নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অন্তত ১০টি রাজ্যে ব্যাপক সংখ্যায় বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় জমায়েত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ১৯৭৩ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
১৪৪ ধারা কী?
এই ধারায় সরকারকে উপদ্রবের আশঙ্কায় নির্দেশ জারি করবার ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে।
প্রশাসন প্রায়শই ১৪৪ ধারা জারি করে পাঁচ বা তার বেশি সংখ্যক ব্যক্তির জমায়েতের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, অথবা মোবাইল ফোন সংস্থাগুলিকে একটি বা একাধিক ছোট বা বড় জায়গা জুড়ে ভয়েসকল, এসএমএস বা ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেবার নির্দেশ দেয়।
১৪৪ ধারা জারি হলে কোনও অসামরিক ব্যক্তি লাঠি, ধারালো অস্ত্র বা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জনবহুল স্খানে যেতে পারেন না। একমাত্র নিরাপত্তা বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী বা পুলিশ এই অস্ত্র বহনের অধিকারী থাকে।
এই ধারায় কী কী অধিকার থাকে?
১৪৪ ধারার আওতায় জেলা শাসক, মহকুমা শাসত বা কোনও একজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দিষ্ট অধিকার দেওয়া থাকে। ওই ধারাবলে তিনি কোনও ব্যক্তিকে কোনও কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিতে পারেন বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনও সম্পত্তি সম্পর্কেও কোনও নির্দেশ দিতে পারেন। ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন এ ধরনের নির্দেশের মাধ্যমে আইনবলে বলীয়ান ব্যক্তির অসুবিধা, আঘাত বা ক্ষতিকর কোনও কিছু রোধ করা সম্ভব বা মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব বা শান্ত জনজীবনে ব্যাঘাত রোধ করা সম্ভব বা দাঙ্গাহাঙ্গামা আটকানো যেতে পারে, তবে তিনি এই নির্দেশ জারি করতে পারেন।
আরও পড়ুন: চাপে চুপ? এনআরসি প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ বিজেপি-মোদী সরকারের
ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন, এই ধারা জারি করে দ্রুত কাঙ্ক্ষিত সমাধান মিলবে এবং তা জারি করবার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে, তবে তিনি এ ধারা জারি করতে পারতে পারেন।
এই ধারায় বলা রয়েছে, "আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বা যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই নোটিস জারি করা হচ্ছে তাঁকে না-পাওয়া গেলে, একপাক্ষিক ভাবে নোটিস জারি করা যেতে পারে।"
কোনও একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি এই ধারা জারি করা যায়?
১৪৪ ধারার আওতায় কোনও নির্দেশ কোনও একজন ব্যক্তি, বা কোনও নির্দিষ্ট এলাকার কোনও বাসিন্দা অথবা ওই নির্দিষ্ট এলাকায় জারি করা যেতে পারে, আবার কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় যাতায়াতকারী সকলের বিরুদ্ধেও জারি করা যেতে পারে।
১৪৪ ধারা ভাঙলে কি শাস্তি হতে পারে?
কোনও ব্যক্তি বেআইনি জমায়েতে যুক্ত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে হাঙ্গামায় যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা যেতে পারে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে তিন বছর কারাদণ্ড। জমায়েত ভাঙতে উদ্যত পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করলেও তা শাস্তিযোগ্য।