স্বাস্থ্যগত কারণে চিনের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাংকে প্রায় একমাস ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। ২১শে জুলাই ব্লুমবার্গ কয়েকজনকে উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদনে বলেছে যে ব্রিটেনের বিদেশসচিব জেমস ক্লিভারলি জুলাইয়ের শেষের দিকে তাঁর পরিকল্পিত বেজিং সফর স্থগিত করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'কিনের পরিস্থিতি এই সফর বাতিলের প্রধান কারণ।' ব্লুমবার্গ যাঁদের উদ্ধৃত করেছে, তাঁদের মধ্যে দু'জন বলেছে, এই কারণের জন্যই ব্রিটেনের বিদেশসচিব তাঁর ভ্রমণ স্থগিত করেছে। আর, তৃতীয়জন বলেছেন যে এটা বিদেশসচিবের সফর বাতিলের অন্যতম কারণ। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশ বৈঠকের বিকল্প তারিখ পর্যালোচনা করছে। কিনের হাই প্রোফাইল এবং সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন এবং মিটিংগুলোতে অনুপস্থিতি রীতিমতো জল্পনা তৈরি করেছে। বিভিন্ন মহলের ধারণা, তাঁকে চিন সরকার জোর করে অপসারণ করেছে।
জনসমক্ষে আড়াল থাকা
এই ধরনের জল্পনা কিন্তু, এমনি তৈরি হয়নি। এই জল্পনার অন্যতম কারণ হল, চিন সরকারের কাজকর্মে স্বচ্ছতার অভাব। চিন যে কাজ করে, তা পরিষ্কার করে কিছু জানায় না। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) বিভিন্ন ব্যক্তির কাজকে ব্যক্তিগত কাজ হিসেবে গুরুত্বই দেয় না। গোটাটাই চিনের কাজ হিসেবে দেখায়। শুধু তাই নয়, চিনে বেশ কিছুদিনের জন্য দেশের সুপরিচিত ব্যক্তিত্বদের জনসাধারণের চোখ থেকে অদৃশ্য হওয়ার ইতিহাসও রয়েছে। শিল্পপতি জ্যাক মা, টেনিস খেলোয়াড় পেং শুয়াই এবং অভিনেত্রী ফ্যান বিংবিং এমনই কিছু বিখ্যাত উদাহরণ। তাঁরা তিনজনই বেশ কিছুদিন জনগণের চোখ থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। পরে আবার জনসমক্ষে হাজির হয়েছিলেন। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও ২০১২ সালে এবং কোভিড-১৯ অতিমারি চলাকালীন একইরকম জল্পনার জন্ম দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুুন- ‘স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার’- কীভাবে তিলকের এই উক্তিতে প্রভাবিত হয়েছিল দেশ
কিন গ্যাং কে?
১৯৬৬ সালে কিন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে কূটনৈতিক মিশনের জন্য বেইজিং সার্ভিস ব্যুরোর একজন স্টাফ পদে নিযুক্ত হন। সেই পদ থেকে ধীরে উন্নতি করে বর্তমানে বিদেশমন্ত্রী হয়েছেন। বিদেশ মন্ত্রকে কাজ করার সময়, তিনি ব্রিটেনে চিনা দূতাবাসে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুই মেয়াদে বেশ কয়েক বছর চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছিলেন। বিভিন্ন মহল আবার তাঁর উচ্চপদ প্রাপ্তির পিছনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে তাঁর নৈকট্যকেও কৃতিত্ব দিয়েছেন। ২০২১ সালে, তিনি অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী পদে উন্নীত হন।