Advertisment

উপসর্গবিহীন কোভিড ১৯ রোগীদের চিকিৎসায় চিনের প্রোটোকল কী?

রোগ মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন সংক্রামক ভাইরাসের উপসর্গবিহীন বাহকরা, কারণ এঁদের কোনও উপসর্গ না থাকলেও তাঁরা সংক্রমিত হতে পারেন এবং অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

উপসর্গবিহীনদের জন্য নতুন প্রোটোকল ঘোষণা করেছে চিন

১২ এপ্রিল চিনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন কোভিড ১৯-এর উপলর্গবিহীন বাহকদের তদারকির জন্য নতুন বিধি চালু করেছে। করোনাভাইরাস প্রকোপের প্রাথমিক প্রাণকেন্দ্র উহান থেকে লকডাউন প্রত্যাহারের কয়েকদিন বাদেই এই সিদ্ধান্ত।

Advertisment

ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশে কয়েক মিলিয়ন মানুষ ঘরবন্দি। চিনের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে বাকি দুনিয়া কীভাবে এই রোগের মোকাবিলা করে।

রোগ মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন সংক্রামক ভাইরাসের উপসর্গবিহীন বাহকরা, কারণ এঁদের কোনও উপসর্গ না থাকলেও তাঁরা সংক্রমিত হতে পারেন এবং অন্যদের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারেন।

২০১৮ সালে রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্সে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, “এই উপসর্গবিহীন বাহকরা রোগ ছড়ানোর ব্যাপারে ভূমিকা রাখলেও তাঁদের বড় অংশই অচিহ্নিত রয়ে যান, ফলে সংক্রমণ রোধের প্রচেষ্টা বিফলে যায়।”

প্রোটোকল

প্রোটোকলে দু ধরনের উপসর্গবিহীনদের চিহ্নিত করা হবে - যাঁদের নিজবোধে কোনও লক্ষণ নেই বা ১৪ দিনের কোয়ারান্টিন পর্বে ক্লিনিক্যালি চিহ্নিত করার মত কোনও লক্ষণ নেই- এবং যাঁরা ইনকিউবেশন পর্বে (সংক্রমিত হবার সময় থেকে উপসর্গ দেখা দেবার সময়) উপসর্গবিহীন।

উপসর্গবিহীনদের উপর নজরদারি এবং চিহ্নিতকরণ জোরদার করতে প্রোটোকলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কোভিড ১৯ সংক্রমিত ব্যক্তির নিকট ব্যক্তিদের মেডিক্যাল পর্যবেক্ষণে রাখবার সময়ে সক্রিয় উপায়ে টেস্ট করাতে হবে, সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত করবার সময়ে যাঁদের এক্সপোজার হয়েছে এমন ব্যক্তিদের সক্রিয়ভাবে টেস্ট করাতে হবে, কোভিড সংক্রমণ ক্রমাগত ঘটেছে এমন স্থানে ভ্রমণের বা বাসের ইতিহাস রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের সক্রিয় টেস্টিং করাতে হবে, এবংএপিডেমিওলজিক্যাল ইনভেস্টিগেশন চলাকালীন এবং স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে এধরনের কেস চিহ্নিত করতে হবে।

উপসর্গবিহীন সংক্রমণ কেমনভাবে রিপোর্ট করা হবে?

উপসর্গবিহীনদের সাধারণীকৃত নিয়মে সমস্ত ঘটনাই রিপোর্ট করতে হবে, যার অর্থ উপসর্গবিহীনের ঘটনা চিহ্নিত হবার দু ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি অনলাইন রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে যে স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে তা জানাতে হবে। এই রিপোর্ট পাবার পারে জাতীয় পর্যায় সিডিসিকে ২৪ ঘণাটর মধ্যে তাদের অনুসন্ধান সম্পন্ন করতে হবে এবং ওই ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। সমস্ত ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।

প্রোটোকলে চিহ্নিত ও উপসর্গবিহীন রোগীদের ঘনিষ্ঠ সংস্রবে আসা ব্যক্তিদের স্ক্রিনংয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াবার কথাও বলা হয়েছে।

উপসর্গবিহীন ঘটনাও কি কোভিড ১৯ বলে গণ্য হবে?

সমস্ত উপসর্গবিহীন ঘটনা কোভিড ১৯ সংক্রমণ বলে চিহ্নিত করতে হবে না। ১৪ দিনের ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে থাকার সময়কালে তাঁদের যদি উপসর্গ না দেখা যায় তাহলে তাঁরা কোভিড ১৯ রোগী বলে চিহ্নিত হবেন না বলে জানিয়েছে চিন। অর্থাৎ, উপসর্গবিহীনদের মধ্যে যাঁদের পর্যবেক্ষণে থাকাকালীন ক্লিনিকাল উপসর্গ দেখা যাবে তাঁদেরই নিশ্চিত সংক্রমিত বলে চিহ্নিত করা হবে।

১৪ দিন কোয়ারান্টিনে থাকাকালীন যদি কোনও ব্যক্তির দুবার পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে, তাহলে তাঁদের উপর থেকে ডাক্তারি পর্যবেক্ষণ তুলে নেওয়া হবে এবং যাঁদের টেস্ট পজিটিভ আসবে, তাঁদের কেন্দ্রীয় ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা করা হবে।

উপসর্গবিহীনের উপসর্গ দেখা দিলে কী হবে?

কেন্দ্রীয় ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে থাকাকলীন যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে এ ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে তাঁকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে এবং ডায়াগনোসিস নিশ্চিত হলে তাঁকে ফের কোভিড পর্যায়ভুক্ত করা হবে।

এছাড়া, উপসর্গবিহীনের উপর থেকে ১৪ দিনের কেন্দ্রীয় ডাক্তারি পর্যবেক্ষণ তুলে নেবার পর তাঁদের আরও দু সপ্তাহ ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে এবং তাঁদের পর্যেবক্ষণ প্রত্যাহৃত হবার পর নির্দিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্রে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে ফলো আপ করাতে যেতে হবে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

china coronavirus
Advertisment