্জাবের অধিকারের উপর বড় ধাক্কা, তাদের কথা। অকালি দলের মাথা এবং পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল বলেছেন, চণ্ডীগড়ের ওপর পঞ্জাবের অধিকার কেড়ে নেওয়াটাই কেন্দ্রের লক্ষ্য।
এতক্ষণের কথাবার্তায় যদি কিছু ধোঁয়াশার জন্ম হয়ে থাকে, এবার তা কাটানো যেতে পারে ধীরে ধীরে।
শাহের ঘোষণা
শাহ বলেছেন, রাজ্য থেকে কেন্দ্রের কাঠামোয় যদি কর্মীদের বেতন দেওয়া হতে থাকে, তা হলে তাঁরা বিরাট লাভবান হবেন। অবসরের বয়স ৫৮ থেকে বেড়ে হবে ৬০ হবে। মহিলা কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন দু'বছরের, এখন যা এক বছর। চণ্ডীগড়ের সরকারি কর্মীদের এই দাবি বহু দিনের, মোটামুটি ২০ থেকে ২৫ বছরের দাবি।
রাজনীতি
ডিসেম্বরে পুরসভা ভোট হয়েছে চণ্ডীগড়ে। চণ্ডীগড় বিজেপির ক্ষমতা ভাল। ভোটে কিন্তু দেখা গেল ১৪টা আসনের মধ্যে আপের পাল্লা ভারি। কিন্তু মেয়র নির্বাচনের ভোটাভুটিতে একটি ভোট অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় মেয়র অবশ্য এখন বিজেপির। এখন বিজেপি তাদের জমি ফেরত পেতে চাইছে, তাই ২০২৪-এর ভোটের দিকে তাকিয়ে এমন ঘোষণা, বলছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।
আইন কী বলছে?
১৯৬৬ সালে, যখন পঞ্জাব এবং হরিয়ানা ভাগ হয়, তখন দুই রাজ্যই চণ্ডীগড়কে রাজধানী হিসেবে চায়। ফলে কেন্দ্র চণ্ডীগড়কে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে বিবাদ মেটানোর পথে হাঁটে। ১৯৬৬ সালের পঞ্জাব পুনর্গঠন আইন অনুযায়ী কেন্দ্র চণ্ডীগড় চালায়, কিন্তু আইনটা হল অবিভক্ত পঞ্জাবের।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, চণ্ডীগড়ের সরকারি কর্মী-অফিসাররা, শিক্ষক এবং চিকিৎসক সহ, পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে নিতে হবে। পঞ্জাব থেকে ৬০ শতাংশ, হরিয়ানা থেকে ৪০ শতাংশ। রাজ্য দুটির আকার অনুযায়ী এই ভাগাভাগি। এখন অকালি আপ কংগ্রেসের আশঙ্কা, কেন্দ্র যদি নিজেদের কাঠামোয় নিয়ে আসে কর্মীদের তাহলে এই দুটি রাজ্যের মানুষের অধিকার চণ্ডীগড়ে খর্ব হবে। যদিও বিজেপি শাসিত হরিয়ানা এ নিয়ে কোনও কথা বলেনি।
বিজেপির সাফ কথা, যাঁরা কেন্দ্রীয় কর্মী, তাঁদের মাইনে পাওয়ার অধিকার তো কেন্দ্রীয় নিয়মেই হওয়া উচিত। এর মধ্যে পঞ্জাব আসছে কী করে!