New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/12/chidambaram-bail-explained.jpg)
চিদাম্বরমের জামিন নাকচ করার জন্য বন্ধ খামে ভরসা করার বিষয়টিকে ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট
আদালত দুটি ক্ষেত্রে বন্ধ খাম সম্পর্কিত তথ্য চাইতে পারে- যেসব ক্ষেত্রে তদন্ত চলছে এবং কোনও ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য বা গোপনীয় কোনও তথ্য।
চিদাম্বরমের জামিন নাকচ করার জন্য বন্ধ খামে ভরসা করার বিষয়টিকে ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট
বুধবার চিদাম্বরমের জামিন দেবার সময়ে, বিচারপতি আর ভানুমতী, এএস বোপান্না এবং হৃষিকেশ রায়কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ দিল্লি হাইকোর্টকে ভর্ৎসনা করেছে। আদালতের কাছে জমা দেওয়া বন্ধ খামের উপর নির্ভর করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জামিন দিতে অস্বীকার করায় সুপ্রিম কোর্টের এই তিরস্কার।
বেঞ্চ বলেছে, "যখনই বন্ধ খামে কোনও নথি দেওয়া হবে, তার ভিত্তিতে জামিন দিতে অস্বীকার করার অর্থ সুবিচারের ধারণাকে অস্বীকার করা।"
আরও পড়ুন, টাইমলাইন: আইএনএক্স মিডিয়া মামলা ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম
বেঞ্চের এই পর্যবেক্ষণ সরকারি সংস্থাগুলির বন্ধ খামে তথ্য দেওয়ার বিতর্কিত পদ্ধতির বিষয়গুলিকে ফের সামনে নিয়ে এসেছে। এসব ক্ষেত্রে বন্ধ খামের বিষয়বস্তু কেবলমাত্র বিচারপতিরাই দেখতে পারেন।
আদালত দুটি ক্ষেত্রে বন্ধ খাম সম্পর্কিত তথ্য চাইতে পারে- যেসব ক্ষেত্রে তদন্ত চলছে এবং কোনও ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য বা গোপনীয় কোনও তথ্য। তদন্ত চলছে এমন বিষয়ের তথ্য প্রকাশিত হলে তা তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং ব্যক্তিগত বা গোপনীয় কোনও তথ্য প্রকাশিত হলে উক্ত ব্যক্তির গোপনীয়তা হানি হতে পারে বা বিশ্বাসভঙ্গ ঘটতে পারে।
এর ফলে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর কাছে পুরো বিষয়টি অজানা থাকে এবং খোলা আদালতে স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থার ধরাণার সঙ্গে এটি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আদালতের সিদ্ধান্ত কারণনির্ভর হতে হয়। আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, সে কারণগুলি যদি প্রকাশ্যে না আনা হয় তাহলে বিচারবিভাগের সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। একই সঙ্গে বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্তসমূহ বিশ্লেষণেরও অবকাশ থাকে না, এবং তার যুক্তিগুলি উপলব্ধি করার অবকাশও থাকে না।
বন্ধ খামে তথ্য দেবার বিষয়টি কেবলমাত্র উচ্চতর বিচারবিভাগেই আটকে থাকছে না। সুপ্রিম কোর্ট ২জি মামলায় বন্ধ খামের উপর ভরসা করে টেলিকম লাইসেন্স বাতিল করেছিল। চিদাম্বরমের ক্ষেত্রে বন্ধ খামে দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে বিচার করার প্রসঙ্গে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ১৯৭৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাওয়ের ছেলে পিভি প্রভাকর রাওয়ের আগাম জামিনের মামলার উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন, নীরব মোদী “ফেরার আর্থিক অপরাধী”: এর মানে কী
গত কয়েক বছরে, সুপ্রিম কোর্ট বেশ কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ মামলায় বন্ধ খামে দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করেছে। আসাম এনআরসি সংক্রান্ত মামলায় আদালত রাজ্য কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলাকে বন্ধ খামে পর্যায়ক্রমিক রিপোর্ট দিতে বলেছিল, যে তথ্য এমনকি সরকারকেও জানান হয়নি। বিসিসিআই সংস্কার মামলা, রাফাল মামলা এবং ভীমা কোরেগাঁও ঘটনায় এফআইআর রদ করার মামলাতেও বন্ধ খামের ভূমিকা রয়েছে।
আদালতে বন্ধ খামে তথ্য সংগ্রহ এবং তাকে কাজে লাগানো যেতে পারে একথা বললেও আদালতের বক্তব্য, "এই তথ্যগুলির মাধ্যমে ঠিকপথে তদন্ত এগোচ্ছে বিবেকের কাছে এ বিষয়ে পরিষ্কার থাকা এবং জামিন বা আগাম জামিন দেবার বিষয়টি মাথায় রাখার জন্য ব্যবহার করা উচিত।" এ ধরনের তথ্যের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্তগ্রহণ করা যেতে পারে না বলে আদালত জানিয়েছে।
জামিন নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে আদালত জানিয়েছে, বন্ধ খাম খোলা এবং সে নথি ব্যবহার করার ব্যাপারে সচেতন ভাবে নিরস্ত থাকা হয়েছে।
পড়তে ভুলবেন না, পুলিশি এনকাউন্টার নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশগুলি কী কী