ভারতে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসন এবার কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের পদ্ধতি অবলম্বন করতে শুরু করেছে। এর মাধ্যমে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া সম্ভব।
কনট্যাক্ট ট্রেসিং কী?
এটা নতুন কিছু নয়। ইবোলা সংক্রমণের সময়ে আফ্রিকায় এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল। এর ফলে কোনও প্রকোপের সময়ে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা নির্ধারণ করা যায়।
২০১৪ সালে, যখন সিয়েরা লিওনের কাম্ব্রিয়া জেলায় প্রথম ইবোলা দেখা দিয়েছিল, তখন এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় যার মাধ্যমে প্রতিদিন ইবোলা সংক্রমিতদের সংস্রবে আসা মানুদের উপর নজর রাখা হত। সিডিসি-র দেওয়া হিলেবে এর ফলে ওই জেলায় ১৩ জনের ইবোলা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, এই পদ্ধতি না নেওয়া হলে যা নজরে আসত না। হু বলছে, কনট্যাক্ট ট্রেসিং তিন ধাপে করা সম্ভব।
ক) সংস্রব চিহ্নিত করণ- সংক্রমিত ব্য্কতির গতিবিধি সম্পর্কে জেনে নিয়ে অসুস্থতার সময় থেকে কাদের সংস্রবে এসেছিলেন তাদের চিহ্নিত করা। চণ্ডীগড়ে প্রথম কোভিড ১৯ সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের খোঁজের মাধ্যমে ১১৯ জনের হদিশ মিলেছিল।
খ) সংস্রবের তালিকা। এর অর্থ সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্রবে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের তালিকাভুক্ত করা। ভারতের কিছু জায়গায় প্রশাসন যাঁরা কোয়ারান্টিনে রয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশ করছে এবং তাঁদের বাড়ি চিহ্নিত করে বাড়ির সামনে কোয়ারান্টিন পোস্টার লাগিয়ে দিচ্ছে।
গ) খোঁজ রাখা- সংস্রবে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নিয়মিত খোঁজ রাখা, যে তাঁদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা এবং সংক্রমণের পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে করোনা প্রকোপ কীভাবে আটকানো সম্ভব?
ল্যান্সেট জার্নালে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে কোভিড ১৯ প্রকোপের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করতে সংস্রবে আসা ৮০ শতাংশকে চিহ্নিত করে আইসোলেশেনে রাখতে হবে। এখন পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ যখন লক ডাউনের মধ্যে, তখন সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্রবে কারা এসেছেন, তা চিহ্নিত করা সহজ নয়। মনে রাখতে হবে লক্ষেরও বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত।
ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, প্রকোপের তিন মাসের মধ্যে আইসোলেশনের মাধ্যমে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
কোনও রোগের প্রকোপের সময়ে কনট্যাক্ট ট্রেসিং খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু কেবলমাত্র সে পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। গবেষণায় বলা হয়েছে যথেচ্ছ ও কার্যকরী কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে প্রথম দিকে সংখ্যা হ্রাস ঘটানো সম্ভব।