ভারত-চিন সীমান্তের যুদ্ধাবহের মাঝেই বেজিংয়ের নজরে রয়েছে ভারতের গণমান্য রাজনৈতিক নেতা-সহ ১০ হাজার ভারতীয়, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতায় উঠে এল এমনই তথ্য। চিনা ওয়েবসাইট ঝেনহুয়া ডেটা ইনফরমেশন টেকনোলজি, যারা বিদেশি ব্যক্তিদের নিশানা করে থাকে তাঁদের প্রশ্ন করতেই গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার কাজ শুরু হয় এই মাসের গোড়ার দিকে। বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তাঁদের কাছে রাখা হয়েছিল। যেমন লক্ষ্যবস্তু 'ব্যক্তিদের' কী ধরণের তথ্য সংগ্রহ করেছে, এই তথ্যগুলি দিয়ে কি 'হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার' করতে চায় তারা?
এই ঝেনহুয়া ডেটা আসলে কী?
এটি মূলত রাজনীতি, সরকার, ব্যবসা, প্রযুক্তি, মিডিয়া এবং নাগরিক সমাজে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে রাখে। চিনা গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক ও প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করার দাবি করে ঝেনহুয়া। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি "ডেটা লাইব্রেরি" তৈরি করা। যার মধ্যে সংবাদসূত্র নয়, কাগজপত্র, পেটেন্টস, বিডিং ডকুমেন্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এমনকী কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রের তথ্যও আছে। এটি একটি "রিলেশনাল ডেটাবেস" তৈরি করে যা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং তথ্যগুলির মধ্যে সংযোগ রেকর্ড করে এবং তা বর্ণনাও করে। এই ডেটা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করে ঝেনহুয়া "হুমকি পরিবেশন" করতে সাহায্য করে।
কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় তো এই তথ্য সার্বজনীন, তাহলে উদ্বেগের কারণ কী?
আসলে সোশাল মিডিয়া থেকে কিন্তু শুধুই তথ্য নেওয়া হচ্ছে না। আরও অনেক গোপনীয় তথ্য নেওয়া হচ্ছে যা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। ২৪ ঘন্টা সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ্যবস্তুদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে এই সংস্থা। তা সে পোস্ট হোক, ফ্রেন্ডলিস্ট, ফলোয়ার্স, কমেন্টস, লোকেশন এই সব তথ্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, এক্সক্লুসিভ: চিনা নজরদারিতে মোদী-মমতা-সোনিয়া সহ বহু গণ্যমান্য
এই সকল তথ্য দেশিয় প্রতিরক্ষা সংস্থা আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারে সেই নিয়ম রয়েছে কিন্তু বিদেশি সংস্থার হাতে এই তথ্য যাওয়ার অর্থ হল মারাত্মক। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এই তথ্য কাজে লাগাতে পারে তাঁরা। আর সেখানেই উঠছে "হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার"-এর মতো বিষয়।
এই "হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার" বিষয়টি আসলে কী?
১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির একটি প্রকাশনা হাইব্রিড ওয়ারফেয়ারের মাধ্যমে সেনাবাহিনী থেকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিকে সহিংসতার ঘটনা ঘটায়। সেই প্রতিবেদনের লেখক কর্নেল কিয়াও লিয়াং এবং কর্নেল ওয়াং জিয়াংসুই লিখেছেন যে এই যুদ্ধের নতুন অস্ত্রগুলি ছিল "সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত কিছু ঘটনা"। যেখানে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি জানতে পারলেন কিছু স্বাভাবিক জিনিস বদলে গেল আপত্তিকর এবং মারাত্মক পরিস্থিতিতে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন