গত সপ্তাহে হংকংয়ে নতুন নিরাপত্তা আইন জারি করেছে চিন। এর পর ফেসবুক, গুগল এবং টুইটার সহ বেশ বড় সংখ্যক প্রযুক্তি সংস্থা জানিয়েছে তারা হংকং পুলিশের কাছতেকে পাওয়া ব্যবহারকারীর ডেটা সম্পর্কিত অনুরোধ প্রসেস করা বন্ধ রেথেছে।
আরও এক পা এগিয়ে টিকটক সোমবার জানিয়েছে তারা হংকং থেকে এই অ্যাপ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করবে এবং কিছুদিনের মধ্যেই মার্কেট ছেড়ে চলে যাবে। উল্লেখ্য, ভারতে যে ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়েছে টিকটক তার অন্যতম।
টিকটকের প্রস্থান
অতি জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও অ্যাপ টিকটিকের দেড় লক্ষ অ্যাকটিভ ইউজার রয়েছে, যেখানে এই শহরের বাসিন্দার সংখ্যা ৭০ লক্ষ। তারা রয়টার্সকে জানিয়েছে এ কথা স্পষ্ট নয় যে নতুন আইনের জেরে হংকং এখন পুরোপুরি বেজিংয়ের আওতাধীন কি না।
আরও পড়ুন, কেরালার সোনা পাচার, কূটনৈতিক কার্গো ও এক পলাতক মহিলা
সারা পৃথিবীতে এই অ্যাপ ও এর চিনা ভার্সন ডৌয়িনের ডাউনলোড সংখ্যা কয়েক বিলিয়ন। ফেসবুক সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপের পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডাউনলোড করা অ্যাপ।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্টার্টআপ বাইটড্যান্সের অ্যাপ টিকটক চিন সরকারের সঙ্গে এর সংযোগের ব্যাপারে গোপনীয়তা প্রসঙ্গে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে। এদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিতে তারা জানিয়েছে তাদের ডেটা সেন্টার চিনের বাইরে অবস্থিত এবং তাদের ডেটা চিনা আইনের আওতায় পড়ে না।
বাইটড্যান্স জানিয়েছে টিকটকের চিনা ভার্সন হংকংয়ের বাসিন্দারা ব্যবহার করতে পারবেন।
অন্যরাও এই পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারে কেন
নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুসারে ইন্টারনেট সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গকে জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক অনলাইন কনটেন্ট রিমুভ করতে হবে বা তার অ্যাকসেস বন্ধ করতে হবে। আদালতের ওয়ারেন্ট থাকলে পুলিশ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করতে পারে এবং তা না হলে ১০০০০০ হংকং ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৭ লক্ষ টাকা) জরিমানা ও এক বছরের জেল হতে পারে।
ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের ১ লক্ষ মার্কিন ডলার জরিমানা ও ৬ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে। নতুন আইন অনুসারে ইউজার ডেটা সরবরাহ না করলে জেলে পাঠানোর অধিকার কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
অন্য দেশ থেকে যদি কেউ কিছু ইন্টারনেটে লেখেন, তাঁর সম্পর্কে তথ্য না জানালে হংকংয়ের কোনও ইন্টারনেট অফিস থেকে যে কোনও কর্মীকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। যদি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত সেই আইডেন্টিফিকেশন রেকর্ড বা ডিক্রিপশন কী হংকংয়ে না হয়, তাহলেও এই আইন প্রযোজ্য হবে বলে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
ফেসবুক এবং গুগলের মত সংস্থা আপাতত অপেক্ষা ও লক্ষ্য করার নীতি গ্রহণ করেছে। তারা যদি হংকংয়ে অপারেট করে, তাহলে তাদের হংকংয়ের কর্মীরা, বা যাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে কাজে এসেছেন তাঁরা জেলে যেতে পারেন।
হংকংয়ের পক্ষে এর অর্থ কী
এর ফলে হংকংবাসীদের অবস্থাও চিনের মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দাদে মত হয়ে পড়তে পারে যাঁদের কেবলমাত্র তথাকথিত গ্রেট ফায়ারওয়ালের পিছনে থাকা অ্যাপ ব্যবহারেরই অনুমতি রয়েছে।
হংকং সরকার নতুন আইনের সমর্থনে বলেছে অন্য মুক্ত সমাজে যেরকম জাতীয় নিরাপত্তা আইন রয়েছে, এটি সেরকমই একটি আইন।